• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯
তাকওয়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

তাকওয়া সম্পর্কে আল্লাহপাক কোরআনে অনেক আয়াত নাজিল করেছেন

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

তাকওয়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ০১ অক্টোবর ২০১৮

তাকওয়া বা আল্লাহর ভীতি অর্জনের প্রধান উপায় হলো আত্মশুদ্ধি। আত্মশুদ্ধি হলো অন্তর সংশোধন, খাঁটি করা, পাপমুক্ত করা, কলুষমুক্ত করা। আল্লাহপাকের স্মরণ, আনুগত্য ও ইবাদত ব্যতীত অন্যসব অন্যায় কাজ থেকে অন্তর পবিত্র রাখাকে আত্মশুদ্ধি বলা যায়। মানুষের আত্মিক প্রশান্তি, উন্নতি ও বিকাশ সাধনের জন্যও আত্মশুদ্ধির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। একজন মু’মিন বান্দা ঈমান আনার পর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হলো তাকওয়া বা খোদা ভীরুতার। কেননা খোদা ভীরুতার কারণেই মূলত মানুষ অন্যায়, অবিচার থেকে দূরে থাকবে। একজন মু’মিন বান্দার হূদয়ে যত বেশি তাকওয়া থাকবে সে আখেরাতের পথে ঠিক ততটাই এগিয়ে যাবে।

তাকওয়ার বিষয়ে অনেক হাদিস আছে। তাকওয়া আসলে কী? হযরত উমর (রা.) উবাই ইেন কা’বকে প্রশ্ন করলে উবাই পাল্টা প্রশ্ন করলেন- আপনি কি কখনো কণ্টকাকীর্ণ জঙ্গল অতিক্রম করেছেন? উত্তরে উমর (রা.) বললেন, হ্যাঁ! উবাই আবার প্রশ্ন করলেন : তখন আপনি কী করেন? উমর (রা.) বলেন, আমি যথাসম্ভব আমার শরীর ও কাপড় বাঁচিয়ে চলি যাতে আঘাতপ্রাপ্ত না হই। উবাই (রা.) বললেন, এটাই হচ্ছে তাকওয়া।

তাকওয়া সম্পর্কে আল্লাহপাক কোরআনে অনেক আয়াত নাজিল করেছেন। একটি আয়াতে আল্লাহপাক তাকওয়া সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন,

 ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করো। মুসলিম থাকা অবস্থায় ছাড়া যেন তোমাদের মৃত্যু না হয়’ (সুরা : আল ইমরান, আয়াত ১০২)। অন্য একটি আয়াতে আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সহযোগী হও’ (সুরা: আত তওবা, আয়াত ১১৯)।

আরো একটি আয়াতে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! সবরের পথ অবলম্বন করো, বাতিলপন্থিদের মোকাবেলায় দৃঢ়তা দেখাও, হকের খেদমত করার জন্য উঠে পড়ে লাগো এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাকো। আশা করা যায়, তোমরা সফলকাম হবে’ (সুরা : আল ইমরান, আয়াত ২০০)।

আত্মশুদ্ধির প্রধান উপায় হলো খারাপ কাজ ত্যাগ করা এবং কুচিন্তা, কুঅভ্যাস বর্জন করা। সদাসর্বদা সৎকর্ম, সৎচিন্তা, নৈতিক ও মানবিক আদর্শে স্বীয় চরিত্র গড়ে তোলার দ্বারা আত্মশুদ্ধি অর্জন করা। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘প্রত্যেক বস্তুরই পরিষ্কার করার যন্ত্র রয়েছে। আর অন্তর পরিষ্কারের যন্ত্র হলো আল্লাহর জিকির’ (বায়হাকি)। অধিক পরিমাণে আল্লাহর স্মরণ ও জিকিরের মাধ্যমে অন্তরের কালো দাগ ও মরিচা দূর করা যায়। এ ছাড়া তওবা ইস্তেগফার, তাওয়াক্কুল, জুহদ, এখলাস, সবর, শোকর, কোরআন তেলাওয়াত, সালাত ইত্যাদির মাধ্যমেও আত্মশুদ্ধি অর্জন করা যায়। আর যখনই আত্মশুদ্ধি হবে তখনই তাকওয়া অর্জিত হবে।

তাকওয়া বা আত্মশুদ্ধির বিষয়টি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সবারই উচিত নিজেদের পরিপূর্ণ মুত্তাকি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। তাকওয়ার সবগুলো গুণ অর্জন করার মাধ্যমে আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে মুত্তাকি হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : আলেম ও গবেষক

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads