• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

বিলুপ্তপ্রায় আত্রাইয়ের তিন গুম্বুজ মসজিদ

  • আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৬ ডিসেম্বর ২০২০

মুঘল স্থাপত্যরীতিতে  তৈরি নওগাঁর আত্রাইয়ের তিন গুম্বুজ মসজিদ আজ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। পুরোনো এ মসজিদের স্থাপত্যরীতিতে মুঘল ভাবধারার ছাপ সুস্পষ্ট। সৃষ্টি আর ধ্বংসে এগিয়ে চলছে পৃথিবী। কেউ সৃষ্টিতে আবার কেউ ধ্বংসের খেলায় মত্ত। আবার কারোর দায়িত্বহীনতায় কালের গহ্বরে সমাহিত হচ্ছে ঐতিহাসিক অতীত। বর্তমান যেমন গুরত্ববহ, সোনালী অতীতও তেমনি অনুপ্রেরণা যোগায়। আমরা বাঙালি, আমাদের রয়েছে ঐতিহাসিক অতীত। বাংলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন। এসব ছড়িয়ে থাকা ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহ আমাদের সত্তাকে আলোড়ন জাগায়। তেমনি আলোড়ন জাগানো ঐতিহাসিক অতীত বহুল স্থান নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলায় ইসলামগাঁথী গ্রামে অবস্থিত তিন গুম্বুজ মসজিদ।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার পূর্বদিকে ঐতিহাসিক গুড়নদীর তীরে গ্রামটি অবস্থিত। ৫নং বিশা ইউনিয়নের জনসংখ্যার দিক দিয়ে একটি বড় গ্রাম এটি। এ গ্রামে রয়েছে শত শত বছর পূর্বের স্থাপনা কারুকার্যখচিত তিন গুম্বুজবিশিষ্ট একটি মসজিদ। আজো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে মুঘল সম্রাটের শাসনামলে নির্মিত এ কীর্তি। জনশ্রুতি রয়েছে রাতারাতি নাকি হঠাৎ করে গড়ে উঠে এ মসজিদটি। তবে এ প্রজন্মের অনেকে তা বিশ্বাস করতে নারাজ।

মসজিদটি কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তা এলাকার কেউই সঠিকভাবে বলতে পারেন না। শত শত বছর থেকে এটি রয়েছে; শুধু এতটুকুই বলতে পারেন গ্রামের লোকেরা। ওই গ্রামের ৭০ উর্ধ বয়সের মোঃ আব্দুস ছাত্তার বলেন, আমরাতো দূরের কথা আমাদের বাপ-দাদারাও বলতে পারেননি এটি কত সনে স্থাপিত হয়েছে। ওই গ্রামের অধিবাসী আত্রাই কলকাকলী মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মাজেদুর রহমান বলেন, আমার দাদা ১৯৮০ সালে ১০৩ বছর বয়সে মারা গেছেন। তিনিও বলতে পারেননি এ মসজিদ কোন যুগে স্থাপিত হয়েছে।

জানা যায়, ওই গ্রাম এক সময় নিভৃত পল্লীর একটি জনবসতি ছিল। এক সময় নৌকার বিকল্প কোনো যোগাযোগব্যবস্থা ছিল না। সে সময় আজ থেকে কয়েক শ বছর আগে গড়ে উঠে এখানে তিন গম্বুজবিশিষ্ট একটি মসজিদ। ইতিহাস পর্যালোচনায় যতদূর জানা যায়, ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে মুঘল শাসনামলে ইসলাম খাঁ নামের কোনো এক ব্যক্তি এ এলাকার শাসনকার্যে নিয়োজিত ছিলেন। ইসলামগাঁথী, ইসলামপুরসহ এ অঞ্চলে বেশ কয়েকটি গ্রাম তার নামানুসারেই করা হয়েছে। ধারণা করা হয় তার আমলেই এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মসজিদটি তার সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলতে বসেছে। তবে মহল্লার পক্ষ থেকে মসজিদ সমপ্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটির সংস্কার করা হলে স্থাপনাটি ঘিরে গড়ে উঠতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এই ঐতিহাসিক নিদর্শন, বাংলার গৌরব উজ্জ্বল ইতিহাসের সাক্ষী ঐতিহাসিক আত্রাইয়ের তিন গুম্বুজ মসজিদ সংস্কারে এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করছেন উপজেলার সচেতন মহল।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads