• বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪২৯
ভাঁজযোগ্য স্মার্টফোনের দৌড়ে অংশগ্রহণকারীরা

ছবি : সংগৃহীত

টেলিযোগাযোগ

ভাঁজযোগ্য স্মার্টফোনের দৌড়ে অংশগ্রহণকারীরা

  • এম রেজাউল করিম
  • প্রকাশিত ০২ ডিসেম্বর ২০১৮

স্মার্টফোনের নানা আকৃতি ও ফিচারের সম্পর্কে এখন বিশ্বের সবাই পরিচিত হলেও সম্প্রতি বাজারে আসা ভাঁজযোগ্য স্মার্টফোন চিয়ে চিন্তিত এখনো অনেকেই। বিশ্বের বড় বড় মোবাইল জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানগুলো ভাঁজযোগ্য স্মার্টফোন আনার ঘোষণা দিচ্ছে অহরহ। তবে ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে এই ভাঁজযোগ্য স্মার্টফোনের বাজারে দৌড়ের প্রতিযোগিতা। তাহলে জেনে নেওয়া যাক কোন কোন প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে এই দৌড় প্রতিযোগিতায়-

অপো

ভাঁজযোগ্য স্মার্টফোনের বাজারে দৌড়ের প্রতিযোগিতায় খুব সম্প্রতি স্মার্টফোন ব্র্যান্ড অপোর নাম এসেছে।

নতুন এ স্মার্টফোনটির স্পেসিফিকেশন বা কবে নাগাদ এটি বাজারে আসতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেয়নি অপো। আপাতত এটি অনেকটাই নিশ্চিত যে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে ডিভাইসটির শুধু প্রোটোটাইপ উন্মোচন করা হবে, বিক্রির জন্য নয়। অপোর একজন পণ্য ব্যবস্থাপকের বরাত দিয়ে এমনটাই নিশ্চিত করেছে ডাচ প্রযুক্তি সাইট টুইকারস।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্র্রতিক বছরগুলোয় বেশ কিছু ফোল্ডএবল ফোনের নকশা পেটেন্ট করেছে চীনা প্রতিষ্ঠানটি। অপোর পেটেন্টগুলোর মধ্যে একটিতে দেখা গেছে ডিভাইসটি বাইরের দিকে দুবার ভাঁজ খোলা যাবে। ফলে পর্দার মাপ হবে তিনগুণও হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এলজি

দক্ষিণ কোরিয়ার অন্যতম শীর্ষ প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এলজিও ভাঁজযোগ্য স্মার্টফোন আনছে বলে জানা গেছে। প্রযুক্তি সাইট এনগেজেটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি অফিসের (ইইউআইপিও) কাছে ‘ফ্লেক্স’, ‘ফোল্ডি’ ও ‘ডুপ্লেক্স’- নতুন এ তিনটি ব্র্যান্ড নাম নিবন্ধন করেছে এলজি৷ এই তিনটি নামই ক্লাস ৯ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধন করা হয়েছে।

এলজি সামনে তাদের ফোল্ডেবল বা যেকোনো ডিভাইসের জন্য এই নামগুলো ব্যবহার করবে তা অনেকটা নিশ্চিত হয়েই বলা যায়, এমনটাই ভাষ্য প্রতিবেদনটির। যদিও এ নামগুলো কোনো স্মার্টফোনে নাকি অন্য কোনো ডিভাইসের জন্য ব্যবহার করা হবে তা স্পষ্ট নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে আইএএনএসের প্রতিবেদনটিতে।

হুয়াওয়ে

ফোল্ডেবল বা ভাঁজ করা যায় এমন স্মার্টফোন আনতে কাজ করছে চীনভিত্তিক স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। বছরের ১৯ নভেম্বর ফোল্ডেবল ডিসপ্লের স্মার্টফোন আনতে পেটেন্ট আবেদন করেছিল হুয়াওয়ে। আর আগামী বছর নাগাদ ডিভাইসটি উন্মোচনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

ডাচ সাইট লেটসগোডিজিটালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, হুয়াওয়ের পেটেন্টে দেখা গেছে, ফোল্ডেবল স্মার্টফোনটি জেডটিইর ডুয়াল ডিসপ্লের অ্যাক্সন এম থেকে দেখতে আলাদা হবে। এ ছাড়া নতুন এ স্মার্টফোনটি দ্রুতগতির ফাইভজি নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি সমর্থন করবে বলে জানিয়েছে আরেক সংবাদমাধ্যম ডিজিটাল ট্রেন্ডস।

সেখানে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, হুয়াওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রিচার্ড ইউ বলেন, ফাইভজি সমর্থিত ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের উন্নয়নে তারা কাজ করছেন। তবে শিগগিরই ফোল্ডেবল ডিভাইসটি উন্মোচনের সম্ভাবনা নেই। এদিকে হুয়াওয়ের আরেক কর্মকর্তা জিনি জিয়াও বলেন, ফোল্ডেবল ডিভাইস এখন কল্পনা নয় বরং বাস্তবতা। আগামী বছর নাগাদ তারা এ ডিভাইসটি উন্মোচনের প্রত্যাশা করছেন।

স্যামসাং

দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর ফোল্ডেবল বা ভাঁজযোগ্য ডিসপ্লের স্মার্টফোনের প্রোটোটাইপ উন্মোচন করেছে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস। গত ৯ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক ডেভেলপার সম্মেলনে নতুন ডিভাইসটি প্রদর্শন করা হলেও এই ফোল্ডেবল স্মার্টফোনটির ফিচার সম্পর্কে জানা যায়নি।

প্রতিষ্ঠানটি জানায়, ভাঁজ করা অবস্থায় বইয়ের মতো দেখতে এই ডিভাইসটিতে ইনফিনিটি ফ্লেক্স ডিসপ্লে ব্যবহার করা হবে। ৭ দশমিক ৩ ইঞ্চি ডিসপ্লের রেজল্যুশন হবে 1536X2152 পিক্সেল এবং ভাঁজ করা অবস্থায়ও ৪ দশমিক ৬ ইঞ্চি ডিসপ্লের 1960X840 পিক্সেল। স্যামসাংয়ের তথ্য অনুযায়ী, তাদের ফোল্ডেবল স্মার্টফোনের নাম এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। কয়েক মাসের মধ্যেই এর উৎপাদন শুরু হবে এবং আগামী বছরের শুরুর দিকে ডিভাইসটির বিক্রি শুরু হবে প্রত্যাশা করছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠানটি।

রয়্যাল করপোরেশন

ভাঁজযোগ্য স্মার্টফোন ইস্যুতে কান পাতলে গুঞ্জন শোনা যেত স্যামসাং ফোল্ডেবল স্মার্টফোন আনছে৷ তবে স্যামসাংসহ বিশ্বের নামি-দামি সব মোবাইল নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে রীতিমতো বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিশ্ববাজারে ভাঁজযোগ্য স্মার্টফোনের বাজারে দৌড়ের প্রতিযোগিতায় নিজেদের নাম প্রথম সারিতে নিয়ে এসেছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান রয়্যাল করপোরেশন।

জানা যাচ্ছে, বিশ্বের প্রথম ফোল্ডেবল স্মার্টফোন এই ফ্লেক্সপে। মার্কিন সংস্থাটি জানাচ্ছে, এটি দুনিয়ার প্রথম ফোল্ডেবল স্মার্টফোন। কিন্তু আদতে এটিকে ট্যাবলেট বললেও ভুল বলা হবে না। কারণ ফোনটির ডিসপ্লে থাকছে ৭ দশমিক ৮ ইঞ্চির। কিন্তু ফোনটিকে ফোল্ড করার সঙ্গে সঙ্গে সেটির ডিসপ্লেটির সাইজ কমবে। ভাঁজ করলে তিনটি আলাদা স্ক্রিন তৈরি হবে। স্ক্রিন তিনটি দেওয়া হয়েছে সামনে, পেছনে ও মাঝখানে।

তিনটি ভিন্ন র্যামের সংস্করণে পাওয়া যাবে ভাঁজযোগ্য ফোনটি। ৬ গিগাবাইট র্যাম ও ১২৮ গিগাবাইট স্টোরেজ সংস্করণের দাম হবে ১২৯০ মার্কিন ডলার (১ লাখ ৮ হাজার ৩৬০ টাকা)। ৮ গিগাবাইট র্যাম ও ২৫৬ গিগাবাইট স্টোরেজ সংস্করণের দাম হবে ১৪৩৪ মার্কিন ডলার (১ লাখ ২০ হাজার ৪৫৬ টাকা)। ৮ গিগাবাইট র্যাম ও ৫১২ গিগাবাইট স্টোরেজ সংস্করণের দাম হবে ১৮৬৪ মার্কিন ডলার (১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৭৬ টাকা)। তবে স্টোরেজ বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করতে পারেন মাইক্রোএসডি কার্ড। আকর্ষণীয় এবং উন্নত মানের ক্যামেরা থাকছে ফোনটিতে। ৩ হজার ৮০০ এমএএইচ ব্যাটারির সঙ্গে থাকছে ফার্স্ট চার্জিং সাপোর্ট।

সংস্থাটি দাবি করেছে, মাত্র ৩০ মিনিটেই একেবারে শূন্য থেকে ৮০ শতাংশ চার্জ হয়ে যাবে ফোনটি। ডিভাইসটির পুরুত্ব ৭ দশমিক ৬ এমএম। এতে ১৬ মেগাপিক্সেলের ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্স ও ২০ মেগাপিক্সেলের টেলিফটো লেন্সের ডুয়েল রিয়ার ক্যামেরা রয়েছে। ডিভাইসটিতে প্রসেসর হিসেবে থাকবে স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫। ইতোমধ্যেই চীনে ফোনটির প্রি-অর্ডার নেওয়া শুরু হয়ে গেছে৷ যেটির সিপিং শুরু হবে আগামী ডিসেম্বরে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads