সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সেনা উপস্থিতি চাইলে সৌদি আরবকে অর্থ দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার হোয়াইট হাউজে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট এমন মন্তব্য করেছেন বলে নিশ্চিত করেছে আলজাজিরা।
সংবাদ সম্মেলনে টাম্প বলেন, ‘সিরিয়ায় আইএসআইএসকে (ইসলামিক স্টেট) প্রতিহত করার কাজ আমরা প্রায় সম্পন্ন করেছি এবং খুব জলদিই ওই অঞ্চলের অন্যদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বিষয়টি নিরূপণ করা হবে। সৌদি আরব আমাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে খুবই আগ্রহী। বেশ ভালো, আপনি যদি আমাদের রাখতে চান, সম্ভবত আপনাদের আমাদেরকে মূল্য চুকাতে হবে।’
সোমবার আঞ্চলিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপ হয় সৌদি বাদশাহর। ফোনালাপে উভয় পক্ষেই ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি আমেরিকা-সৌদি কৌশলগত অংশীদারিত্ব নিয়েও আলোচনা হয়। মঙ্গলবারের আগ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে সৌদি আরবের অর্থ দিতে হবে এমন কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি দেয়নি হোয়াইট হাউজ কর্তৃপক্ষ। এমনকি মার্চ মাসের ২০ তারিখ সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক পরবর্তী সময়েও এ বিষয়ক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু গত সপ্তাহে প্রায় হঠাৎ করেই ওয়াইওতে এক অনুষ্ঠানে সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে বসেন ট্রাম্প। সেই ঘোষণায় ট্রাম্প স্পষ্ট করেই বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়া থেকে বের হয়ে যাবে এবং অন্য কেউ সিরিয়ার দায়িত্ব নিক। আর ওই বক্তব্যের পরই মূলত যুক্তরাষ্ট্রকে সৌদি আরবের অর্থ দিতে হবে এমন সিদ্ধান্ত আসে। অবশ্য এখন পর্যন্ত সৌদি আরবের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পরিচালিত অভিযান নিয়ে এর আগে কোনো প্রেসিডেন্ট সরাসরি মন্তব্য করেননি। কিন্তু ট্রাম্পই প্রথম গত ১৭ বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘একবার ভেবে দেখুন, গত ১৭ বছরে ৭ ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে। আমাদের হাতে কিছু নেই। ধ্বংস আর মৃত্যু ছাড়া কিছুই হয়নি। এটা একটা ভয়াবহ ব্যাপার। সুতরাং এটাই সময়। আমরা আইএসআইএসের বিরুদ্ধে খুবই সফল হয়েছি। যেকোনো জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা সফল হব। কিন্তু কিছু সময় ঘরে ফিরে আসতে হয় এবং আমরা বিষয়টি নিয়ে সত্যিই ভাবছি।’
২০১৪ সালে মধ্যপ্রাচ্যের সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা শুরু করে তৎকালীন ওবামা প্রশাসন। ওই অভিযানের ধারাবাহিকতায় এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী সিরিয়ায় অবস্থান করছে এবং দেশটির উত্তর-পশ্চিমাংশের বিদ্রোহী কুর্দি গোষ্ঠীকে সহায়তা করছে।