• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯

বিদেশ

উ. কোরিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ

লিবিয়াকে উদাহরণ হিসেবে দেখছে হোয়াইট হাউজ

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০১ মে ২০১৮

পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সমঝোতার জন্য লিবিয়াকে উদাহরণ হিসেবে দেখছে হোয়াইট হাউজ। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন তার বক্তব্যে লিবিয়ার উদাহরণ টেনে আনেন বলে জানিয়েছে সিএনএন। যদিও উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে লিবিয়া মডেল বিপজ্জনক হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০০০ সালের শুরুর দিকে লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি তার দেশের বিরুদ্ধে অবরোধ উঠিয়ে নেওয়ার শর্তে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু নিরস্ত্রীকরণে রাজি হওয়ার কয়েক বছরের মাথায় ওয়াশিংটন সমর্থিত বিদ্রোহীদের হাতে গাদ্দাফিকে ক্ষমতাচ্যুতও হত্যা করা হয়।

উত্তর কোরিয়া বিষয়ক বিশ্লেষকদের মতে, কিম জং উনের শাসন কতদিন টিকে থাকবে তা নির্ভর করছে একমাত্র তার পরমাণু প্রকল্পের ওপর। কারণ পিয়ংইয়ংও গাদ্দাফির ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েছে। উত্তর কোরিয়ার ক্ষেত্রে লিবিয়া মডেল ব্যবহার করে বোল্টন চাইছেন আন্তর্জাতিক অংশীদারদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে। অথচ ইতোমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠক থেকে সম্পূর্ণ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ঘোষণা দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন।

সিবিএস নিউজকে বোল্টন বলেন, ‘লিবিয়া আমাদের সন্দেহ দূর করতে আমেরিকা এবং ব্রিটিশ পরিদর্শকদের সেদেশের পরমাণু সম্পর্কিত কেন্দ্রগুলোতে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিল। সুতরাং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক তৎপরতার ওপর নির্ভরতার কোনো প্রশ্ন আসে না। আমরা তাদের সেভাবেই দেখেছিলাম যেভাবে তাদের আগে দেখিনি।’

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোল্টন ট্রাম্পের সঙ্গে উনের আসন্ন সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত। কারণ ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বক্তব্যে জানিয়েছেন, আগামী তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যেই দুই নেতার মধ্যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এখন পর্যন্ত নিশ্চিত নয় কবে নাগাদ এবং কোথায় এই ঐতিহাসিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু ট্রাম্প গত শুক্রবারের বক্তব্যে সম্ভাব্য কয়েকটি স্থানের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন। পম্পেও এবং বোল্টন উভয়েই একটা ব্যাপার নিশ্চিত করেছেন, ট্রাম্প-উনের প্রথম বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার বিশ্বাস উন্নয়নের চেষ্টা করা হবে। তবে উত্তর কোরিয়াকে নিয়ে সন্দিহান বোল্টন বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আমাদের মধ্যস্থতার অনেক ইতিহাস আছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের প্রতিশ্রুতি মিথ্যা অথবা মূল্যহীন প্রমাণিত হয়েছে। তাদের প্রতিশ্রুতি তারাই রাখতে পারেনি। আমার লক্ষ্য হলো এই সম্মেলনে সত্যিই কোনো সুযোগ আছে কি না তা নির্ধারণ করা। আমি বিশ্বাস করি সেই সুযোগ আছে।’

পেন্টাগনের গোয়েন্দা সংস্থা এবং অন্যান্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নিয়মিত উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউজ এবং নীতিনির্ধারকদের তথ্য প্রদান করছে। স্যাটেলাইট, ড্রোন, মানচিত্র, বিশ্লেষণ এবং অন্যান্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার কর্মকাণ্ড তত্ত্বাবধানের জন্য।

গত শুক্রবার পানমুনজমে দুই কোরিয়ার সফল সম্মেলনের পর কূটনৈতিক অভিযানে আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলেন কিম জং উন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং শিকে উত্তর কোরিয়ায় আমন্ত্রণ এবং মে মাসেই পরমাণু প্রকল্প কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়ার মতো ঘোষণা কিমকে বিশ্ব রাজনীতিকে অনেক স্বচ্ছ অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিমত বিশেষজ্ঞদের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads