• রবিবার, ৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪২৯

বাংলাদেশ

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় বালু খেকোদের তান্ডব

  • বগুড়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ৩১ জানুয়ারি ২০২১

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় নাগর নদে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না। এতে করে নদের বাঁধ ও নদতীরবর্তী রাস্তা, ফসলী জমি এবং নদতীরবর্তী গ্রামগুলো হুমকির মুখে পড়েছে, চরম আতঙ্কে আছে নদীপাড়ের মানুষ । এ ব্যপারে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মানববন্ধন করা সহ বিভিন্ন সময়ে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হলেও কোন কাজ হয়নি বলে নদ তীরবর্তী বাসিন্দারা জানান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের ধাপসুলতানগঞ্জ হাটের পূর্ব পাশ হতে নদ তীরবর্তী উত্তরদিকে যোগীপোতা, বলদমারা, পাঁচথিতা, চকবন্যা, শিবতলা, কোচদহ, বটতলা, পাইকপাড়া, চাকলা সহ প্রায় ১০থেকে ১৫টি স্থানে অবৈধভাবে এ বালু উত্তোলনের রমরমা ব্যবসা চলছে। এ ছাড়া উপজেলার পুর্ব আলোহালী , ভেলুরচক, পলিপাড়া সহ তালোড়া এলাকায় একইভাবে এই নদ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

শুধু বালু উত্তোলনই নয় পাশাপাশি নদতীরবর্তী হতে এক্সেভেটার মেশিন দিয়ে ট্রাকে ট্রাকে মাটিও কেটে নিয়ে ইটভাটা সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে তারা।

নদের তীরে বড় বড় গর্ত করে মাটি কাটায় যে কোনো মুহুর্তে নদীর বাঁধ পর্যন্ত ধসে যাওয়ার আশংকা করছে স্থানীয়রা। আবার ট্রাক দিয়ে এইসব বালু ও মাটি বহনের জন্য নদের বাধ কেটে বিভিন্ন স্থানে রাস্তা বানানোর ফলে বর্ষার মৌসুমে এলাকা প্লাবিত হওয়ারও আশংকা করছে অনেকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, অনেক নিষেধ সত্বেও তারা বালু উত্তোলন ও মাটি কাটার কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় এবং তাদের বাহুবলের ভয়ে অনেক বাসিন্দাই নিশ্চুপ হয়ে রয়েছে। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির কাছে ইতিপূর্বে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাইনি। মাঝে মধ্যে প্রশাসন অভিযান চালিয়ে মেশিনপত্র জব্দ করলেও পরবর্তীতে তারা আবারও মাটি কাটা ও বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দু-এক বছরের মধ্যে নদের দুপাশের জমি-জমা ও ভিটে মাটি ও বাড়িঘর নদী গর্ভে চলে যাবে।

বালু উত্তোলনকারী সেলিম হোসেন জানান, নদী তীরবর্তী ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গা ক্রয় করে আমি মাটি বিক্রি করছি। আমি বালু উত্তোলন করছি না। বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে মাঝে মধ্যে প্রশাসন থেকে অভিযান চালালেও পরবর্তীতে তারা আবারও বালু উত্তোলন শুরু করে।

বালু উত্তোলনকারী সাইফুল ইসলাম হাসু বলেন, আমি ব্যাক্তি মালিকানা জায়গা কিনে মাটি উত্তোলন করছি। আমার আওতায় ৪টি জায়গায় বোরিং করে বালু উত্তোলন করেছি। বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। তালোড়া হতে উত্তরে নদের কানাই শিবতলা কালুর ভাটা পর্যন্ত নদের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৫০টি মেশিনে এ বালু উত্তোলন হচ্ছে। কারা কিভাবে কাকে ম্যানেজ করে এই বালু উত্তোলন করছে তা আমার জানা নেই।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম জাকির হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, অভিযোগ পেলেই আমরা অভিযান চালিয়ে মেশিনপত্র জব্দসহ নিয়মিত মামলাও করি। আগামী সপ্তাহে আবারও বালু উত্তোলনের পয়েন্টে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads