এক দিকে দ্রুত গতিতে ট্রেন আসছে অন্যদিকে রেললাইনে দিয়ে হেটে যাচ্ছেন এক বৃদ্ধ। এই দৃশ্যটি চোখে পড়ে স্কুলছাত্র কেফায়েত উল্লাহর। সে নিজের জীবন বাজি রেখে দ্রুত ঝাঁপিয়ে পড়ে ওই বৃদ্ধ লোকটিকে ট্রেনে কাটা থেকে বাঁচিয়েছে । তার সাহসিকায় বেঁচে গেল এই বৃদ্ধ লোকটি। বৃহস্পতিবার আখাউড়া-সিলেট রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া বাইপাস রেলগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দৌঁড়ে গিয়ে রেললাইন থেকে ওই বৃদ্ধকে সরিয়ে নেওয়ার একটি ভিডিওটি বিকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। স্কুলছাত্র কেফায়েত উল্লাহ পৌর শহরের দেবগ্রাম এলাকার মো. মোজালক মিয়ার ছেলে। সে দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র।
কেফায়েত উল্লাহ বলেন, গত এক মাস ধরে সে সদর উপজেলার সুলতানপুরে জালালী ফুটবল একাডেমিতে কোচিং করছে। প্রতিদিন সকালে সে সহ এলাকার বেশ কয়েকজন ছেলে সেখানে গিয়ে কোচিং করছেন। প্রতিদিনের মতো তারা সকালে বাইপাস সড়ক দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে ফুটবল একাডেমিতে যাচ্ছিলেন। এ সময় তারা দেখতে পান একজন বৃদ্ধলোক রেললাইন দিয়ে বেহেলায় হেঁটে আসছে সেই সাথে ওই লাইন দিয়ে দ্রুত গতিতে একটি ট্রেনও আছে। এ অবস্থা দেখে আমি জীবন বাজি রেখে দৌড়ে গিয়ে ওই বৃদ্ধ লোকটিকে রেললাইন থেকে সরিয়ে দিই। এক-দুই সেকেন্ড দেরি হলেই লোকটি ট্রেনের ধাক্কা খেতো। পরে জানতে পারলাম তিনি কানে শোনেন না। লোকটিকে নিরাপদ স্থানে দাঁড় করিয়ে তারা একাডেমিতে চলে যায় । তবে তাদের হাতে সময় খুব কম থাকায় তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
ঘটনার সময় আমার সঙ্গে থাকা অন্যরা ভিডিও করে। পরে তা সময় করে ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ায় আলোড়ন সৃষ্টি হয়। এদিকে কেফায়েত উল্লাহর এ সাহসিকতার জন্য জালালী ফুটবল একাডেমি থেকে পুরস্কার ঘোষণা করেন।
জালালী ফুটবল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও কোচ শেখ সোহরাব জালালী বলেন, আমাদের একাডেমির অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে মাদক থেকে মুক্ত থাকা এবং নিজের জীবন বাজি রেখে অন্যের উপকার করা। কেফায়েত উল্লাহর এ সাহসিকতায় আমরা গর্বিত। ভিডিওতে দেখেছি মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে লোকটিকে সে বাঁচিয়েছে। তার মতো ছেলেদের জন্য আমরা মাথা উঁচু করে কথা বলতে পারি। আমরা আগামী রোববার একাডেমির পক্ষ থেকে কেফায়েত উল্লাহকে সংবর্ধনা দেব ও পুরস্কৃত করবো।
