• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪২৯
এক মাসে ২৭৬ পয়েন্ট হারিয়েছে ডিএসইর প্রধান সূচক

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লোগো

সংগৃহীত ছবি

পুঁজিবাজার

ধারাবাহিক দরপতনে পুঁজিবাজার

এক মাসে ২৭৬ পয়েন্ট হারিয়েছে ডিএসইর প্রধান সূচক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বিদেশি ও স্থানীয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির প্রবণতায় ধারাবাহিক দরপতন দেখা দিয়েছে পুঁজিবাজারে। এতে গত এক মাসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ২৭৬ পয়েন্ট। বিক্রয় চাপে অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দর পড়ে যাওয়ায় বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার কোটি টাকারও বেশি। গত এক মাসের বাজার-চিত্র পর্যালোচনায় এমন তথ্য মিলেছে।

পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত আগস্ট মাসের শেষার্ধ থেকে মাঝেমধ্যে কিছুটা বিরতি দিয়ে পুঁজিবাজারে দরপতন চলছে। এ সময় প্রতি সপ্তাহে অধিকাংশ শেয়ারের দরপতনে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে। গত এক মাসে ডিএসইএক্স সূচকটি পয়েন্ট হারিয়েছে প্রায় ৫ শতাংশ। আগস্টে আর্থিক খাতের শেয়ার দরবৃদ্ধিতে সূচক বাড়লেও গত এক মাসে আবারো আগের অবস্থানে ফিরে আসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক।

ব্যাংকে আমানতের সুদহার কমে যাওয়ায় গত জুলাই থেকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়ার বড় সুযোগ তৈরি হয়। কিছুদিন লেনদেনও বাড়তে দেখা যায়। তবে এ ধারা স্থায়ী হয়নি। বাজার-সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিদেশি ও স্থানীয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের টানা শেয়ার বিক্রিতে আগস্টের শেষার্ধ থেকে দরপতনের ধারায় ফিরে আসে বাজার পরিস্থিতি। এমনকি উৎপাদনমুখী খাতের লভ্যাংশ ঘোষণাকালীন সময়েও দরপতন অব্যাহত থাকে।

জানা গেছে, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ও নির্বাচনকালীন সময়ে অস্থিতিশীল পরিবেশের আশঙ্কায় বিদেশিরা দেশের পুঁজিবাজার থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে ধারাবাহিকভাবে দেশের পুঁজিবাজার থেকে তারা বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ডিএসইর মাধ্যমে গত এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত পাঁচ মাসে বিদেশিরা ১ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকার শেয়ার কেনার বিপরীতে ২ হাজার ৪৩১ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছেন। চলতি বছরের প্রথম আট মাসের মধ্যে গত জানুয়ারি ও মার্চ ছাড়া বাকি ছয় মাসে কেনার তুলনায় বিদেশিরা শেয়ার বিক্রি করেছেন বেশি।

শেয়ার বিক্রির পাশাপাশি বিদেশিদের লেনদেনের পরিমাণও কমে গেছে। গত তিন মাসে বিদেশিদের লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের জুন মাসে ডিএসইর মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ ছিল বিদেশিদের দখলে। আর আগস্ট শেষে তা ১ দশমিক ৫৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

শুধু বিদেশি বিনিয়োগকারীরাই নয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সীমা (এক্সপোজার) গণনা নীতির কারণে সূচক একটি নির্দিষ্ট অবস্থানে এলেই প্রাতিষ্ঠানিক বিশেষ করে ব্যাংকগুলোকে শেয়ার বিক্রি করতে হচ্ছে। এটিও দরপতনের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। পর্যালোচনায় দেখা যায়, এক মাসে শুধু ব্যাংক খাত বাজার মূলধন হারিয়েছে ৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এ সময় টেলিযোগাযোগ খাত হারিয়েছে ২ হাজার কোটি টাকার বেশি। ফার্মাসিউটিক্যালস হারিয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এছাড়া প্রকৌশল ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাজার মূলধন হারিয়েছে।

এদিকে এক মাস ধরে চলতে থাকা দরপতনের কারণ খুঁজতে গত বৃহস্পতিবার বৈঠক করেছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিসহ পুঁজিবাজারের সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকরা। সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত না এলেও তারা বৈঠকে আস্থাহীনতার বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে করণীয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিএসইসির চেয়ারম্যান পরিস্থিতি উত্তরণে শিগগিরই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে বৈঠক করার বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।

তিন সপ্তাহের টানা দরপতনের পর গত সপ্তাহেও ডিএসইতে লেনদেন ও সূচক কমেছে। সদ্য শেষ হওয়া সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা, যা আগের সপ্তাহের চেয়ে প্রায় ২৭ শতাংশ কম। গড় লেনদেন ৭৭৬ কোটি থেকে ৫৭০ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে প্রায় ৭৬ শতাংশের দর কমে যাওয়ায় প্রধান সূচক হারিয়েছে ১২৪ পয়েন্ট। এর আগের সপ্তাহে এ সূচকটি কমে ৩৩ পয়েন্ট। গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১ শতাংশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads