শিবচর উপজেলার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রথম দফা ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এক ছাত্রীকে আরো তিন বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উমেদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে স্কুলের দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর এমন অভিযোগ ফাঁস হওয়ার পর আরো কয়েকজন ছাত্রীরও তার হাতে একইভাবে নির্যাতনের শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে, এসব অভিযোগের বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই পালিয়ে গেছেন রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বড়গাছি গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে রবিউল।
জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১ এপ্রিল সহকারী শিক্ষক (কৃষি) হিসেবে উমেদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগ দেন রবিউল। মেয়েটি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় একদিন ওই শিক্ষক তার খালি বাসায় ডেকে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে তা ভিডিও করে রাখেন। এরপর শুরু করেন ব্ল্যাকমেইল। ভিডিও অন্যদের দেখানোর ভয় দেখিয়ে ও বিয়ের প্রলোভন দিয়ে তাকে তিন বছর নিয়মিত ধর্ষণ করেন। একাধিকবার গর্ভপাতও করান। বছরখানেক আগে মেয়েটি জানতে পারে আরো কয়েকজন ছাত্রীকে রবিউল একই ধরনের সম্পর্ক করতে বাধ্য করছেন। এরপর সে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চাইলে তাকে নানারকম ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করতে থাকেন। এভাবে গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রবিউল তাকে নির্যাতন করেন। এর মধ্যে শিক্ষক রবিউল ওই ছাত্রীর নামে কুৎসাও ছড়াতে থাকেন। এ অবস্থায় তার বিচার দাবিতে গত ১৩ মার্চ প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি বরাবর লিখিত অভিযোগ করে মেয়েটি। এরপরই বের হতে থাকে রবিউলের একের পর এক অপকর্মের তথ্য। ফাঁস হয়ে যায় একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে তার আপত্তিকর ছবি ও অডিও রেকর্ড। আরো দুই ছাত্রীর পরিবারও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে। এরই মধ্যে রবিউল স্কুল থেকে ছুটি না নিয়ে পালিয়ে গিয়ে টেলিফোনে ওই ছাত্রীকে অভিযোগ তুলে নিতে হুমকি দিতে থাকেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. রোকনুজ্জামান গতকাল রোববার বাংলাদেশের খবরকে বলেন, রবিউল অভিযোগের সত্যতা মৌখিকভাবে স্বীকার করলেও শো-কজের জবাবে তা অস্বীকার করেছে। ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই ১৪ মার্চ কৌশলে পালিয়ে যায় সে। তারপর ফোনে ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে। আমাকেও চুপ থাকতে প্রলোভন দিচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কাদির খালাসী বলেন, অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাদারীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন ভুঁইয়া জানান, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।