• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
বাবাকে মৃত দেখিয়ে মাদক ব্যবসায়ীর জামিন

মাদক ব্যবসায়ী মাসুদ রানা বাবুর বাবা মোফাজ্জলের

সংগৃহীত ছবি

অপরাধ

বাবাকে মৃত দেখিয়ে মাদক ব্যবসায়ীর জামিন

  • ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৫ জুন ২০১৮

এলাকায় বেশ হইচই ফেলে দিয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের চেংমারি গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী মাসুদ রানা বাবু। বাবা মোফাজ্জল হোসেনকে মৃত দেখিয়ে আদালত থেকে জামিন নিয়ে রীতিমতো বিপদে ফেলে দিয়েছে তার অসুস্থ বাবা, নিজের আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানকে। বাবুর বাবা ইতোমধ্যেই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, আমি বেঁচে আছি, মরে যাইনি। তার আইনজীবী ও এলাকার চেয়ারম্যান দুজনেই ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রত্যয়নপত্রের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বনের কথা জানিয়েছেন।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ বাবুকে (২৮) তার বাড়ি থেকে ৫৫টি ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ১৮ এপ্রিল আইনজীবী ফজলে রাব্বী বকুল আসামি বাবুর বাবা মোফাজ্জলের মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্র ও মা রোকেয়া বেগমের অসুস্থতাজনিত কাগজপত্র আদালতে দাখিল করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক বাবুকে জামিন দেন।

ধর্মগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম মুকুল স্বাক্ষরিত ওই প্রত্যয়নপত্রে বলা হয়, ‘আমি বাবুকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি ও জানি। সে অত্র ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা। আমার জানা মতে তার বাবা মোফাজ্জল হোসেন এ বছরের ১৫ এপ্রিল মারা গেছেন। আমি মৃতের রুহের মাগফেরাত কামনা করি।’

চেংমারি গ্রামে বাবুদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার বাবা বেঁচে আছেন তবে তিনি অসুস্থ। বাবুর মা রোকেয়া বেগমও সুস্থ নন। বাবুর স্ত্রী ও এক মেয়ে রয়েছে।

মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্র সম্পর্কে জানতে চাইলে বাবুর বাবা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমি বেঁচে আছি, আমি মারা যাইনি। আদালতে আমার মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে- এ সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। স্থানীয় চেয়ারম্যান, আইনজীবী বা আমার ছেলে আমাকে কিছুই জানায়নি।’

ধর্মগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মুকুল জানান, ‘বাবুর বাবা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ এটা আমি জানি। বাবুর ভাই তার বাবার মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্র নিতে এসেছিল। ব্যস্ততার মধ্যে আমি প্রত্যয়নপত্রে স্বাক্ষর করে দিয়েছি। পরবর্তীতে কেউ মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্র নিতে এলে খেয়াল রাখব।’

বাবুর মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার আইনজীবী ফজলে রাব্বী বকুল বলেন, ‘আসামিপক্ষ আমাকে বাবুর বাবার মৃত্যুর প্রত্যয়নপত্র দিয়েছিল। সেটাই আমি আদালতে দাখিল করেছি। পরে শুনেছি এই প্রত্যয়নপত্রে ভুল তথ্য ছিল। এখন থেকে এ ধরনের প্রত্যয়নপত্র কেউ দিলে সেটা যাচাই করার চেষ্টা করব।’

ঠাকুরগাঁও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ জানান, বিষয়টি শুনেছি। জেলা আইনজীবী সমিতির সভায় বকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে। পরবর্তী সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

স্থানীয় সরকার ঠাকুরগাঁওয়ের উপপরিচালক (উপসচিব) ড. একেএম আজাদুর রহমান জানান, আমি এই প্রথম এ বিষয়টি অবগত হলাম। অভিযোগ পেলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads