• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
কক্সবাজারে ১২ মামলায় ১৫০০ বিএনপি নেতাকর্মী এলাকাছাড়া

মানচিত্রে কক্সবাজার

সংগৃহীত ছবি

অপরাধ

কক্সবাজারে ১২ মামলায় ১৫০০ বিএনপি নেতাকর্মী এলাকাছাড়া

  • মাহাবুবুর রহমান, কক্সবাজার
  • প্রকাশিত ০৯ নভেম্বর ২০১৮

কক্সবাজারের ৭ টি থানায় দায়ের করা ১২ টি মামলার আসামী হয়ে অন্তত ১৫০০ বিএনপি ও জামায়াতকর্মী এখন ঘরছাড়া। গ্রেফতার এড়াতে অনেকে এলাকাতে যাচ্ছেনা। এছাড়া এসব মামলায় ইতিমধ্যে আটক হয়েছে বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী এবং কোন মামলায় উচ্চ আদালতে জামিন নিলেও পরে নতুন মামলায় আসামী করা হচ্ছে তাদের। বিএনপির দাবি, সম্পূর্ন মিথ্যা ঘটনা দেখিয়ে শত শত দলীয় নেতা কর্মীদের নামে মামলা করা এবং তাদের আটক করে তাদের হয়রানী এবং মনোবল নষ্ট করার চেস্টা করা হচ্ছে। এতে মানুষ হিসাবে চরম মানবাধিকার লঙ্গন হচ্ছে বলে মনে করেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। অন্যদিকে এসব মামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি পুলিশ কর্মকর্তারা।

কক্সবাজার জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউচুপ বদরী জানান, গত সপ্তাহ খানেকের মধ্যে কক্সবাজার সদর থানায় ৩ টি, রামু থানাতে ১ টি, চকরিয়া থানায় ২ টি, পেকুয়া থানায় ২ টি, কুতুবদিয়া ১ টি, মহেশখালী থানায় ২ টি, উখিয়া থানায় ১ টিসহ মোট ১২ টি গায়েবী মামলা করা হয়েছে। এসব মামলাতে এজাহারভূক্ত এবং অজ্ঞাত আসামীসহ অন্তত ১৫০০ জনকে আসামী করা হয়েছে। এতে পুরো জেলাজুড়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা ঘরে থাকতে পারছে না। বেশির ভাগ নেতা-কর্মী গ্রেফতার এড়াতে এলাকাতেও যেতে পারছেন না।

কক্সবাজার পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘২৮ অক্টোবর একটি মামলা হয়েছে যেখানে আমার নাম আছে। সেখানে ঘটনা দেখানো হয়েছে ভোর ৪টায় নাকি আমরা টমটমে আগুন দিয়েছি, মিছিল করেছি। অথচ সে সময় আমি আমার পিতাকে নিয়ে হাসপাতালে ছিলাম। আর যে স্বাক্ষীকে দেখানো হয়েছে তার সাথে আমার কথা হয়েছে। সে বলেছে একটি টমটম গাড়ীতে আগুন জ্বলতে দেখে রুম থেকে বের হয়েছে তবে কোনো মিছিল বা কোনো বিএনপির লোকজন দেখেনি। পরে পুলিশ এসে তাদের নাম ঠিকানা লিখে নিয়ে চলে গেছে। আবার ৮ নভেম্বর আরেকটি মামলা হয়েছে তখন আমি ঢাকা হাইকোর্টে জামিন নিতে ব্যস্ত ছিলাম। এভাবে সব জায়গায় সম্পূর্ন মিথ্যা মামলা করে আমাদের হয়রানী করা হচ্ছে। কিন্তু কোথাও বলার জায়গা পাচ্ছি না’।

কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. শামীম আরা স্বপ্না বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক জীবনে এ ধরনের হাস্যকর আজগুবি মামলা আর দেখিনি। যেখানে পুলিশ নিজে বাদি হয়ে মামলা করছে। মামলায় আসামীদের মধ্যে অনেকে বর্তমানে বিদেশে আছে, আবার ঘটনায় সময় দেশে ছিল না বা কক্সবাজারেও ছিল না। এমন অনেকে আছে যারা বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নয় একেবারে সাধারণ কর্মজীবি মানুষ। সবাইকে গায়েবি মামলায় আসামাী করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আমাদের চকরিয়া উপজেলা সভাপতিসহ জেলা সদরের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। মূলত সরকারের ইন্ধনে পুলিশ বাদী হয়ে এ সমস্ত আজগুবি মামলা দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের হয়রানী এবং মনোবল নষ্ট করা চেষ্টা করছে’।

কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ ও হুইপ শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘ফিলিস্তিনের মুসলামানরাও মনে হয় এরকম কঠিন অবস্থার মধ্যে নাই। মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে সেখানেও পুলিশ হামলা করছে। বাড়ি-ঘরে তো থাকতেই পারছে না। আর কোনো ঘটনা ছাড়া নিজেরা ঘটনা তৈরি করে মামলা করার নজির এবারই প্রথম দেখলাম। মুলত আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে যাতে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী পাড়ায় বা ঘরে থাকতে না পারে সে জন্য এই মামলা করা হচ্ছে’।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মৎস বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, ‘সরকার একদিকে সংলাপ করছে অন্যদিকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গায়েবী মামলা দিয়ে আটক করছে। যদি একটি দল নিয়মিত সভা সমাবেশ করে ভোট চাইতে পারে আর অন্য দলের নেতাকর্মীরা জেলে থাকে বা পালিয়ে বেড়ায় তাহলে কিভাবে সুষ্ঠ নির্বাচন হবে ?’

এ বিষয়ে জেলা পুলিশ প্রশাসনের দুজন শীর্ষ কর্মকর্তার সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তারা রাজি হননি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads