• রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪২৯
খোঁজ মিলছে না সম্রাটের!

ছবি : সংগৃহীত

অপরাধ

খোঁজ মিলছে না সম্রাটের!

ধৈর্য ধরতে বললেন র্যাব ডিজি

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৫ অক্টোবর ২০১৯

ক্যাসিনো সম্রাটখ্যাত ঢাকা মহানগর আওয়ামী যুবলীগ দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের খোঁজ মিলছে না কোথাও। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কর্মকর্তাও মুখ খুলছেন না। তবে ধৈর্য ধরতে বলেছেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।

সম্রাট এখন কোথায় এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাবের মহাপরিচালক বলেন, আমি সুনির্দিষ্টভাবে কারো নাম বলব না। শুধু বলতে চাই আপনারা ধৈর্য ধরলেই দেখতে পাবেন। এর বাইরে এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না।

সম্রাট প্রসঙ্গে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ওয়েট করেন, এত তাড়াহুড়ো করছেন কেন।

গত সপ্তাহে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছিলেন সম্রাট গ্রেপ্তার হয়েছে কি না তা শিগগিরই জানা যাবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অপেক্ষা করুন, আপনারা দেখবেন, খুব শিগগিরই দেখবেন।’

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে শুরু হয় র্যাবের ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান। ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত বেশ কয়েকজন আইনের আওতায় এলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট। অভিযানের প্রথম দিন নেতাকর্মীদের নিয়ে কাকরাইলের অফিসে অবস্থান নিলেও এরপর থেকে লাপাত্তা তিনি। বাসা, অফিস কোথাও খোঁজ নেই তার। সম্রাট যাতে দেশের বাইরে যেতে না পারে সেজন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে সম্রাট ও তার পরিবারের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেও পাওয়া যাচ্ছে না সম্রাটের সঠিক তথ্য।

র্যাব বলছে, একটি পক্ষ সম্রাটকে নিয়ে গুজব ছড়িয়ে অভিযানকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। তাদের শনাক্তে কাজ চলছে।

র‍্যাব-১-এর পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, গুজব তৈরি হয়েছে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এই ধরনের গুজব সৃষ্টিকারী যারা আছে, তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

তিনি আরো জানান, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে একজন ব্যক্তি মুখ্য নয়। যারাই জড়িত, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

তিনি বলেন, যদি কারো নাম এখানে থাকে তাহলে সবাইকে ধরা হবে— সে রকম নির্দেশ আমাদের দেওয়া আছে। অভিযান শিথিল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

গতকাল শুক্রবার বনানীর পূজামণ্ডপ পরিদর্শন শেষে র্যাব ডিজি বেনজীর আহমেদ বলেন, এবার প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ইশতিহারে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করার কথা বলেছেন। চলমান দুর্নীতি বিরোধী বা শুদ্ধি অভিযান অনেক বড় একটি বিষয়। এই অভিযানের সঙ্গে শুধু র‍্যাব ফোর্সেস জড়িত না। আর এই অভিযানে র‍্যাব লিড এজেন্সি নয়। আমরা সহযোগী প্রতিষ্ঠান, আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরকারের নির্দেশে কাজ করছি। সামগ্রিক দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে কিন্তু অনেক এজেন্সি জড়িত। সেক্ষেত্রে আমি বলতে পারি, চলমান অভিযানে র্যাব লিড এজেন্সি নয়।

সাবেক ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ক্যাসিনোর জন্য পুলিশ একা দায়ী নয়। সে সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে র‍্যাবসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার ওপর দায় পড়ে।

এ বিষয়ে র‍্যাব ডিজির প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আসলে আমি জানি না উনি বলেছেন কি না। উনি একজন অভিজ্ঞ পুলিশ কর্মকর্তা, উনার এই ধরনের মন্তব্য করার কথা না আমি যতটুক জানি। আমি ধারণা করব যে, উনি এ ধরনের মন্তব্য করেন নাই। তাই এ বিষয়ে আমার মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন আমরা সাতটি ম্যান্ডেট নিয়ে কাজ করছি। আমাদের সর্বশেষ ম্যান্ডেট হচ্ছে সরকার যখন যা নির্দেশ দেবে তাই করব। সুতরাং সরকারের নির্দেশিত না হলে, সাধারণত আমরা ম্যান্ডেটের বাইরে গিয়ে কাজ করি না।

বেনজীর আহমেদ বলেন, আমরা সবাই মিলেমিশে কাজ করব। যার যে দায়িত্ব আছে, আমরা সবাই সমন্বয় করে কাজ করব। দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানে সরকারের নির্দেশে যখন প্রয়োজন হবে, তখনই অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে র‍্যাব কাজ করব।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন এর সুদূরপ্রসারী একটা প্রভাব দেশের মানুষ দেখতে পাবেন। এর সামগ্রিক প্রভাব দেশের সার্বিক উন্নয়নে পড়বে। আগামীতে দেশের সামাজিক ক্ষেত্রে থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ক্ষেত্রসহ অনেক কিছুতেই প্রভাব পড়বে। দেশবাসী সামনে  চমৎকৃত হবেন এবং এর সুফল প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম দেশের মানুষ পেয়ে যাবে। সেটার জন্য আমরা অপেক্ষা করি, অধৈর্য হওয়ার কোনো কারণ নাই।

শারদীয় দুর্গোৎসবের নিরাপত্তায় দেশব্যাপী র‍্যাবের রোবাস্ট প্যাট্রলিং ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়ে বেনজীর আহমেদ বলেন, সারা দেশে ৩১ হাজারের বেশি পূজামণ্ডপে পূজা উদযাপিত হবে। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের জন্য র‍্যাবের পক্ষ থেকে সকল প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাজধানীর প্রতিটি পূজামণ্ডপে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ডগ স্কোয়াড দ্বারা মণ্ডপ সুইপিং করা, মহল্লার মোড়ে চেকপোস্ট বসানো, ব্লক রেইড করা হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads