• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯
ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য আশুগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু

ছবি: বাংলাদেশের খবর

অপরাধ

ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য আশুগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতু

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৮ নভেম্বর ২০২০

মেঘনা নদীর উপর নির্মিত সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতুতে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট বড় ছিনতাইয়ের ঘটনা। ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে শ্রমিক, পথচারি ও বিনোদনপ্রেমী দর্শনার্থীরা হারাচ্ছেন কষ্টার্জিত টাকা, মোবাইল সেট ও মুল্যবান জিনিসপত্র। চাহিদা মোতাবেক জিনিসপত্র দিতে অস্বীকার বা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে ছিনতাইকারিদের অস্ত্রের আঘাতে ঘটছে হতাহতের ঘটনা। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, সেতুতে পর্যাপ্ত আলো এবং নিরাপত্তার অভাব ও সিসি ক্যামেরা বন্ধ থাকায় এসব ঘটনার পর নির্বিঘ্নে পার পেয়ে যাচ্ছে ছিনতাইকারিরা। ভুক্তভোগীসহ স্থানীয় প্রশাসন এসব অভিযোগ সেতুর টোল ইজারাদার এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগকে অবগত করলেও তা আমলে নেয়নি তারা। তবে টোল প্লাজার দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদেরও এসব ক্ষেত্রে সহযোগীতার কথা বলেছেন ভূক্তভোগীরা। দ্রুত এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে টোল ইজারাদার ও সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

টোল প্লাজা ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া আশুগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলার সংযোগস্থলে মেঘনা নদীর উপর নির্মিত সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতু ২০০২ সালে যানবাহন ও জনগণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এ সেতু চালু হওয়ার পর একদিকে রাজধানী ঢাকা সাথে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চালের যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমুল পরিবর্তন ঘটে, তেমনি আশে-পাশের মানুষের নিকট সেতু ও সেতু এলাকা দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়। ১২‘শ মিটার দীর্ঘ এবং প্রায় সাড়ে ১৯ মিটার প্রশস্ত এ সেতুতে উভয় পাশে রয়েছে ফুটপাত। শুরু থেকে গুরুত্বপুর্ণ  এ সেতু ও জননিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য উভয় পাশে ১২০টি লাইট ও বিভিন্ন স্থানে ৬টি সিসি ক্যামেরা সচল ছিল। কিন্ত বর্তমানে এসব লাইটের অর্ধেকের বেশি নষ্ট এবং সবকটি সিসি ক্যামেরা অচল। ফলে সন্ধা নামার সাথে সাথে সেতু ও আশপাশের  এলাকা অন্ধকারে পরিণত হয়। এ সুযোগে সন্ধ্যার পর বা একটু নিরিবিলি পরিবেশ হলে সেতু এলাকা চলে যায় ছিনতাইকারিদের দখলে। এসময় চলাচলকারি বন্দর শ্রমিক, পথচারিগণ ও দর্শনার্থীগণ শিকার হন ছিনতাইয়ের।

জানা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেতু ও সেতুর আশে-পাশের এলাকায় কমপক্ষে ৫টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। গত ২ বছর আগে সেতুতে ছিনতাইকারিদের ছুরিকাঘাতে এক কলেজ ছাত্র নিহতের ঘটনাও ঘটেছে। উপজেলা আইন-শৃংখলা কমিটিতে সেতুর নিরাপত্ত জোরদার করতে আলোচনা হয়েছে এবং এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও ভুক্তভোগীরা এসব বিষয় সেতুর টোল আদায়ে ইজারাদার এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ)কে অবগত করলেও তা আমলে নেয়নি তারা। তবে ইজারাদার নিজেদের কিছু সীমাবদ্ধতার কথা ও সওজ দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধায় মো. মিরাজ শেখ ও ফারুক হাওলাদার নামে ২ নৌশ্রমিক ছিনতাইয়ের শিকার হন। তারা জানান, দিনের কাজ শেষে বিশ্রামের জন্য সেতুতে উঠলে পিছন থেকে মিরাজকে ঝাপটে ধরে। ধস্তাধস্তি করলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বুকের আঘাত করে, ছিনিয়ে নেয় মোবাইল ও টাকা। গুরুতর আহত মিরাজ এখন ঢাকা মেডিকেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাবেদ মাহমুদ বলেন, সেতু ও আশে-পাশের এলাকায় লাইট নেই, সিসি ক্যামেরা নষ্ট। এসব বিষয় নিয়ে সেতুর ইজারাদার কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা হয়েছে, নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে পুলিশের সহায়তা নেয়ার কথাও বলা হয়েছে। ইজারাদার কর্তৃপক্ষ এসব আমলে নেয়নি। তবে সেতু ও সেতুর নিচে বন্দর এলাকায় পুলিশ টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নরসিংদী সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোফাজ্জল হায়দার বলেন, সেতুর নষ্ট লাইট দ্রুত মেরামত ও সিসি ক্যামেরা সচল করা হচ্ছে। এছাড়াও সেতুতে নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads