নরসিংদীতে পৃথক দুর্ঘটনায় দম্পতিসহ ৯ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে জেলার পৃথক তিনটি স্থানে এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকালে জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজালে বাসচাপায় চার মোটরসাইকেল আরোহী, দুপুরে সদর উপজেলার বাগহাটায় প্রাইভেটকার ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দম্পতি এবং মাধবদীতে অটোরিকশাযাত্রী, চালক ও এক পথচারী নিহত হন।
পুলিশ জানায়, রায়পুরার মরজাল এলাকা থেকে এক মোটরসাইকেলে ভৈরবের দিকে যাচ্ছিলেন চার ব্যক্তি। মোটরসাইকেলটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মরজাল চারারবাঘে পৌঁছলে বিপরীত দিক একটি বাস সেটিকে চাপা দেয়। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহীরা বাসের নিচে চাপা পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই চার আরোহীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আহত হন এক পথচারী। মোটরসাইকেলকে চাপা দেওয়া অনন্যা পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসটি কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকায় যাচ্ছিল।
নিহতরা হলেন জেলার শিবপুরের ঘোড়ারগাঁও এলাকার সুলতান মিয়ার ছেলে ইয়ামিন মিয়া (২৪), রায়পুরার মরজাল পশ্চিমপাড়ার মৃত হাফিজ উদ্দিনের ছেলে ডালিম উদ্দিন (১৬), একই এলাকার সুরুজ মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া (১৭) ও আসাদ মিয়ার ছেলে রমজান মিয়া (১৬)।
দুর্ঘটনায় পর প্রায় ২০ মিনিট সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
ভৈরব হাইওয়ে থানার ইনচার্জ একেএম কাউছার জানান, মরজালে দুর্ঘটনায় নিহত চার ব্যক্তি রাজমিস্ত্রির কাজ করত। কাজের জন্য তারা ভৈরব যাচ্ছিল। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
সদর মডেল থানার এসআই তাপস কান্তি রায় জানান, দুপুর ১২টার দিকে মহাসড়কের সদর উপজেলার বাগহাটা এলাকায় মসজিদের সামনে প্রাইভেটকার চাপায় মোটরসাইকেল আরোহী এক দম্পতি নিহত হন।
নিহতরা হলেন সদর উপজেলার মাধবদীর বিরামপুর গ্রামের দুবাই প্রবাসী আমিনুল ইসলাম (৩৫) ও তার স্ত্রী মানসুরা বেগম (২৫)। আমিনুল তার স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছিলেন বলে জানান তার ভগ্নিপতি কবির হোসেন। ছেলে ও ছেলের বউ হারিয়ে পাগলপ্রায় আমিনুলের বৃদ্ধা মা বানেছা বেগম।
ওসি আরো জানান, বিপরীত দিক থেকে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন ওই দম্পতি। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুজনই মারা যান। এলাকাবাসী প্রাইভেটকারটি আটক করেছে। চালক পলাতক। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মাধবদী থানার ওসি মো. ইলিয়াস মোল্লা বলেন, দুপুর পৌনে ২টার দিকে ঢাকা থেকে হবিগঞ্জগামী অগ্রদূত পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস মহাসড়কের মাধবদীতে পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের রাইন মার্কেটের সামনে একটি প্রাইভেটকারকে ধাক্কা দেয়। প্রাইভেটকারটি ছিটকে গিয়ে একটি রিকশা ও পথচারীকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই রিকশাযাত্রী মাধবদীর বিরামপুর এলাকার রতন মিয়া (৪৪) ও চালক নয়ন মিয়া (৩৪) মারা যান। এ সময় আহত পথচারী মাধবদীর মদিনা থ্রি-পিস নামে একটি দোকানের মালিক মকবুল হোসেনকে (৪২) স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মকবুল হোসেনের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
