• সোমবার, ৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪২৯
ঘরে ঘরে ভয়ানক গ্যাস বেলুন

সংগৃহীত ছবি

মহানগর

ঘরে ঘরে ভয়ানক গ্যাস বেলুন

  • নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৪ মার্চ ২০২১

সোমবার সকাল ৭টা। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের খামারপাড়া গ্রাম। এক ঘরে হলুদ পলিথিনের বেলুন ঝুলছে। নিচেই চুলায় চলছে রান্না। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রান্না করলেও গৃহবধূ এটিকে হেলাফেলা মনে করছেন। ভয়ানক এ ‘বেলুন বোমা’ রয়েছে ওই ইউনিয়নের ১৫টি গ্রামের সব বাড়িতেই। অথচ এ বিষয়ে কিছুই জানে না তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। তিতাস সোনারগাঁও কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মিজবাহ-উর রহমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘এমন কথা আজ নতুন শুনলাম।’ সংবাদকর্মীদের কাছে এটি শোনার পরই বিকেলেই উচ্ছেদ অভিযানে নামে তিতাস।

গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাদল নামে এক ব্যক্তি এই গ্যাস বেলুনের প্রবক্তা। দেড় হাজার টাকায় প্লাস্টিকের পাইপ, রশি ও মোটা পলিথিন দিয়ে এই গ্যাস বেলুন তৈরি করা হয়। বেলুনের দুই মাথায় থাকে প্লাস্টিকের পাইপ। একদিকের পাইপটি সরাসরি গ্যাসের পাইপের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। বেলুনের অপর দিকের পাইপের সংযোগ থাকে চুলার সঙ্গে। রাতের বেলায় যখন গ্যাসের চাপ বাড়ে, তখন মূল গ্যাসের লাইনের সঙ্গে যুক্ত বেলুনের পাইপটির মুখ খুলে দেওয়া হলে বেলুনটি গ্যাসে ভরে যায়। এক রাতে গ্যাস মজুত করলে তা দিয়ে অনায়াসে দুদিন রান্না করা যায়।

উত্তরপাড়া গ্রামের জীবন চন্দ্র সরকারের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, বাড়ির টয়লেটের ওপরে লাল পলিথিনের বেলুন। তিতাসের পাইপলাইন থেকে প্লাস্টিকের পাইপের মাধ্যমে পলিথিনের বেলুনে গ্যাস মজুত করে রাখা। বেলুনের আরেকটি পাইপ চুলায়। এভাবে গ্যাস নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে জীবন চন্দ্র সরকার বলেন, ‘এত্তো আইন-কানুন জানি না। দরকার পড়ছে, নিছি।’

রূপগঞ্জের কাঞ্চন ফায়ার স্টেশনের ইনচার্জ শাহ আলম বলেন, এটি খুবই বিপজ্জনক। যে-কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এক বাড়িতে দুর্ঘটনা ঘটলে পুরো গ্রাম ছারখার হয়ে যাবে।

এ কথা শুনে বিস্মিত রূপগঞ্জের ইউএনও শাহ নুসরাত জাহানও। তিনি বলেন, ‘এটা কীভাবে সম্ভব! একদিক থেকে এটা বড় অন্যায়। এরপর ঝুঁকি। আমরা বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’ তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল মোহাম্মদ নুরুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি শোনার পর তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ৪০টি গ্রামের গ্যাসলাইন বিচ্ছিন্ন করেছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads