• শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪২৯
সেনা নামলে নামবে বিএনপি!

লোগো বিএনপি

রাজনীতি

সেনা নামলে নামবে বিএনপি!

কর্মকৌশল নিয়ে অন্ধকারে প্রার্থীসহ তৃণমূল নেতারা

  • আফজাল বারী
  • প্রকাশিত ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮

সেনাবাহিনীর দিকে তাকিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটটি আওয়াজ দিয়ে মাঠে নামতে চায় সেনাবাহিনীর সঙ্গেই। কিন্তু তারপরও কৌশল কী হবে তা নিয়ে এখনো অন্ধকারে খোদ প্রার্থীসহ কর্মীরা। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ২৪ ডিসেম্বরের পর চিত্র পরিবর্তন হবে। ওই দিন সেনাবাহিনী মাঠে থাকবে। সরকারের দেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল ২৪ ডিসেম্বর সেনাবাহিনী নির্বাচনের মাঠে থাকবে। বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এই সময়টা বেছে নিয়ে তারাও মাঠ দখলে নামবে।

ভোটের দিন দল বেঁধে কেন্দ্রে যেতে হবে, ভোট দেওয়ার পাশাপাশি ভোট গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্র ছাড়া যাবে না, কেন্দ্র পাহারা দিতে হবে কেন্দ্রীয়ভাবে ধানের শীষের সব প্রার্থীকে এসব পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কীভাবে এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে হবে তার কোনো কৌশল সম্পর্কে কেন্দ্র থেকে অবহিত করা হচ্ছে না। তবে দলীয় একাধিক নেতা আলাপকালে জানিয়েছেন, ভোটের ২-১ দিন আগে প্রার্থীদের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হবে। এখন শুধু নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রার্থী বাংলাদেশের খবরকে বলেন, শেষ পর্যন্ত দলের কৌশল কী হবে সে বিষয়েও তারা অন্ধকারে আছেন। শেষ দিনে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হবে কি না এমন গুঞ্জন বিএনপির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যেও ছড়িয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট কৌশলের ব্যাপারে কিছু বলা না হলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে হেরফের হবে না বলে প্রার্থীদের জানানো হয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন নেতা জানান, শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকাই বিএনপির একমাত্র টার্গেট। এজন্য পরিকল্পনাও করা হয়েছে। তবে আগে থেকেই পুরো পরিকল্পনা প্রার্থীদের জানান দিলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পাল্টা কৌশল নিতে পারে। এ ছাড়া পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পরিকল্পনায়ও পরিবর্তন আসতে পারে। এজন্য আগে থেইে কোনো পরিকল্পনা জানানো হচ্ছে না। তবে প্রার্থীদের নেতাকর্মীদের নিয়ে গ্রেফতার এড়িয়ে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।পাশাপাশি ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কর্মসূচি মাঠে থেকে বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে।

ঐক্যফ্রন্ট নেতা সুব্রত চৌধুরী বলেন, প্রচারের শেষ সপ্তাহে সারা দেশে ভোটারদের মধ্যে ‘নির্বাচনী জোয়ার’ তুলতে চায় বিরোধী রাজনৈতিক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ জন্য রাজধানীতে বৃহৎ পরিসরে দুই থেকে তিন দিনের গণসংযোগের কর্মসূচি পালন করা হবে। ২৪ ডিসেম্বর সেনাবাহিনী মোতায়েনের পর জোরেশোরে মাঠে নামার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ২৭ ডিসেম্বর ঢাকায় বড় জনসভা করার প্রস্তুতিও চলছে। অন্যদিকে গণসংযোগ শুরু হওয়ার পর হামলা, মামলা ও গ্রেফতারে অনেকটা কোণঠাসা জোটের প্রার্থীদের অনেকে কৌশলগত কারণে নিজেদের সতর্কভাবে কাজ করার কথা বলা হয়েছে।

বিএনপি নেতাদের ধারণা, সেনাবাহিনী মোতায়েনের পর নির্বাচনী মাঠে অনেকটা ভারসাম্য ফিরে আসবে। তখন প্রার্থীরা প্রচার শুরু করতে পারবেন। নির্বাচনের অসমতল মাঠ কিছুটা হলেও ঠিক হবে। তাই যেসব আসনে বিএনপি প্রার্থীরা বেকায়দায় আছে, সেখানে প্রার্থীদের এখনই শক্তি ক্ষয় না করে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে। দলের নীতিনির্ধারকরা সেনা মোতায়েনের পর নির্বাচনী কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করতে চায়। আর শেষ পর্যায়ে ভোটে থাকার কেন্দ্রীয় কৌশলও প্রার্থীদের জানানো হবে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী মাঠে নামলে চিত্র পরিবর্তন হতে পারে। 

ড. কামাল হোসেনসহ জোটের শীর্ষ নেতারা আগে থেকেই বলে আসছেন, কোনোভাবেই নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে দূরে থাকা যাবে না। তারা শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবেন। লড়াই করবেন।

সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ঢাকা মহানগরীর বিএনপি প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেখানে ঢাকায় জনসভা সফল করতে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়। কিন্তু ভোটর মাঠে শেষ পর্যন্ত কীভাবে থাকতে হবে তার কোনো ফর্মুলা দেওয়া হয়নি। 

ভোটের দিনের কৌশলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা প্রসঙ্গে ওই বৈঠকে থাকা ঢাকা-৪ আসনের বিএনপির প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, কেন্দ্র সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে। দীর্ঘদিনের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, এমন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আগে থেকেই কৌশলের বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কেন্দ্র থেকে এখনই কিছু বলার সময় আসেনি। তবে যেসব ধারণা দিয়েছে তা এবং অভিজ্ঞতা দিয়ে কাজ করতে হবে।

সূত্র বলছে, সবাইকে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে মাঠে নামার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচনের শেষ দুই দিনকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন দলের নীতিনির্ধারকরা। কারণ শীর্ষ নেতাদের বিশ্বাস, ভোটের শেষের কয়েক দিন মাঠে থাকতে পারলে ভোটের মাঠে ভালোভাবে টিকে থাকবেন প্রার্থীরা।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads