• শনিবার, ৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪২৯
ড. কামালকে হত্যার পরিকল্পনা সংক্রান্ত ফোনালাপ ফাঁস

কামাল হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন শওকত নামের জনৈক ব্যক্তি

রাজনীতি

ড. কামালকে হত্যার পরিকল্পনা সংক্রান্ত ফোনালাপ ফাঁস

ফোন করা ব্যক্তিকে চেনেন না মন্টুনিজস্ব প্রতিবেদক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে হত্যার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন শওকত নামের জনৈক ব্যক্তি। মুঠোফোনে গণফোরামের মহাসচিব মোস্তফা মহসিন মন্টুকে বিষয়টি জানান ওই ব্যক্তি। তাদের সেই কথোপকথন ফাঁস হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরালও হয়েছে। তবে ফাঁস হওয়া ফোনালাপের সেই জনৈক শওকতকে চেনেন না বলে দাবি করেছেন মন্টু।

মোস্তফা মহসিন মন্টু সাংবাদিকদের বলেন, ফোনটি পেয়ে আমি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। ২০ মিনিটের মধ্যে বিষয়টি আমি ড. কামাল স্যারকে জানাই। যেটা তাৎক্ষণিক করার দরকার ছিল, তা করেছি। তবে জনৈক শওকতকে আমি চিনিও না, জানিও না, কখনো দেখিওনি।

ফোনালাপের মধ্যে নিজের অংশের কথার ব্যাপারে স্বীকার করে গণফোরামের মহাসচিব মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন- ‘জি, কথা যেহেতু হয়েছে। অস্বীকারের কিছু নেই। সেখানে আমার কথা ছিল।’

কথোপকথনে শওকত নামের ওই ব্যক্তি মোস্তফা মহসিন মন্টুকে ড. কামালের নিরাপত্তা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। ওই ব্যক্তির দাবি, ‘আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির যদি টাকা-পয়সায় কাজ না হয়, তাহলে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে ড. কামাল হোসেনকে হত্যা করা হতে পারে।’

কথিত শওকত বলেন, ‘আমি এটা লন্ডন থেকে খবর পেয়েছি, তারেক রহমানের খুব ক্লোজ, আমাদের সিলেটি, কারণ, আপনি জানেন যে লন্ডনে বিএনপির সব নেতাকর্মী হচ্ছে সিলেটের। সে তারেক রহমানের খুব কাছের এবং দুবাই থেকে অলরেডি সাতজন কিলার (পাকিস্তানি নাগরিক) বাংলাদেশে ঢুকেছে। লাস্ট মোমেন্টে তারা চেষ্টা করবে, ইভেন ইলেকশনের আগের দিন হলেও ড. কামাল হোসেনকে হত্যা করা হবে।’

শওকত বলেন, ‘আমি ডিসি, ডিবিকে বলছি। তারা ইয়ে নিচ্ছে। ... আপনাদের কালকে অপমান করেছে ড. কামাল হোসেন, ওই অজুহাতে আপনারা ওনাকে নিয়ে আসেন, কারণ ওনাকে সেভ করা হচ্ছে এখন আপনাদের দায়িত্ব।’

এদিকে গতকাল বুধবার দুপুরে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আনোয়ার হোসেন, সহকারী কমিশনার (এসি) শিবলী নোমান এবং মতিঝিল থানার ওসি সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে পুলিশের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কিছু না জানালেও বলা হয়, নরমাল ডিউটির অংশ হিসেবে তারা ড. কামালের নিরাপত্তা-সংক্রান্ত কোনো অবজারভেশন আছে কি না তা জানার জন্য যান।

‘নিরাপত্তা প্রসঙ্গে’ ড. কামালের চেম্বারে পুলিশ : জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে দেখা করে তার নিরাপত্তার খোঁজখবর নিয়েছে পুলিশের একটি প্রতিনিধিদল। গতকাল বুধবার ড. কামালের মতিঝিল চেম্বারে মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তা তার নিরাপত্তাসংক্রান্ত কোনো অবজারভেশন আছে কি না, তা জানার জন্য যান। ড. কামাল হোসেনও জানিয়েছেন, পুলিশ তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। প্রয়োজন অনুযায়ী তারা নিরাপত্তা দিতে চায়। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে যান পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) আনোয়ার হোসেন, সহকারী কমিশনার (এসি) শিবলী নোমান এবং মতিঝিল থানার ওসি।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর লতিফুল বারী হামিম গণমাধ্যমকে বলেন, ওই তিন পুলিশ কর্মকর্তা ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে এসে ডিএমপি কমিশনার তার (ড. কামাল) সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন বলে আমাদের জানিয়ে গেছেন।

এ বিষয়ে ডিসি আনোয়ার হোসেন বলেন, নরমাল ডিউটির অংশ হিসেবে আমরা এখানে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছি তার নিরাপত্তাসংক্রান্ত কোনো অবজারভেশন আছে কি না তা জানার জন্য। এটা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।

কী বিষয়ে কথা হলো? ডিএমপি কমিশনার আসার কথা ছিল- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে তার সঙ্গে আপনারা কথা বলতে পারেন। কী আলোচনা হয়েছে সে ব্যাপারে ডিটেলস কিছু বলতে পারব না। আমি নরমাল ডিউটির অংশ হিসেবে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছি। দ্যাটস অল।

পরে ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ আমার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। প্রয়োজন অনুযায়ী আমাকে তারা নিরাপত্তা দিতে চায়।

ড. কামাল হোসেন বলেন, পুলিশ কর্মকর্তারা আমাকে বলেছেন তারা আমার নিরাপত্তার ব্যাপারে খুবই উদ্বিগ্ন। কোনো কিছু প্রয়োজন হলে চেম্বারে ও বাসায় তারা ব্যবস্থা নেবেন। দরকার হলে গাড়ির সঙ্গেও নিরাপত্তা দেবেন। এ ছাড়া কিছু বলেনি।

তিনি বলেন, ডিএমপি কমিশনারের আসার কথা থাকলেও কাজে আটকা পড়ায় এবং যানজটের কারণে আসতে পারেননি বলে দুঃখপ্রকাশ করেছেন।

গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন ভবনে সিইসি কেএম নুরুল হুদা ও ড. কামাল হোসেনের মধ্যে অপ্রীতিকর ও উত্তপ্ত তর্কবিতর্ক হয়। সেটা পুলিশের ভূমিকাকে কেন্দ্র করেই হয়েছে বলে খবরে প্রকাশ। তবে গতকাল পুলিশ এই ইস্যুতে নাকি ফোনালাপ ফাঁসের পরে তার চেম্বারে গিয়েছিল তা পরিষ্কার নয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads