• মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ৭ জৈষ্ঠ ১৪২৮
প্রচারে গুরুত্ব পাচ্ছে আবাসন সঙ্কট

ঢাকসু নির্বাচনে প্রগতিশীল ছাত্র-ঐক্য পরিষদের প্রচার মিছিল

ছবি : বাংলাদেশের খবর

রাজনীতি

প্রচারে গুরুত্ব পাচ্ছে আবাসন সঙ্কট

  • ঢাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ০৬ মার্চ ২০১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পুরোদমে প্রচারণা শুরু করেছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনী প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও হলগুলো। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন প্রার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সঙ্কট নিরসনসহ নানা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি দিচ্ছেন তারা।

গতকাল মঙ্গলবার ছিল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণার দ্বিতীয় দিন। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, অপরাজেয় বাংলা, কার্জন হল, হাকিম চত্বর, মধুর ক্যান্টিন ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে প্রচারণা চালান ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, বামজোট, কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ, স্বতন্ত্র জোট, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ, ছাত্র মৈত্রী ও বিভিন্ন পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

ভোটারদের নজর কাড়তে চালান নানা প্রচেষ্টা। তবে নির্বাচনের আচরণবিধি মানছেন না কোনো প্যানেলের প্রার্থীরাই। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, বামপন্থি ছাত্রসংগঠন ও সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদসহ কোনো কোনো স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধেও উঠেছে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ। আচরণবিধি লঙ্ঘন করেই প্রার্থীরা নিজেদের তুলে ধরেন ভোটারদের কাছে। ভোটারদের হাতে হাতে দেওয়া হয় লিফলেট। বিভিন্ন পয়েন্টে লাগানো হয়েছে পোস্টার। পাশাপাশি অনলাইনেও চলছে প্রচার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বিভিন্ন পোস্টার প্রচার করছেন তারা।

শিক্ষার্থীদের আবাসন সঙ্কট, মানসম্মত খাবার, পরিবহন সঙ্কট, বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তচিন্তার পরিবেশ বাড়ানোর মতো বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে ভোট চাইছেন প্রার্থীরা। কেউ কেউ লিফলেটের মাধ্যমে এসব তুলে ধরছেন। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও নিজের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

ছাত্রলীগের নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলে এজিএস প্রার্থী সাদ্দাম হোসাইন বলেন, আমাদের প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সব সময়ই রয়েছি আমরা। তাদের কথাবার্তা শুনছি। এটা চলমান প্রক্রিয়া। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। তাই নতুন করে প্রমাণের কিছু নেই।

ছাত্রদল প্যানেলে ভিপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে আমরা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। তবে দীর্ঘদিন নিয়ন্ত্রণের পরিবেশ বিরাজ করার কারণে তাদের মধ্যে এক ধরনের ভয় কাজ করছে এখনো। আর আমাদের ব্যালট নম্বর ৩ তারিখেই দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্বাচনে আমাদের প্রচারণায় বাধাগ্রস্ত করার জন্য আর ছাত্রলীগকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার জন্য ব্যালট নম্বর দেয়নি। বিভিন্ন জায়গায় আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর আগেই তারা প্রচার করছে।

বামজোট প্যানেলে ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী বলেন, প্রচারণা অনেক ভালো চলছে। গানের মিছিল বের করেছিলাম। মিছিল থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে লিফলেট দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি আজ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমানতালে প্রচারণা চলছে। তবে অনলাইন প্রচারণার চেয়ে আমরা ‘ম্যান টু ম্যান’ প্রচারণাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।

কোটা সংস্কার আন্দোলন প্যানেলের এজিএস প্রার্থী ফারুক হাসান বলেন, আমাদের প্রচারণা ভালোই চলছে। শিক্ষার্থীদের সাড়া ভালোই পাচ্ছি। তারা সবাই মনেপ্রাণে আমাদের চায়।

ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্পূরক ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলে একযোগে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। তালিকা অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৪৩ হাজার ২৫৫ জন।

ঢাবি প্রশাসন জানায়, এবারের নির্বাচনে ১২০ জন ভোটারের জন্য একটি করে বুথ থাকবে। এই হিসাব অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে মোট ৩৬০টি বুথ থাকবে।

ডাকসু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ১০টি প্যানেল। তার মধ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বামজোট, জাসদ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী, ছাত্রমৈত্রী জোট, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন, কোটা সংস্কার আন্দোলন, স্বতন্ত্র জোট, স্বাধিকার আন্দোলন। এ ছাড়া স্বতন্ত্রভাবে অনেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে নিজেদের পছন্দের যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ ২৮ বছর পর আদালতের নির্দেশে ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads