গ্রুপ পর্বেই সমাধি আফ্রিকানদের স্বপ্ন। এই মহাদেশের কোনো দলই জায়গা করে নিতে পারেনি চলমান রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে। এশিয়া থেকে জাপান ও কনকাকাফ অঞ্চল থেকে শুধু মেক্সিকো পেয়েছিল নকআউট পর্বের টিকেট। পরশু রাতে দুই দলই বিদায় নিয়েছে। হিসাবটা এখন ল্যাটিন বনাম ইউরোপের। মানে বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত যে দলগুলো টিকে আছে, তা ইউরোপ ও ল্যাটিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে উঠে আসা।
অথচ এশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করা জাপানের সামনে সুযোগ ছিল ইতিহাস গড়ার। প্রথমবারের মতো শেষ আটে জায়গা করে নেওয়ার। কিন্তু হয়নি শেষ মিনিটের ভাগ্য বিড়ম্বনায়। বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে দুই গোলে লিড নেওয়া জাপান শেষ ২৫ মিনিটে হজম করে তিন গোল। বিদায়ঘণ্টা বাজে ফেয়ার প্লের সুবাদে নকআউটে যাওয়া সূর্যোদয়ের দেশটির। এরই সঙ্গে রাশিয়া বিশ্বকাপে শূন্যতা ভর করে এশিয়া মহাদেশের।
একই অবস্থা উত্তর আমেরিকা মহাদেশেরও। একমাত্র দল হিসাবে নকআউট পর্বে আসা মেক্সিকো পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের কাছে ২-০ গোলে হেরে বিদায় নিয়েছে। টানা সপ্তমবার নকআউট পর্ব থেকে বিদায় এলত্রিওদের। অন্যদিকে টানা সপ্তমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে সেলেসাও শিবির। পরশু দুটি নকআউট পর্ব শেষ হওয়ার পরই চূড়ান্ত হয়েছে ল্যাটিন বনাম ইউরোপ মহারণের।
নকআউট পর্বে ইউরোপের মোট ১০টি দেশ নাম লেখায়। সেখানে ল্যাটিন আমেরিকার চারটি, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকার একটি করে দেশ। নকআউট পর্ব থেকে ল্যাটিন আমেরিকার আর্জেন্টিনা বিদায় নিয়েছে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে গত রাতে হারলে বিদায় নেবে কলম্বিয়াও। তবে নকআউট পর্বের অপর ম্যাচ সুইডেন ও সুইজারল্যান্ডের। এখান থেকে একটি ইউরোপের দেশ যাচ্ছে কোয়ার্টার ফাইনালে তা অনুমিত। ফলে হিসাব পরিষ্কার, কোয়ার্টার ফাইনালে ইউরোপের পাঁচটি দেশ যাচ্ছে নিশ্চিত, কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে জিতলে ইংল্যান্ডও যাবে, সংখ্যাটা হবে তখন ছয়। ল্যাটিন আমেরিকা থেকে দুই দল থাকবে টিকে, উরুগুয়ে ও ব্রাজিল।
দীর্ঘদিন পর এবার অল ইউরোপিয়ান ফাইনালের সম্ভাবনাও দেখছেন অনেকে। আর সেটা হবে কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে উরুগুয়ে ও বেলজিয়ামের কাছে ব্রাজিল হারলে। তার আগে কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে নকআউট পর্বে জিততে হবে ইংল্যান্ডকে। আর তাতেই হবে অল ইউরোপিয়ান বিশ্বকাপ ফাইনাল।
কিন্তু তাহলে তো হেক্সা মিশন ব্যর্থ হবে নেইমারের ব্রাজিলের। দুরন্ত গতিতে এগোনো সেলেসাও শিবির কি তা হতে দেবে? তবে ফাইনালে উঠতে হলে ব্রাজিলকে পাড়ি দিতে হবে কঠিন পথ। কোয়ার্টারে টপকাতে হবে বেলজিয়ামকে, সেমিতে উরুগুয়ে কিংবা ফ্রান্স। তবে এটা নিশ্চিত ফাইনালে গেলে ব্রাজিলকে আটকানো অসম্ভব। কারণ প্রতিপক্ষ হিসাবে যারা ওপাশ থেকে আসবে, তারা ধারে-ভারে অনেক পিছিয়েই থাকবে নেইমারদের থেকে।
আর তাই অনেকে এবার দেখছেন ইউরোপ বনাম ল্যাটিনের ফাইনাল। বিশ্বকাপের শেষ রোমাঞ্চটা কেমন হবে, তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ১৫ জুলাই পর্যন্ত।