• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
এমপিওভুক্তির জন্য বরাদ্দ নেই হতাশ শিক্ষকরা

এক হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় হবে

সংগৃহীত ছবি

শিক্ষা

এক হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় হবে

এমপিওভুক্তির জন্য বরাদ্দ নেই হতাশ শিক্ষকরা

  • অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য
  • প্রকাশিত ০৮ জুন ২০১৮

যে শিক্ষকরা গত আট বছর ধরে এমপিওভুক্তির জন্য আন্দোলন চালিয়েছেন, তাদের সে দাবি পূরণে প্রস্তাবিত বাজেটে কোনো অর্থ বরাদ্দ নেই। ফলে আশাহত হয়েছেন শিক্ষকরা। যদিও সংসদের আগের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। উল্লেখ্য, গত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শিক্ষকরা অনশনে বসেন। একপর্যায়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপিওভুক্তির আশ্বাস দিলেও শিক্ষকরা কর্মসূচি চালিয়ে যান। অনশনের ১২ দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার একান্ত সচিব এসে আশ্বাস দিলে শিক্ষকরা ঘরে ফেরেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম নাহিদ কোনো মন্তব্য করতে চাননি। অর্থ বরাদ্দ না রাখায় নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির কী হবে- এরও কোনো জবাব দেননি তিনি। তবে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, বিশেষ থোক বরাদ্দের মাধ্যমে অর্থ এনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে।

গতকাল ঘোষিত বাজেটে শিক্ষা উন্নয়ন খাতে ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত- যা এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত বছর শিক্ষায় বাজেট ছিল ৫০ হাজার ৪৩৯ কোটি টাকা। এ বছর বরাদ্দ বেড়েছে ২ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা। তবে শতকরা হিসাবে এবার শিক্ষাখাতে বাজেট কমেছে। গত বছর যেখানে বরাদ্দ ছিল ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ, সেখানে এবার দেওয়া হয়েছে ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ।

এ বিষয়ে গতকাল শিক্ষামন্ত্রী কিছু না বললেও গত ৩ জুন ব্যানবেইসে অনুষ্ঠিত এক আলোচনায়  তিনি বলেন, বাজেটের আকার বড় হওয়ায় অর্থ বাড়লেও শতকরা হিসাবে কমেছে। এ দিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী জানান, শিক্ষার মোট ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকার মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে ২২ হাজার ৪৬৬ কোটি, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে ২৪ হাজার ৮৮৮ এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগে ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এসব অর্থে বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে এক হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন, উপবৃত্তি, পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, স্কুল ফিডিং কার্যক্রম ইত্যাদির পরিধি বাড়ানো হবে। পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উন্নত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথক ওয়াশ ব্লকসহ ৬৫ হাজার শ্রেণিকক্ষ, ১০ হাজার ৫০০ শিক্ষক কক্ষ, ৫ হাজার বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও ৩০ হাজার খেলার সামগ্রী বিতরণ করা হবে।

লিখিত বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার প্রসারে আমরা ইতোমধ্যে অনেকখানি অগ্রসর হয়েছি। এখন মনোযোগ দিতে চাই জীবনমানে মৌলিক পরিবর্তন ও শিক্ষার উন্নত পরিবেশ গঠনে।

মুহিত বলেন, প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সব ইউনিয়ন ও কয়েকটি শহরে আইসিটি বেজড কমিউনিটি লার্নিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে। ৬৪টি জেলায় ৬৪টি জীবিকায়ন ও জীবনব্যাপী শিখনকেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা আছে। আমরা শিক্ষকদের জন্য চলমান প্রশিক্ষণের বাইরে ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে ইংরেজিতে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ছাত্রদের জন্য গণিত অলিম্পিয়াডের কৌশল প্রয়োগ করে গণিতভীতি দূর করার উদ্যোগ নিয়েছি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ খাতে সারা দেশে ১০০টি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নির্মাণ করা হবে। ৩৮৯টি উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৪টি বিভাগীয় শহরে ৪টি মহিলা পলিটেকনিক, প্রতিটি বিভাগীয় শহরে একটি করে গার্লস টেকনিক্যাল স্কুল, ২৩টি জেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন এবং সব বিভাগে একটি করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৩৫টি মডেল মাদরাসা স্থাপন ও ৫২টি মাদরাসায় অনার্স কোর্স চালু করেছি এবং ৬৫৩টি মাদরাসায় মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কর্মসংস্থানবান্ধব কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার সুযোগ বাড়ানোর ওপরও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads