Logo

আন্তর্জাতিক

হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত আদালতে স্থগিত

Icon

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫, ১৯:০৫

হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত আদালতে স্থগিত

বিদেশি শিক্ষার্থীরা এখন হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হতে পারবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের নেওয়া ওই ভর্তি নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত আদালত সাময়িকভাবে স্থগিত করে দিয়েছে। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হার্ভার্ড আদালতের শরণাপন্ন হলে এ রায় দেন বিচারক। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এই তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আদালত ট্রাম্প প্রশাসনের এক নতুন নীতি সাময়িকভাবে স্থগিত করেন। নীতিটিতে বলা হয়েছিল, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি আর বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে না। এই নীতির বিরুদ্ধে হার্ভার্ড অভিযোগ করে যে, এটি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক চক্রান্তের অংশ। কারণ, হার্ভার্ড তাদের ‘শিক্ষাগত স্বাধীনতা’ বিসর্জন দিতে রাজি হয়নি।

আদালতের এই আদেশে হাজার হাজার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী স্বস্তি পেয়েছেন। যদি এই আদেশ কার্যকর না হতো, তবে অনেককেই অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তর হতে হতো। হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের এই নীতিকে মার্কিন সংবিধান ও ফেডারেল আইনের ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেছে।

তাদের মতে, এতে ইউনিভার্সিটি এবং ৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী ও ভিসাধারীর ওপর ‘তাৎক্ষণিক এবং ধ্বংসাত্মক প্রভাব’ পড়তে পারত।

শুক্রবার বোস্টনের ফেডারেল আদালতে দাখিল করা মামলায় হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি বলে, ‘আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ছাড়া হার্ভার্ড, হার্ভার্ড থাকে না।’

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রায় ৬,৮০০ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী রয়েছে, যা মোট শিক্ষার্থীর ২৭ শতাংশ।

এই আইনি লড়াই ট্রাম্প প্রশাসন ও হার্ভার্ডের মধ্যকার দীর্ঘদিনের উত্তেজনার সর্বশেষ উদাহরণ। ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, সংবাদমাধ্যম, আইন সংস্থা, এমনকি আদালতকেও তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডার সঙ্গে মানিয়ে চলার জন্য চাপ দিয়ে আসছে। রিপাবলিকান দল দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে যে, হার্ভার্ডসহ অভিজাত ইউনিভার্সিটিগুলো বামপন্থী পক্ষপাতিত্ব করে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ মামলাটি করে ঠিক এক দিন পরেই ‘ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’ (ডিএইচএস) ঘোষণা দেয় যে, তারা হার্ভার্ডের স্টুডেন্ট ভিসা কর্মসূচির অধিকার বাতিল করছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমেই বিদেশি শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে থেকে পড়াশোনা করতে পারতেন।

হার্ভার্ডের প্রেসিডেন্ট অ্যালান গারবার এক খোলা চিঠিতে এই পদক্ষেপকে ‘অবৈধ ও অযৌক্তিক’ বলে তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, ‘সরকার একের পর এক শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়ে আমাদের একাডেমিক স্বাধীনতাকে আঘাত করছে।’

শুধু হার্ভার্ড নয়, ট্রাম্প প্রশাসন দেশের অন্যান্য শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও চাপের মুখে রেখেছে। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন ফিলিস্তিনপন্থী কর্মীদের দমন করে এবং রক্ষণশীল মতের প্রতি বৈষম্য দূর করে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ডজনখানেক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু হয়েছে, যার মধ্যে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিও মতো প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠান ট্রাম্প প্রশাসনের দাবির মুখে কিছুটা ছাড়ও দিয়েছে।

এপ্রিলে হোয়াইট হাউস হার্ভার্ডের জন্য বরাদ্দ ২.২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অর্থায়ন স্থগিত করে। সেই সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিশ্ববিদ্যালয়ের করছাড় সুবিধা বাতিলের হুমকিও দেন। ওই অর্থায়ন বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও হার্ভার্ড আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিল।

ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের কেমব্রিজে অবস্থিত ৩৯৮ বছরের পুরোনো হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম এবং সর্বাধিক খ্যাতিসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি।

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর