আল্লাহর কাছে একমাত্র মনোনীত ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। আর এ মনোনীত ধর্মের দ্বিতীয় ভিত্তিমূল বা স্তম্ভ হলো সালাত বা নামাজ। খুঁটি ছাড়া যেমন ঘর হয় না, তদ্রূপ নামাজ ছাড়াও দ্বীন পরিপূর্ণ হয় না। প্রাপ্তবয়স্ক নারী ও পুরুষ সবার জন্যই নামাজ পালন করা ফরজ। নামাজ আদায় করা আল্লাহর হুকুম। ইসলামে নামাজের গুরুত্ব অত্যধিক। যে ব্যক্তি নামাজের ফরজিয়তকে অস্বীকার করবে সে অস্বীকারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
প্রিয় নবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘বান্দা ও কুফরির মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে নামাজ’ (মুসলিম, মিশকাত)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক সালাত শব্দটিকে ৮৩ বার ব্যবহার করেছেন। অন্য কোনো ইবাদতের বিষয়ে আল্লাহপাক এতবার কোনো শব্দ ব্যবহার করেননি। এতেই বোঝা যায় আল্লাহপাকের কাছে নামাজের গুরুত্ব কত বেশি।
নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘আমার বান্দাদেরকে বলে দিন যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে, তারা নামাজ কায়েম রাখুক এবং আমার দেওয়া রিজিক থেকে গোপনে ও প্রকাশ্যে ব্যয় করুক ওইদিন আসার আগে, যেদিন কোনো বেচাকেনা নেই এবং বন্ধুত্বও নেই’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত-৩১)।
নামাজ হলো মুমিনদের বৈশিষ্ট্য। আল্লাহপাক মুমিনদের প্রশংসা করে ইরশাদ করেছেন, ‘তারা সালাত কায়েম করে’ (বাকারা-০৩)। যারা নামাজের বিষয়ে অবহেলা প্রদর্শন করে তাদের নিন্দা করে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘তাদের পর আসল এমন এক অসৎ বংশধর যারা নামাজ বিনষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করল। সুতরাং শিগগিরই তারা জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে’ (মারইয়াম-৫৯)।
ইসলামের যে অংশ সর্বশেষ বিদায় নেবে তা হচ্ছে এই নামাজ।
নামাজ যখন বিদায় নেবে তখন ইসলামের আর কোনো অংশই অবশিষ্ট থাকবে না। রসুল (সা.) বলেন, ‘ইসলামের বন্ধন সব এক এক করে ছিঁড়ে যাবে। যখন একটি বন্ধন ছিঁড়ে যাবে মানুষ তার পরবর্তী বন্ধনটি আঁকড়ে ধরবে।
সর্বপ্রথম ইসলামী শাসন বিলুপ্ত হবে আর সর্বশেষ উঠে যাবে সালাত’ (ইবনে হিব্বান)। নামাজ কবিরা গুনাহ ছাড়া সব পাপ মোচন করে। রসুল (সা.) বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং এক জুমা থেকে অপর জুমা মধ্যবর্তী সময়ে কৃত গুনাহসমূহের কাফফারা। যতক্ষণ না সে কবিরা গুনাহে লিপ্ত না হয়’ (মুসলিম)।
রসুল (সা.) একটি দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, ‘যদি তোমাদের কারো বাড়ির সামনে একটি নদী থাকে আর সে দৈনিক পাঁচবার তাতে গোসল করে, তবে কি তার শরীরে ময়লা থাকতে পারে?’ সাহাবিরা বললেন, না। রসুল (সা.) বললেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের দৃষ্টান্তও তদ্রূপ। আল্লাহপাক নামাজের মাধ্যমে গুনাহ মোচন করে দেন’ (মুসলিম-৪৯৭)।