• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
 অগ্রাধিকার শিল্পের স্বীকৃতি পাচ্ছে চারকোল

পাবনার একটি চারকোল কারখানায় কাজ করছেন শ্রমিকেরা

সংগৃহীত ছবি

বাণিজ্য

অগ্রাধিকার শিল্পের স্বীকৃতি পাচ্ছে চারকোল

  • কাওসার আলম
  • প্রকাশিত ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাংলাদেশে সম্ভাবনাময় হিসেবে অগ্রাধিকার শিল্প খাতের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে চারকোল শিল্প। অগ্রাধিকার শিল্প খাত হিসেবে চারকোল শিল্পকে জাতীয় শিল্পনীতি ২০১৬-তে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদের নির্বাহী কমিটির (ইসিএনসিআইডি) বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর কমিটির আহ্বায়ক ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠকে অনুমোদন পাওয়ার পর পরবর্তী সময়ে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। অগ্রাধিকার খাতে অন্তর্ভুক্ত হলে এ খাত শুল্ক ও প্রণোদনা সুবিধা পাবে। শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

চারকোল হলো অ্যাকটিভেটেড কার্বন। এটি পাটখড়ি থেকে উৎপাদিত একটি পণ্য। পাটখড়িকে পুড়িয়ে যে কার্বন উৎপন্ন হয়, তাকে চারকোল বলে। চারকোল দিয়ে ফেসওয়াশ, ফটোকপিয়ারের কালি, ওয়াটার পিউরিফাইং মেশিনের অতি প্রয়োজনীয় ক্যান্ডেল, বিষ ধ্বংসকারী ওষুধ, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, দাঁত পরিষ্কার করার ওষুধ প্রভৃতি তৈরি করা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আমাদের দেশে ২০১২ সাল থেকে চারকোল উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাণিজ্যিকভাবে চারকোল উৎপাদন হচ্ছে। প্রতিবছর বাংলাদেশে প্রায় ৩০ লাখ টন পাটকাঠি উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে যদি অর্ধেক পাটকাঠি চারকোল উৎপাদনে সঠিকভাবে ব্যবহার করা যায়, তবে প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ টন চারকোল উৎপাদন সম্ভব। একই সঙ্গে রফতানি করে এ খাত থেকে বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া সারা দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলেও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

প্রসঙ্গত, জাতীয় শিল্পনীতি ২০১৬-তে উচ্চ অগ্রাধিকার খাত ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত হিসেবে বেশ কিছু শিল্প খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কৃষি, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, তৈরি পোশাক শিল্পসহ সাতটি খাতকে উচ্চ অগ্রাধিকার খাত হিসেবে এবং প্লাস্টিক, জাহাজ নির্মাণ, পর্যটনসহ ২৪টি শিল্প খাতকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে জাতীয় শিল্পনীতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে প্রয়োজন অনুসারে তালিকা হালনাগাদ করার সুযোগ রাখা হয়েছে। নতুন করে গার্মেন্ট অ্যাকসেসরিস, প্যাকেজিং এবং নারিকেল ছোবড়ার আঁঁশনির্ভর শিল্পকে অগ্রাধিকার শিল্প হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শিল্পমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত ইসিএনসিআইডির ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

যদিও শিল্পনীতিতে বলা হয়েছে, অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত খাত হিসেবে কোনো শিল্পকে স্বীকৃতি দেবে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদ (এনসিআইডি)। এ ছাড়া শিল্পনীতিতে বিদ্যমান অগ্রাধিকার খাতের পর্যালোচনা ও তালিকা হালনাগাদ করাসহ প্রদেয় প্রনোদণাগুলোর ধরন ও শর্ত নির্ধারণ করার এখতিয়ারও এনসিআইডির। প্রতি ছয় মাসে এনসিআইডির বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু নানা কারণে সে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ফলে অগ্রাধিকার খাতের বিষয়ে শিল্পমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত ইসিএনসিআইডির বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (আস ও নীতি-১) ইয়াসমিন সুলতানা বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ইসিএনসিআইডির সভাপতি হিসেবে শিল্পমন্ত্রী অগ্রাধিকার শিল্প খাতে কোন কোন শিল্প অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন সেটি কার্যকর করা হচ্ছে। শিল্পমন্ত্রীর ঘোষণার পর সেটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। নানা কারণে এনসিআইডির বৈঠক না হলেও ইসিএনসিআইডির বৈঠকের সিদ্ধান্ত সরকারের শীর্ষ মহলকে অবহিত করা হয়। এদিকে অগ্রাধিকার শিল্প খাতের স্বীকৃতি পেলে চারকোল শিল্প কী ধরনের সুবিধা পাবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাধারণত অগ্রাধিকার খাতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া শিল্প শুল্ক ও রফতানিতে প্রণোদনা সুবিধা পেয়ে থাকে। তবে সুবিধার বিষয়টি এনবিআর নির্ধারণ করে থাকে। শিল্প মন্ত্রণালয় শুধু অগ্রাধিকার খাতের স্বীকৃতি দিয়ে থাকে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads