• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
রফতানি আয় বেড়েছে ৬.৬৬%

তৈরি পোশাক খাতের রফতানি বাড়ায় আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে

সংরক্ষিত ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

রফতানি আয় বেড়েছে ৬.৬৬%

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৬ জুন ২০১৮

এক বছরের ব্যবধানে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রফতানি আয় বেড়েছে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রফতানি আয় ছিল ৩ হাজার ১৬২ কোটি ২৮ লাখ ডলার। আর চলতি অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি থেকে আয় হয়েছে ৩ হাজার ৩৭২ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশের রফতানি আয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ। মূলত তৈরি পোশাক খাতের রফতানি বাড়ায় সামগ্রিক রফতানি আয়ে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) তৈরি পোশাক খাতে রফতানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছিল, এ খাত থেকে তার চেয়ে বেশি রফতানি আয় হয়েছে। এ সময় তৈরি পোশাক খাত থেকে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৭২৪ কোটি ৪১ লাখ ডলার। আর এ সময় এ খাত থেকে রফতানি আয় হয়েছে ২ হাজার ৮১২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে তৈরি পোশাক রফতানি থেকে দেশের আয় হয় ২ হাজার ৫৬২ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। এতে এক বছরের ব্যবধানে এ খাতে রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

তৈরি পোশাক শিল্পের মধ্যে নিটওয়্যার খাতে রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি বেশি হয়েছে। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে নিটওয়্যার পণ্য রফতানি থেকে আয় এসেছে এক হাজার ৩৯৪ কোটি ডলার। আগের বছরের একই সময়ে এ খাতের রফতানি আয় ছিল এক হাজার ২৫০ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। এক বছরে এ খাতের রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। একই সময় ওভেন গার্মেন্ট পণ্য রফতানি থেকে আয় হয়েছে ১ হাজার ৪১৮ কোটি ৮৫ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে দেশের মোট রফতানি আয়ের ৮৩ দশমিক ৪ শতাংশ এসেছে তৈরি পোশাক খাত থেকে।

প্রাথমিক ও উৎপাদনমুখী শিল্প- এ দুই ভাগে রফতানি আয়ের পরিসংখ্যান প্রকাশ করে ইপিবি। এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে প্রাথমিক পণ্যে রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এ সময় প্রাথমিক পণ্যে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রফতানি আয় এসেছে। একই সময়ে উৎপাদনমুখী শিল্পে রফতানি আয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ।

প্রাথমিক পণ্য হিসেবে বাংলাদেশ থেকে হিমায়িত খাদ্য, মাছ ও কৃষিপণ্য রফতানি হয়। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে হিমায়িত খাদ্য ও মাছ থেকে রফতানি আয় হয়েছে ৪৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪৭ কোটি ২৮ লাখ ডলার। এ সময় চিংড়ির রফতানি কমে যাওয়ায় পুরো খাতটির আয় কমেছে ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। তবে এ সময় কৃষিপণ্যের রফতানি আয় বেড়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ১১ মাসে কৃষিপণ্য রফতানি থেকে বাংলাদেশের আয় হয়েছিল ৫১ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। আর চলতি অর্থবছরের একই সময়ে এ খাত থেকে রফতানি আয় হয়েছে ৬০ কোটি ৯০ লাখ ডলার। মূলত শুকনো খাবার, মসলা ও তামাকের রফতানি বাড়ায় কৃষিপণ্য খাতে আয় বেড়েছে। বিপরীতে চায়ের রফতানি কমেছে ব্যাপক হারে। এক বছরের ব্যবধানে চায়ের রফতানি আয় কমেছে ৪১ শতাংশ।

উৎপাদনমুখী শিল্পে রফতানি আয়ে তৈরি পোশাকের পরের অবস্থানে রয়েছে পাট ও পাটজাত পণ্য খাত। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে এ খাত থেকে রফতানি আয় এসেছে ৯৬ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৯০ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। এ সময় এ খাত থেকে রফতানি আয় বেড়েছে প্রায় ৭ শতাংশ।

টেরি টাওয়েলসহ বিশেষ বস্ত্র খাত থেকে চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে রফতানি আয় হয়েছে ১০ কোটি ২৯ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে হোম টেক্সটাইল পণ্য রফতানি থেকে আয় হয়েছে ৮২ কোটি ৩০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৭৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

চলতি অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে রফতানি আয় কমেছে। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে এ খাত থেকে আয় হয়েছে ৯৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা আগের বছরে ছিল ১১২ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। এক বছরের ব্যবধানে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য থেকে রফতানি আয় কমেছে ১১ শতাংশ। তবে এ সময় চামড়ার জুতায় রফতানি আয় বেড়েছে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে সামগ্রিক রফতানি আয় বাড়লেও প্রকৌশল পণ্যে রফতানি আয় কমেছে ৫০ শতাংশের বেশি। এ ছাড়া এক বছরের ব্যবধানে জাহাজ, নৌকা ও ভাসমান অবকাঠামো রফতানি আয় কমেছে ৫৪ শতাংশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads