• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
১৩ সেপ্টেম্বর চালু হচ্ছে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল

সংগৃহীত ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

১৩ সেপ্টেম্বর চালু হচ্ছে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

চার বছরের সংস্কারকাজ শেষে দেশে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পাওয়ার পর হোটেলটির পরিচালনা পর্ষদ আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলস গ্রুপের কাছে হোটেলটি হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড শুরুর আগে পরীক্ষামূলকভাবে ওই দিন থেকে হোটেলটি চালু করবে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলস গ্রুপ। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড এ হোটেলটির মালিকানায় রয়েছে।

প্রসঙ্গত, রাজধানীর শাহবাগে প্রায় সাড়ে চার একর জমির ওপর অবস্থিত এই হোটেলটি। ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলস গ্রুপ ১৯৬৬ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত এ হোটেলের ব্যবস্থাপনায় ছিল। তারা আবার ফেরার জন্য ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে চুক্তিবদ্ধ হয়। প্রায় ৩৪ বছর পর পাঁচ দশকের পুরনো এ হোটেলটি সংস্কারের পর এবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা হিসেবে যাত্রা শুরু করবে। সংস্কারকাজ সম্পন্ন করে নতুন রূপ দেওয়া হয়েছে প্রায় ৫২ বছরের পুরনো এই হোটেলকে।

১৯৮৩ সালে ইন্টারকন্টিনেন্টাল বিদায় নেওয়ার পর হোটেলটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে এসেছিল শেরাটন। প্রায় ২৮ বছর পর ২০১১ সালের এপ্রিলে শেরাটন চলে যায়। শেরাটন চলে যাওয়ার পর এটি সরকারি উদ্যোগে ‘রূপসী বাংলা’ নাম নিয়ে চালু হয় বাংলাদেশের নানা গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই হোটেল। সরকারের মালিকানার এই হোটেলটি তখন পরিচালনার দায়িত্বে ছিল বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড।

রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ হোটেলটি ১৯৮১ সালে সম্প্রসারণ এবং বিভিন্ন সময়ে কিছু কিছু সংস্কার হলেও আন্তর্জাতিক ‘পাঁচ তারকা’ মানে গড়ে তোলার জন্য অনেকদিন ধরেই বৈশ্বিক হোটেল পরিচালনা কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে তাগাদা আসছিল।

সংস্কারকাজের জন্য ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর বন্ধ করে দেওয়া হয় রূপসী বাংলা হোটেল। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে একাধিকবার তা পিছিয়ে ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ে সংস্কারকাজ সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সংস্কারকাজ শুরুর প্রায় চার বছর পর নতুন রূপে এ হোটেলটি চালু হচ্ছে।

চীনা প্রতিষ্ঠান নরিনকো ইন্টারন্যাশনাল ও দেশীয় প্রতিষ্ঠান চারুতা প্রাইভেট লিমিটেড যৌথভাবে এ কাজের ঠিকাদার। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে সংস্কারকাজে নিয়োজিত এক শ্রমিকের মৃত্যুর পর প্রতিষ্ঠান দুটির কর্তাব্যক্তিদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলাও হয়। এর আগে রূপসী বাংলার সংস্কারকাজের অগ্রগতি না হওয়ার জন্য অসন্তোষ প্রকাশ করে সংসদীয় কমিটি। তখন সংসদীয় কমিটিকে জানানো হয়েছিল, নকশার ত্রুটির কারণে সংস্কারকাজে দেরি হচ্ছে। হোটেলের সংস্কারকাজ দফায় দফায় পেছানোর কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নির্ধারিত হারে জরিমানা আদায়ের সুপারিশ করেছিল সংসদীয় কমিটি।

হোটেলটির সংস্কারকাজের তত্ত্বাবধান করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল, যাতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা। ব্যাংকঋণের মাধ্যমে বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড এই অর্থের সংস্থান করে। দীর্ঘদিন ধরেই এই হোটেল লাভজনকভাবে পরিচালিত ছিল। ২০১০, ২০১১, ২০১২ ও ২০১৩ সালে এটির করপরবর্তী মুনাফা ছিল যথাক্রমে সাড়ে ৩৪ কোটি, ৪০ কোটি, সাড়ে ৪৬ কোটি ও ১৯ কোটি টাকার বেশি।

বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড বলছে, ফাইভ স্টার হোটেলের আন্তর্জাতিক মান রক্ষার জন্য সংস্কারের মাধ্যমে হোটেলের কক্ষগুলো বড় করা হয়েছে। ফলে কক্ষসংখ্যা কমে হবে ২৩০টি। এ ছাড়া আসবাব, সুইমিং পুল, জিমনেশিয়ামের আধুনিকায়নসহ অন্যান্য সেবাও যুক্ত করা হচ্ছে।

হোটেলটির সংস্কারকাজের জন্য ২০১৪ সালের পর থেকে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি পরিচালনা পর্ষদ। সর্বশেষ ২০১৪ সালের জন্য শেয়ারহোল্ডাররা ১৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ পেয়েছিলেন। এ কোম্পানির মোট শেয়ারের ৯৯ দশমিক ৬৮ শতাংশের মালিকানা রয়েছে সরকারের হাতে। ২০১৭-১৮ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেডের লোকসান হয়েছে ৩৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads