• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
হঠাৎ দাম বাড়ল ডালের

পাইকারি বাজারে বাড়ছে কয়েক পদের ডালের দাম

সংগৃহীত ছবি

অর্থ ও বাণিজ্য

হঠাৎ দাম বাড়ল ডালের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

হঠাৎ করেই গত দুই সপ্তাহ ধরে পাইকারি বাজারে বাড়ছে কয়েক পদের ডালের দাম। যদিও এর আগে দীর্ঘদিন নিম্নমুখী ছিল পণ্যটির বাজার। আর পণ্যটির দাম বেশ কমে যাওয়ায় লোকসান কাটাতে বাজারে সিন্ডিকেট করে ডালের দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাইকারি বাজারের বেশ কিছু ব্যবসায়ীর।

খুচরা ও পাইকারি বাজারের ডাল ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ার জন্য দুষছেন মজুতদারদের। এ মজুতদাররা হচ্ছে আমদানিকারক ও বড় ডালের মিল মালিকরা।

বিক্রেতাদের ভাষ্য, বিশ্ববাজারে দামের কোনো হেরফের না হলেও আগের লোকসান কাটিয়ে উঠতে ডালের দাম বাড়িয়েছে আমদানিকারক ও মিলাররা। 

এদিকে দাম কম থাকায় বাড়তি সরবরাহ চাপে ডাল আমদানি কমেছে। এমন পরিস্থিতিতে মজুতদারদের বাড়তি দামে ডাল বিক্রি সহজ হচ্ছে। এসব ডাল কম দামে রোজার মধ্যে ও এর পরবর্তী সময়ে আমদানি করা হবে বলে জানান বিক্রেতারা।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম ও রাজধানীর বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ডালের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মুগ ও ছোলার দাম। পাইকারি পর্যায়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) মুগ ডালের দাম বেড়েছে প্রায় ৬০০ টাকা। বর্তমানে পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৪০০ টাকায়, যা দুই সপ্তাহ আগে ছিল ২ হাজার ৮০০ টাকায়।

অপরদিকে বাজারে প্রতি মণ ছোলা ১ হাজার ৭০০ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার ২০০ টাকায় উঠেছে। আর একই সময়ের ব্যবধানে প্রতি মণে প্রায় ১৫০ টাকা দাম বেড়েছে সাদা মটরের। গতকাল প্রতি মণ সাদা মটর পাইকারি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা, যা আগে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।

এদিকে প্রধান রফতানিকারক দেশ অস্ট্রেলিয়া ও কানাডায় ডাল জাতীয় শস্যের উৎপাদন ক্রমেই বাড়ছে। ফলে বিশ্ববাজারে গত বছর থেকেই টানা কমছে ডালজাতীয় অধিকাংশ পণ্যের দাম। এর প্রভাবে দেশেও দীর্ঘদিন ধরেই ডালের বাজার নিম্নমুখী ছিল। সঙ্গে গত রোজায় দেশে প্রচুর ছোলা ও ডাল আমদানি হয়েছে, যা চাহিদা না থাকায় ব্যবসায়ীদের গুদামে মজুত রয়ে গেছে।

বাংলাদেশ পাইকারি ডাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শফি মাহমুদ বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, কয়েক দিনে বাজারে মসুর ছাড়া অন্যান্য ডালের দাম বেড়েছে। কিছু ব্যবসায়ী তাদের মজুত ডাল বাড়তি দামে বিক্রি করছে এমন কথা আমরাও শুনেছি। আর বিক্রেতারা লোকসানের ভয়ে সরাসরি আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। সে কারণে মিলার ও বড় আমদানিকারকরা এমন সুযোগ পাচ্ছে।

এদিকে দেশের অন্যতম বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি সোলায়মান বাদশা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দীর্ঘদিন ডালের দামে মন্দাভাব বিরাজ করায় দেশেও বেশিরভাগ ডালের দাম কম ছিল। এরমধ্যে মসুর ও মটর গত কয়েক বছরের তুলনায় সর্বনিম্ন দামে বিক্রি হয়েছে। গত রোজায়ও বাড়েনি ডালের দাম।

তিনি বলেন, এ সময়ে দেশের অনেক ডাল ব্যবসায়ীকে বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হয়েছে। তারা এখন লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। একে অপরের যোগসাজশে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে।

তথ্য বলছে, দেশে বছরে বিভিন্ন ধরনের ডালের চাহিদা প্রায় ১২ লাখ টন। এর মধ্যে উৎপাদন হয় আড়াই থেকে তিন লাখ টন। বাকি চাহিদা পূরণে ভারত, নেপাল, তুরস্ক, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে বছরে গড়ে ২ হাজার কোটি টাকার ডাল আমদানি হয়। বিশেষ করে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ছোলা, অ্যাঙ্কর ও মসুর ডালের সরবরাহ অনেকটা আমদানি-নির্ভর। আর বাজারে দামও নির্ভর করে আমদানির ওপর।

রাজধানীর বেগম বাজারের ডাল ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশের উৎপাদন যেমনই হোক, ডালের দাম নির্ভর করে আমদানিকারকদের  বেঁধে দেওয়া দামের ওপরে। আর সেই দামের কিছু কম-বেশি করে দেশি পদের ডালের দাম নির্ধারণ হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads