খুলনায় শেখ হাসিনাসহ ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
খুলনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ১২:২২
ছবি : সংগৃহীত
খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ২০২৩ সালের ১৯ মে বিএনপি’র দলীয় কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন খুলনা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন। মামলার আবেদনে খুলনার ৬ সাংবাদিক ও একাধিক ব্যবসায়ীর নাম রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে মহানগর স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ১ এর বিচারক মো. শরীফ হোসেন হায়দার এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী গনেশ কুমার দাস।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলার তদন্তের দায়িত্ব খুলনা পিবিআই পুলিশ সুপারকে দিয়েছেন। একইসাথে আগামী দুই মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে শফিকুল আলম তুহিনের মামলার আবেদন জমা দেয় তার আইনজীবী সৈয়দ শামীম হাসান।
বাদীপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, আদালত আবেদন গ্রহণ করেছেন, মামলায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ও হত্যাচেষ্টাসহ ১০টি ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার আর্জিতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৯ মে খুলনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির উদ্যোগে কর্মীসভা চলছিল। এতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলালসহ দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সশস্ত্র অবস্থায় সেখানে হামলা চালায়। বল প্রয়োগে সভা বন্ধ করে দেওয়া হয়। নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে গুলিবিদ্ধ ও স্প্লিন্টারের আঘাতে বিএনপির অন্তত ৫০ নেতা–কর্মী আহত হন।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এবং শেখ সোহেল উদ্দিন, শেখ রুবেল, শেখ বেলাল উদ্দিন বাবু। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, সাধারণ সম্পাদক এম ডি বাবুল রানা, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শফিকুর রহমান পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক শেখ শাহজালাল সুজন।
এ ছাড়া খুলনা রেঞ্জের সাবেক অতিরিক্ত ডিআইজি জয়দেব চৌধুরী, সাবেক অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সোনালী সেন, সহকারী কমিশনার গোপীনাথ কাঞ্জিলাল, খুলনা সদর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুনসহ পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের আরও অনেক নেতাকে মামলার আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের তালিকায় খুলনার ৬ জন গণমাধ্যমকর্মীর নামও আছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী। যে ৬ জন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তারা হলেন, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন মিন্টু, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সাহেব আলী, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি ছায়েদুজ্জামান সম্রাট, দৈনিক দেশ সংযোগ পত্রিকার সম্পাদক ও খুলনা মহানগর আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক মুন্সী মাহবুবুল আলম সোহাগ, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিয়াজ এবং সুনীল দাশ।
ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যে রয়েছেন খুলনা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মোস্তফা জেসান ভুট্টো এবং নৌ পরিবহন মালিক গ্রুপের সাবেক পরিচালক ইকবাল খান বাবুল।
তিতাস চক্রবর্তী/এএ

