ক্যাশ বাক্স নিয়ে পালানোর সময় কুকুরের সাথে চোরের কামড়াকামড়ি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৫, ১০:১২

সুকুমার রায়ের ‘লিচু চোর’ কবিতার কথা নিশ্চয়ই অনেকের মনে আছে, যেখানে বাড়ির পোষ্য কুকুর চোরেদের একেবারে তছনছ করে দেয়। ঠিক এমনই একটি ঘটনা ঘটল পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং বাজারে। তবে এখানে লিচু চুরি নয়, এক চোর দোকানের ক্যাশবাক্স চুরি করতে এসেছিল। তাকে বাধা দিয়েছিল পোষ্য কুকুর ‘গজা’। পরে চোর ও কুকুরের মধ্যে লড়াই বাধে। এক পর্যায়ে কামড়াকামড়িও হয়। কুকুর চোরকে কামড়ে দিলে চোরও কুকুরকে কামড়ে দেন। অনেকক্ষণ লড়াই চলতে থাকে।
ঘটনাটি ঘটেছিল বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি)। তখন বাজার বন্ধ ছিল। দোকানগুলোর মধ্যে নির্জনতা বিরাজ করছিল। সৌমেন রায়ের দোকানটি সেই সময় বন্ধ ছিল। সৌমেন বিকেল তিনটায় গান শুনতে শুনতে মধ্যাহ্নভোজ করছিলেন। এ সময় এক চোর দোকানের পিছন দিকের লোহার জাল কেটে ঢুকে পড়ে এবং ক্যাশবাক্স ভেঙে নগদ টাকা চুরি করে পালানোর চেষ্টা করে।
তবে দোকানের পোষ্য কুকুর ‘গজা’ চোরের আচরণ বুঝতে পেরে তৎক্ষণাৎ প্রতিরোধ শুরু করে। কুকুরটি চোরকে আক্রমণ করে এবং তাকে কামড়ে ধরে। কিন্তু চোরও সহজে হার মানেনি, সে কুকুরকে পালানোর সময় বেধড়ক মারধরও করে। তবে ‘গজা’ও ছাড়ার পাত্র ছিল না, সে চোরের পায়ে কামড় বসিয়ে দেয়।
চোরের সাহস আবারও চরমে পৌঁছেছিল, সে পায়ের কামড় সরাতে গজার পায়ে কামড় দেয়। কিন্তু সৌমেন রায় দ্রুত নিচে এসে পুরো দৃশ্যটি দেখে ফেলেন। চোর পালানোর জন্য দেওয়াল টপকে বাইরে চলে যায়। সৌমেন তার পিছনে ধাওয়া করলেও চোরকে ধরতে পারেননি। পরে সৌমেন ক্যানিং থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার পর সৌমেন রায় কুকুর ‘গজা’-কে স্থানীয় পশু চিকিৎসক হাসপাতালে নিয়ে যান। কুকুরের কামড়ের দাগ পায়ে দেখা যাওয়ায় পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে এবং চোরকে গ্রেপ্তার করে। ধৃত চোরের নাম তুহিন দাস, যার বাড়ি ক্যানিংয়ের কার্গিল পাড়ায়।
এদিকে, গজার সাহসিকতা ক্যানিং বাজারের মানুষের মধ্যে প্রশংসার ঝড় তুলেছে। সৌমেন রায় বলেন, ‘লকডাউনের সময় আমি এই কুকুরছানাকে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে নিয়ে এসেছিলাম। এখন সে আমাদের নিত্যসঙ্গী। গজা দোকান খোলা থাকলে ক্যাশ কাউন্টারের পাশে বসে পাহারা দেয়। তাকে দেখে এখন আমরা অনেক বেশি আস্থাশীল।’
এমজে