ঢাবি ক্যাম্পাসের রাস্তার বেহাল দশা, উদাসীন প্রশাসন

মুহাইমিনুল ইসলাম
প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৯
-67c29278f0585.jpg)
এক দশকের বেশি সময় ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হল থেকে হলপাড়া ও লেকচার থিয়েটার থেকে মধুর ক্যান্টিনগামী রাস্তা। বছরের পর বছর অতিবাহিত হয়, প্রশাসন পরিবর্তন হয়, কিন্তু অপরিবর্তনীয় রয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক। যেখানে-সেখানে খানাখন্দে ভরপুর এসব রাস্তায় চলাচল করতে শিক্ষার্থীদের পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এ বিষয়ে উদাসীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন,অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
দীর্ঘদিনের এই বেহাল অবস্থা নিরসনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সবুজায়ন ধ্বংস করে মল চত্বরের মতো প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসকারী উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদ্যোগী হলেও দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দে ভরপুর এসব রাস্তা সংস্কারে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙ্গা রাস্তাগুলোতে চলাফেরা করার পাশাপাশি আমাদের ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যও নষ্ট হচ্ছে। এই দুইটা রাস্তা এবং ঢাবির যত রাস্তা এরকম রয়েছে সেগুলোসহ যত কনস্ট্রাকশন আছে সবগুলো মেরামত করার জন্য প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানাই তা না হলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থী হাসান আলী বাংলাদেশের খবরকে বলেন, আমি এই রাস্তা দিয়ে নিয়মিত যাওয়া-আসা করি। বিজয় একাত্তর হলের সামনে থেকে মলচত্বর পর্যন্ত রাস্তাটুকু এতটাই ব্যবহারের অনুপযোগী যে, এটুকুতে বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় হাড়গোড় ভেঙ্গে যাওয়ার জোগাড় হয়ে যায়। এইটুকু রাস্তা প্রশাসন চাইলেই ঠিক করতে পারে। কতগুলো হলের শিক্ষার্থী এটা দিয়ে যাওয়া আসা করে। কিন্তু প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে কোনো কিছুই হচ্ছে না। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে এই রাস্তাটা সংস্কার করা।
জিয়াউর রহমান হলের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সৌরভ বলেন, হল পাড়ার রাস্তা খুবই ভাঙা এবং এটার জন্য সবচেয়ে সমস্যায় পড়ি বাড়িতে যাওয়া -আসা করার সময়। কারণ তখন ব্যাগ বেশি থাকে। ভাঙা রাস্তার জন্য ওইদিকে অনেক সময় রিক্সাও পাওয়া যায় না। আবার,যখন কেউ অসুস্থ থাকে তাকে নিয়ে হল পাড়ার রাস্তাটা অতিক্রম করতে অনেক সময় লাগে। আমি ফাস্ট ইয়ার থেকেই এই রাস্তাটা ভাঙা দেখছি কিন্তু এখনো কোনো সমাধান হয়নি। যেখানে হল পাড়ায় ছেলেদের ৫টি হল, বলা হয়ে থাকে এটিই বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্র। কিন্তু, প্রশাসনের যেন দীর্ঘদিন দেখেও দেখছে না। দ্রুত এই রাস্তার সংস্কার চাই।
বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থী শোয়েব ইসলাম বলেন, ‘হলপাড়ার এই রাস্তাটা অনেকদিন ধরেই খারাপ। রিক্সাতে যেতে গেলে তো ঝাঁকিতে অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। এই ব্যাপারে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন যত দ্রুত সম্ভব রাস্তা মেরামত করা হয়।’
কবি জসীম উদ্দিন হলের শিক্ষার্থী খন্দকার আজিজুল হক বলেন, ‘আমাদের হল পাড়া ও মধুর ক্যান্টিনগামী রাস্তা দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল দশায় পড়ে আছে অথচ এগুলো ক্যাম্পাসের অন্যতম ব্যস্ততম পথ। হাঁটতে গিয়ে যেমন আমাদের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় তেমনি সাইকেল চালাতেও সমস্যা হচ্ছে, কেননা এতে টায়ার পাংচারের মতো ঘটনা হরহামেশাই ঘটছে। তাই রাস্তাটা খুব দ্রুত মেরামতের দাবি জানাই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, ক্যাম্পাসের ভেতরের যে রাস্তা এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নাকি সিটি কর্পোরেশনের এটা নিয়ে আমার কনফিউশন আছে! আমি নিজেও এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি। এই সমস্যাগুলো আমরাও ফেস করি। আমরা এসব বিষয় নিয়ে ভাবি না, বিষয়টি এমন নয়। রাস্তা নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রম আমরা ধাপে ধাপে শুরু করবো।
এমএমআই/এমএইচএস