
ছবি : বাংলাদেশের খবর
সারাদেশে চলমান নারীর প্রতি সহিংসতা ও নিপীড়নের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাদদেশে পূর্বনির্ধারিত এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের (একাংশ) ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সঞ্চালনা করেন জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের (অডিটোরিয়াম) কর্মী ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মিথিলা বাউল।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, ‘আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর বৈষম্যের ব্যাপারটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার অংশ। জুলাই বিপ্লবের পরেও আমরা এ ধরনের মানসিকতা থেকে বের হতে পারিনি। পাবলিক প্লেসে ধূমপান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য নিষিদ্ধ হলেও নারীরাই শুধু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। পাবলিক প্লেসে আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও তার কি বাস্তবায়ন হচ্ছে? যদি হয়, সেটা ভালো কথা। তবে আমাদের উপদেষ্টা কথাগুলো আমাকে ভাবিয়েছে। বিষয়টিকে আইনিভাবেও ব্যবস্থা নেওয়া যেত।’
তাছাড়া তিনি সম্প্রতি ঢাকার মোহাম্মদপুরে দুজন নারীর সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে মব জাস্টিসের শিকার হওয়ারও প্রতিবাদ জানান।
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের (একাংশ) সভাপতি ফাইজা মেহজাবিন প্রিয়ন্তী বলেন, এ রাষ্ট্রব্যবস্থা ও পিতৃতান্ত্রিক সমাজ মেয়েদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে বরং বন্দিত্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। দেশে ধর্ষণ ও নিপীড়নের প্রতিকারে রাষ্ট্র বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, গত জুলাই আন্দোলনে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে মেয়েরা সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে অবস্থান নিয়ে অন্যদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। গত দুই-তিন দিনে মবের নামে নারীদের সঙ্গে যে সহিংস আচরণ করা হয়েছে, তা বন্ধ করে নারীর প্রতি সমান মর্যাদা নিশ্চিত করতে সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। আমরা প্রকাশ্যে ধূমপানের পক্ষে নই। কিন্তু এ ধরনের ঘটনায় রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন দ্বারা ব্যবস্থা নিতে হবে।
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক সাদমান অলিভ বলেন, প্রতিটি পাবলিক প্লেসে নারীরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যতই নিরাপত্তা থাকুক, দিনশেষে প্রতিটি ঘরে ঘরে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা না দিতে পারলে এ মানববন্ধনের উদ্দেশ্য কখনোই সফল হবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, পূর্ববর্তী সরকার বা যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে যখন কোনো নির্যাতন বা নিপীড়নের ঘটনা নিয়ে যাওয়া হয়, তারা শুধু দায় এড়ানো ছাড়া আর কিছু করে না। দেশে যেভাবে অরাজকতা চলছে, মবের নামে নারীদের হেনস্তা করা হচ্ছে, আমরা চাই নারীদের প্রতি এ অবমাননা ও বিদ্বেষ বন্ধ হোক।
আমানউল্লাহ খান/এমবি