• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

সোমালিয়ার শাবেলা অঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে পানি সংগ্রহ করছেন নারীরা

জীবন ধারা

জলবায়ু পরিবর্তনে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নারীরা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৮ মার্চ ২০১৮

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নারীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, বিভিন্ন গবেষণায় এমনটাই দেখা গেছে। এমনিতেই বেশিরভাগ সামাজিক পরিস্থিতিতে নারীরা পুরুষের তুলনায় অরক্ষিত অবস্থায় থাকেন। সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট যেকোনো ধরনের দুর্যোগ নারীকে আরো বেশি বিপদে ফেলে দেয়। খবর বিবিসি।

জাতিসংঘের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত মানুষের ৮০ শতাংশই নারী। সাধারণত দেখা যায়, পরিবারে নারীরা অন্য সদস্যদের খাবার তৈরি ও যত্নের দায়িত্বে থাকেন। তাই বন্যা বা খরায় সংসার চালিয়ে নেওয়া তাদের জন্য আরো কঠিন হয়ে পড়ে।

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মধ্য আফ্রিকার চাদ হ্রদের ৯০ শতাংশই বিলীন হয়ে গেছে। ফলে পানির চাহিদা মেটাতে ওই লেকের ওপর নির্ভর করা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জীবনও হয়ে উঠেছে বিপজ্জনক। যেহেতু পরিবারের সদস্যদের জন্য নারীরাই পানির জোগান দেন, সেহেতু পানি সংগ্রহ করতে তাদের এখন আরো দূরের পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। খরার সময় এখানকার পুরুষরা কাজের সন্ধানে অন্যত্র যান। তখন পুরো সমাজের মানুষের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকে নারীরা।

অ্যাসোসিয়েশন অব ইনডিজেনাস ওমেন অ্যান্ড পিপল অব চাদের (এএফপিএকটি) সমন্বয়ক হিনদৌ ওউমারৌ ইব্রাহিম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শুষ্ক ঋতু ক্রমেই লম্বা হচ্ছে। তাই পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য নারীদের আরো কঠোর পরিশ্রম করতে হচ্ছে। তারা আরো বেশি অরক্ষিত হয়ে পড়ছে। পানি আনা খুবই পরিশ্রমের কাজ। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শুধু প্রত্যন্ত এলাকার নয়, বৈশ্বিকভাবেই নারীরা দারিদ্র্যের মুখোমুখি হচ্ছেন এবং আর্থ-সামাজিক ক্ষমতায় আরো পিছিয়ে পড়ছেন।

২০০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানায় হ্যারিকেন ক্যাটারিনা আঘাত হানার পর বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নারীরা। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে ঝুঁকির মধ্যে আছেন, নিউ অর্লিন্সের মতো নিম্নভূমিতে অবস্থিত শহরগুলো। রাগেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওমেন্স অ্যন্ড জেন্ডার স্টাডিজের অধ্যাপক জ্যাকুলিন লিট বলেন, নিউ অর্লিন্স শহরের অর্ধেকের বেশি দরিদ্র পরিবারগুলোর প্রধান মা। এসব পরিবার কমিউনিটি নেটওয়ার্কগুলোর ওপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু ক্যাটরিনার পর বাস্তুচ্যুতির কারণে ওই নেটওয়ার্কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ওইসব নারী ও তাদের সন্তানরা বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।

উল্লেখ্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর জরুরি আশ্রয় কেন্দ্রগুলোয়ও নারীদের জন্য উপযোগী পরিবেশ পাওয়া যায় না। ক্যাটরিনার পর আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় নারীদের জন্য প্রয়োজনীয় স্যানিটারি পণ্য জোগাড় করা যায়নি। দেখা যায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর বাস্তুচ্যুত নারীরা যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের মতো ঘটনারও শিকার হন। ২০০৪ সালে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ভারতে সুনামির ছোবলে নারীরাই বেশি মারা গেছেন। এসব অঞ্চলে বেঁচে যাওয়া পুরুষ ও নারীর অনুপাত ছিল ৩ : ১।

 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads