Logo

ধর্ম

মা সন্তানকে কয় বছর পর্যন্ত দুধ পান করাতে পারবেন?

বেলায়েত হুসাইন

বেলায়েত হুসাইন

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ০৮:৩৩

মা সন্তানকে কয় বছর পর্যন্ত দুধ পান করাতে পারবেন?

সন্তানের জন্য মায়ের দুধ পান করা আল্লাহ তায়ালার বিরাট এক নেয়ামত। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুসারে—শিশুর জন্য মায়ের দুধের বিকল্প কোনো খাদ্য নেই। শিশুকে স্তন্যদান শিশুর জন্য যেমন উপকারী তদ্রূপ মায়ের জন্যও উপকারী।

মায়ের বুকের দুধ সন্তানের জন্য আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত খাবার। তাই মায়ের শারীরিক অসুস্থতা কিংবা এ ধরনের বিশেষ ওজর ও প্রতিবন্ধকতা না থাকলে মায়ের জন্য সন্তানকে বুকের দুধ থেকে বঞ্চিত করার সুযোগ নেই। মানে সন্তানকে দুধ খাওয়ানো মায়ের ওপর ওয়াজিব দায়িত্ব।

আর মা সন্তানের সর্বোচ্চ দুই বছর বয়স পর্যন্ত দুধ পান করাতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘মাতাগণ নিজেদের বাচ্চাদেরকে পূর্ণ দুই বছর স্তন্যদান করবে, যদি দুধ খাওয়ার পূর্ণ মেয়াদ সমাপ্ত করতে চায়।’ (সুরা  বাকারা, আয়াত : ২৩৩) 

তাফসীরবিদদের মতে—এ আয়াত থেকেই সন্তানকে দুধ পান করানো ওয়াজিবের বিষয়টি বোঝা যায় এবং আয়াতটি থেকে আরও বোঝা যায় যে, বিশেষ ওজর ছাড়া মায়ের জন্য স্তন্যদান থেকে বিরত থাকার কোনো অবকাশ নেই।

আমাদের সমাজে অনেকে মনে করেন যে, দুধ পান করানোর সর্বোচ্চ সময় আড়াই বছর। এটা ভুল। শুধু তাই নয়; অনেক মা তো সন্তানকে ৩-৪ বছরও দুধ খাওয়ান। আসলে সন্তান অনুর্ধ্ব দুই বছর মায়ের বুকের দুধ পান করতে পারবে। দুই বছরের বেশি বয়সী সন্তানকে দুধ পান করানো নাজায়েজ। উপরোক্ত আয়াতটিই এর দলিল। পাশাপাশি হাদিস শরিফে এসছে—আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, ‘মায়ের দুধ পানের সময় দুই বছরই।’ (সুনানে দারাকুতনী : ৪/১৭৪)

আবার অনেকে মনে করেন, শিশুর স্বাস্থ্যহানীর আশঙ্কা থাকলে কিংবা অন্য খাবারে অভ্যস্থ না হলে আড়াই বছর পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানোর সুয়োগ আছে। এ ধারণাও ভুল। শিশুকে দুই বছরের বেশি বুকের দুধ খাওয়ানোর কোনো সুযোগ নেই। শিশু অন্য খাবারে অভ্যস্ত না হলেও। আজকাল বাজারে শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি অনুপাতে বিভিন্ন কোম্পানির গুড়ো দুধ পাওয়া যায়। সুতরাং অন্য খাবারে অভ্যস্ত না হলেও তেমন অসুবিধা নেই।

দুই বছরের বেশি যেন বুকের দুধ খাওয়াতে না হয়—এ জন্য পূর্ব থেকেই শিশুকে অন্য খাবারে অভ্যস্ত করা উচিত এবং এক বছর আট-নয় মাস হলেই বুকের দুধ কমিয়ে দেওয়া উচিত। যেন যথাসময়ে দুধ ছাড়ানো শিশুর জন্য কষ্টের কারণ না হয়। আল্লাহ আমাদের সকলকে সহিহ জ্ঞান দান করেন। আমীন।

বিএইচ/

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর