• বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জৈষ্ঠ ১৪২৯
পাশেই চীন সীমান্তে , তবুও নিরাপদ নেপাল

কোয়ারেন্টিন জোন তৈরী করেছে নেপালের সেনাবাহিনী

সংগৃহীত ছবি

এশিয়া

পাশেই চীন সীমান্তে , তবুও নিরাপদ নেপাল

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৮ মার্চ ২০২০

বিশ্ব করোনা ভাইরাসের আক্রমণে বিপর্যস্ত। আতঙ্ক বিরাজ করছে মানুষে মধ্যে। আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২৭ হাজার ৩৫৯ জন। ২ শতাধিক দেশে ৫ লাখ ৯৭ হাজার ১৮৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

তবে নেপালে এখন পর্যন্ত কোন মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। আজ শনিবার পর্যন্ত দেশটিতে নভেল করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত মোট রোগী পাওয়া গেছে মাত্র চার জন।

নেপালিদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা অনেক বেশি বলে অনেকেই মনে করেন। তারপরও করোনা সংক্রমণের এ তথ্য নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে খোদ দেশটির অভ্যন্তরেই।

এ নিয়ে দেশটির স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন এপিডেমিওলজি অ্যান্ড ডিজিজ কন্ট্রোল ডিভিশনের সাবেক পরিচালক বাবুরাম মারাসিনির বক্তব্য, কভিড-১৯-এর ঘটনা কম থাকার বিষয়ে গোটা বিশ্বই এখন নেপাল নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।

এর আগেও চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া দুই মহামারী—২০০২ সালের সার্স এবং এইচ১এন১ (এক ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা) সংক্রমণের সময়েও নেপালে মৃত্যুর তালিকায় লিপিবদ্ধ হয়েছিল মাত্র তিনজনের নাম।

ইমিউনোলজি অ্যান্ড বায়োটেকনোলজির পোস্ট গ্র্যাজুয়েট সমীর দীক্ষিতের বিশ্বাস, মানুষ ভয়াবহ পর্যায়ে আক্রান্ত না হওয়ার কারণ হচ্ছে, নেপালে ভাইরাসটির স্ট্রেইন তুলনামূলক দুর্বল  অথবা নেপালিদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা অনেক বেশি।

তবে নেপালিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার তত্ত্বকে সরাসরি বাতিল করে দিয়েছেন দেশটির পাতান হাসপাতালের চিকিত্সক বুদ্ধ বাসনিয়াত। তিনি মনে করেন, আমরা যে কোনোভাবে রোগ প্রতিরোধী, তা এ মুহূর্তে ভাবাটাই বোকামি। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

নেপালিয়ান টাইমস একটি ঘটনা উল্লেখ করে, নেপালের প্রথম কভিড-১৯-এ আক্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন ৩২ বছর বয়সী এক শিক্ষার্থী। চীনের উহান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে পড়াশোনা করছিলেন তিনি।

সম্পূর্ণ সুস্থ এ ব্যক্তির অন্য কোনো বড় অসুখে (কোমরবিডিটি) ভোগার তেমন কোনো ইতিহাসও নেই। গত ৩ জানুয়ারি প্রথম তার শরীরে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।

এর ছয়দিন পর নিজ দেশে ফিরে যান ওই শিক্ষার্থী। কাঠমান্ডুর সুকরারাজ ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ হসপিটালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন ১৩ জানুয়ারি। সে সময় তার দেহের তাপমাত্রা খুব একটা বেশি ছিল না। এরপর আস্তে আস্তে তার অবস্থা খারাপ হয়।

দ্রুত ওই শিক্ষার্থীকে আইসোলেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। বেশকিছু অ্যান্টিবায়োটিক ও থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা শুরু হয় তার। ভর্তির ৬ ঘণ্টা পর তার মধ্যে মৃদু শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। ১৬ জানুয়ারির মধ্যে তার পরিস্থিতির উন্নতি হতে থাকে।  এরপর ২৯ ও ৩১ জানুয়ারি ফলোআপ পরীক্ষা চালিয়ে তার শরীরে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া যায়নি।

নেপালের প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর সংক্রমণ খুব একটা মারাত্মক কিছু ছিল না। পূর্ণ পরিচর্যা ও যথোপযুক্ত চিকিৎসার পরও তাকে সুস্থ করতে সময় লেগেছে ১৩ দিন।

করোনায় আক্রান্ত এমন সন্দেহভাজনদের পরীক্ষাকালে প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরিধান করছেন চিকিৎসকরা- নেপালি টাইমস

নেপালে করোনা ভাইরাস বা কভিড-১৯-এ যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে মারাত্মক পরিস্থিতিতে গেছেন মাত্র ১০-১৫ শতাংশ। কমসংখ্যক পরীক্ষা করানোর বিষয়টি একটি বড় ব্যাপার হতে পারে তবে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলে, বয়স্কদের মধ্যে মারাত্মক অসুস্থ রোগীর সংখ্যা ভয়াবহ হারে বেড়ে যেত।

এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৯ সালের ইনফ্লুয়েঞ্জ এ এইচ১এন১ মহামারীর সময়ে বিশ্বব্যাপী আক্রান্ত হয়েছে ৭০ থেকে ১৪০ কোটি মানুষ। মৃত্যু হয়েছে দেড় লাখ থেকে ছয় লাখ মানুষের।

অন্যদিকে নেপালে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১৭৩ জন। মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। এর আগে ২০০৩ সালের সার্স মহামারীর সময়েও নেপালে এ রোগে কেউ আক্রান্ত হওয়ার বা মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads