• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
গরু-মহিষের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক!

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

গরু-মহিষের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক!

  • প্রকাশিত ১৯ ডিসেম্বর ২০২১

মুক্তাদির আহমেদ, গোদাগাড়ী (রাজশাহী)

সীমান্তে চোরাচালান ঠেকাতে গোদাগাড়ীসহ বিভিন্ন চর অঞ্চলের সীমান্তবর্তী এলাকায় গরু বা মহিষের বাচ্চা জন্ম নিলেই বাধ্যতামূলকভাবে করতে হবে নিবন্ধন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানে কাছে এ নিবন্ধন করতে হয়। নিজের কাছেও রাখতে হয় এ সংক্রান্ত একটি খাতা। খাতায় নিবন্ধনের পুরনো বাধ্যতামূলক এ নিয়ম মূলত সীমান্তবর্তী এলাকায় গরু-মহিষের অবৈধ চোরাচালান ঠেকাতে করতে হয়।

বিজিবি সূত্র জানায়, খাতায় নিবন্ধনের নিয়মটি অনেক পুরনো একটি বিষয়। মূলত সীমান্তবর্তী এলাকায় গরু-মহিষের অবৈধ চোরাচালান রোধে এ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়। যা বাধ্যতামূলক। এতে একটি সীমান্তবর্তী এলাকা বা ইউনিয়নের ভেতর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে গরু-মহিষের হিসাব রাখা যায়।

গোদাগাড়ী উপজেলার আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের সূত্রে জানা গেছে, এ ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে চার হাজার বাড়ি আছে। প্রতিটি বাড়িতেই কমপক্ষে দুটি ও গড়ে পাঁচ থেকে সাতটি করে গরু-মহিষ পশু আছে। সে হিসেবে পুরো ইউনিয়নে প্রায় ২২ থেকে ২৩ হাজার গরু-মহিষ পশু আছে। এসব পশুর হিসাব আছে আষাড়িয়াদহ বিজিবির দুটি ক্যাম্পেও। একটি ডিএমসি বিওপি ক্যাম্প ও আরেকটি সাহেব নগর বিওপি ক্যাম্প।

সাহেব নগর বিওপি ক্যাম্পের সহকারী ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার আব্বাস উদ্দিন বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় গরু-মহিষের চোরাচালান হয় অনেক। এ কারণে গরু-মহিষের সঠিক হিসেব রাখার জন্য রেজিস্ট্রার খাতায় পুরো ইউনিয়নের সংখ্যাটি সংরক্ষণ করা হয়। একটি আমাদের ক্যাম্পে থাকে, আরেকটি থাকে ইউনিয়ন পরিষদে। আরো একটি খাতা থাকে পশু মালিকের কাছে। কেউ গরু-মহিষ ক্রয় অথবা বিক্রয় করলে এ হিসাব রাখা হয়। এমনকি কারও বাসায় নতুন কোনো গরুর জন্ম নিলেও সেটি বিজিবি ক্যাম্প ও ইউনিয়ন পরিষদের রেজিস্ট্রার খাতায় সংযোজন করতে হয়। তিনি বলেন, কেউ বাইরের গরু-মহিষ কিনে আনলে সেটিও বিজিবি এবং ইউনিয়ন পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করা লাগবে। আবার কেউ তার গরু বিক্রি করতে চাইলে সেটিও জানাতে হবে। এ ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি ছাড়পত্র দেওয়া হয়। সেটি আমাদের কাছে নিয়ে আসলে আমরা ওই ছাড়পত্রের পরিপ্রেক্ষিতে গরু-মহিষের সংখ্যাটি বাদ দিয়ে দেই। কেনার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা।

চরমাঝারদিয়াড় এলাকার বাসিন্দা রুবেল বলেন, এখানে গরু পালতে হলে বিজিবির কাছে থাকা নিবন্ধন বা রেজিস্ট্রার খাতায় তোলা লাগে। এর জন্য কোনো টাকা লাগে না। তবে নিবন্ধন না করলে সেটি অবৈধ গরু হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই বাছুর জন্ম নিলে সেটিও নিবন্ধন করিয়ে নিই।

আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সানাউল্লাহ বলেন, অনেক আগে থেকেই এ নিয়ম চলছে। তবে ২০১৭-১৮ সাল থেকে ব্যাপারটি বেশ কড়াভাবে দেখছে বিজিবি। আমরা ছাড়পত্র দিলেও মোট হিসাব আমাদের কাছে নেই। বিজিবির কাছে পুরো ইউনিয়নের হিসাব আছে। তারা জানে কোন বাড়িতে কয়টা গরু আছে। তিনি বলেন, ক্রয়-বিক্রয়ের ছাড়পত্র ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দিলেও তা বিজিবির রেজিস্ট্রার খাতায় তোলা লাগে। যে ছাড়পত্র দেওয়া হয় তাতে চেয়ারম্যান, একজন মেম্বার ও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডারের সই লাগে। এরপর কেউ সেই পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে। এ ক্ষেত্রে পশুর মালিককে ক্যাম্পে তার গরু-মহিষ টেনে নিয়ে আসা লাগে।

রাজশাহীর বিজিবি অধিনায়ক সাব্বির আহম্মেদ বলেন, গরু-মহিষের জন্য সীমান্তবর্তী বিওপি ক্যাম্পগুলোতে একটি রেজিস্ট্রার খাতা মেনটেইন করা হয়। এটি স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার ও ক্যাম্প কমান্ডারদের সমন্বয়ে হয়ে থাকে। মূলত চর এলাকায় কী পরিমাণ গরু আছে, সেটির একটি হিসেব বিজিবির থাকে। তা নাহলে সীমান্তে গরু চোরাচালান রোধ সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads