কঙ্গোয় রহস্যময় রোগে ৫৩ জনের মৃত্যু, দেশজুড়ে আতঙ্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০২৫, ১২:৫১

ছবি : সংগৃহীত
আফ্রিকার দেশ কঙ্গোয় রহস্যজনক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। অজানা এই রোগে এখন পর্যন্ত ৫৩ জন মারা গেছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, রোগের লক্ষণ প্রকাশের পর মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই রোগীদের মৃত্যু হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তোলেছে।
গত ২১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৪১৯ জন এই প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে বেশিভাগই বলোকো ও বুমা শহরের বাসিন্দা। এদের মধ্যে জ্বর, বমি, অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ, ডায়রিয়া, তীব্র তৃষ্ণা এবং শরীর ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রোগটি এতটাই মারাত্মক যে, সংক্রমণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অনেক রোগী মারা যাচ্ছেন। ফলে চিকিৎসার যথেষ্ট সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বলোকো শহরে তিনটি শিশু বাদুড়ের মাংস খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে দু’দিনের মধ্যে মারা যায়। এরপর থেকেই শহরটিতে রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। তবে বাদুড় থেকেই সংক্রমণ হয়েছে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কঙ্গোর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি রোগীর মধ্যে জ্বর, ঠান্ডা লাগা, ডায়রিয়া এবং তীব্র শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। এই রোগের প্রকৃতি এখনো অজানা থাকলেও বিশেষজ্ঞরা একে ‘হেমোরেজিক ফিভার’ জাতীয় সংক্রমণ বলে ধারণা করছেন। তবে পরিচিত ভাইরাসগুলোর সঙ্গে এর মিল না পাওয়ায় এই রোগকে ‘ক্রাইং ডিজিজ’ নামে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এটি হয়তো নতুন কোনো ভাইরাস, অথবা পরিচিত ভাইরাসের নতুন রূপ হতে পারে। পশুপাখির শরীর থেকে ভাইরাস মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার প্রক্রিয়াকে ‘জুনোটিক ট্রান্সফার’ বলা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফ্রিকায় এ ধরনের সংক্রমণ বেড়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৯৭৬ সালে কঙ্গো ও সুদানে প্রথম ইবোলা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল, যা কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় ৭০০ মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এই নতুন রোগও ইবোলার মতো ভয়াবহ মহামারিতে রূপ নিতে পারে।
সূত্র : আনন্দবাজার অনলাইন
এটিআর/