• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
মাশরাফিদের চোখে শিরোপার স্বপ্ন

হাতের আঙুলে চিড় ধরার আশঙ্কা নিয়েও ফাইনাল ম্যাচ খেলবেন মাশরাফি

সংগৃহীত ছবি

ক্রিকেট

বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল আজ

মাশরাফিদের চোখে শিরোপার স্বপ্ন

  • মোস্তফা তারিক আল বান্না
  • প্রকাশিত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মাত্র দু’বছরের ব্যবধানে ফের এশিয়া কাপ ক্রিকেট আসরের ফাইনালে উঠেছে দারুণ উজ্জীবিত বাংলাদেশ দল। প্রতিপক্ষও সেই ভারত। ২০১৬ সালের বৃষ্টিবিঘ্নিত ফাইনালে হারলেও এবার ট্রফি নিয়েই দেশে ফিরতে চায় বাংলাদেশ দল। সাকিব-তামিমহীন বাংলাদেশ অনেকটা ভাঙাচোরা দল নিয়ে যেভাবে ফাইনালে উঠেছে, তা অবশ্যই কৃতিত্বের স্বাক্ষর বহন করে। এদিন নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে শিরোপা জেতাটা অসম্ভব কিছু নয়।

আজ শুক্রবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে লড়বে দু’বারের রানার্সআপ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৫টায় মাঠে গড়াবে শিরোপা নির্ধারণী এই ম্যাচ।

বাংলাদেশ ও ভারত এবার লড়বে নিজেদের মধ্যকার ৩৫তম ম্যাচে। ৩৪ বারের মোকাবেলায় সর্বশেষ তিন ম্যাচসহ ভারতের জয় ২৮টি। বিপরীতে বাংলাদেশ জিতেছে ৫টিতে। একটি ম্যাচ হয়েছে পরিত্যক্ত। এই পরিসংখ্যানকে সামনে আনছে না বাংলাদেশ। তাই তো ভারতের বিপক্ষে ভালো করারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ নামে পরিচিত মাশরাফি। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি ভারত খুবই শক্তিশালী দল। সেখানে আমাদের দলে নেই সাকিব-তামিম। তবে আমি আশাবাদী, শুক্রবার রোহিত বাহিনীর বিপক্ষে শিরোপা জেতার লক্ষ্যে নিজেদের সেরাটা প্রদর্শন করবে ছেলেরা।’

মাশরাফির ডান হাতের আঙুলের যে অবস্থা, তাতে চিড় ধরার সম্ভাবনা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত যদি তেমন কিছুও হয়ে থাকে, তারপরও এ ডান হাতি পেসার এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা থেকে পিছপা হবেন না। তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, ‘সাকিব ভাঙা আঙুল নিয়ে এতগুলো ম্যাচ খেলে গেল, আমি একটা ফাইনাল খেলতে পারব না?’ যেখানে অধিনায়কের চোখে এতটা আত্মবিশ্বাস, সেখানে বাকিরা তো জয়ের স্বপ্ন নিয়েই ফাইনালে খেলবেন। মাশরাফির ক্যারিয়ারের শেষ এশিয়া কাপ এটা। তাই দলের সতীর্থরা তাকে শিরোপা উপহার দিতে নিজেদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত থাকবেন, সেই আশা করাটা নিশ্চয়ই অমূলক নয়।

উইকেটকিপার কাম ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলেছেন, ‘আমরা ফাইনাল খেলার স্বপ্ন নিয়ে এশিয়া কাপ খেলতে এসেছিলাম। ফাইনালে উঠেছি। লক্ষ্য এখন সেরাটা খেলার, তাহলে ভারতকে হারানো সম্ভব। এটা আমরা আগেও করেছি, হয়তো আমরা তাদের ধারাবাহিকভাবে হারাতে পারিনি। কিন্তু সেরাটা খেললে তাদের চাপে ফেলে ম্যাচ জেতা ও চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্ভব।’

এবারের টুর্নামেন্ট শুরুর আগে অনেকেই ভাবেননি বাংলাদেশ ফাইনালে যাবে। তবে বুধবার পাকিস্তান-বাধা পেরিয়ে তৃতীয়বারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছেন মাশরাফিরা। ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে মাত্র ২ রানে হেরে শিরোপাবঞ্চিত হয়েছিল বাংলাদেশ। টানা দুইবার ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল খেলতে যাচ্ছেন লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। যদিও আগেরবার টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ছিল এই টুর্নামেন্টটি।

ফাইনালে প্রতিপক্ষ ভারত মানেই গত আসরের দুঃখজনক স্মৃতি। এশিয়া কাপের ইতিহাসে ২০১৬ সালেই প্রথম টি-টোয়েন্টি সংস্করণে খেলা হয়েছিল। ফাইনালে বাংলাদেশ তেমন প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। বৃষ্টিবিঘ্নিত ওই ফাইনালে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ১৫ ওভারে ৫ উইকেটে ১২০ রান করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ৭ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের জয় পায় ভারত।

গত ৩২ বছর ধরে এশিয়া কাপ খেলা টাইগারদের সেরা সাফল্য ২০১২ সালে পাকিস্তান এবং ২০১৬ সালে ভারতের বিপক্ষে হেরে রানার্সআপ হওয়া। এ দুই আসরের আয়োজক ছিল বাংলাদেশ। এবার পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠায় প্রতিপক্ষ দল ভারতও কিছুটা সমীহ করছে বাংলাদেশকে। কারণ তারা ভাবছে, যে দল তামিম ইকবাল আর সাকিব আল হাসানের মতো অন্যতম প্রধান দুই খেলোয়াড় না থাকার পরও দুর্দান্তভাবে ফাইনালে উঠেছে, তাদেরকে হারিয়ে শিরোপা জেতাটা ভারতের জন্য সহজ হবে না।

ভারতের বিপক্ষে ফাইনালের আগে নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও দু’বারের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানের বিপক্ষে পাওয়া জয়টা নিশ্চিতভাবেই আত্মবিশ্বাস জোগাবে বাংলাদেশকে। ২০১২ ও ২০১৬ সালের ফাইনালে না জেতার কষ্টটা এবার হয়তো মুছে দিতে পারবে মাশরাফির দল। সেই বিশ্বাস রয়েছে সবার মনে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads