• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
জাতি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে

রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে শনিবার নাগরিক সমাবেশে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল

ছবি : বাংলাদেশের খবর

জাতীয়

জাতি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৩ জুন ২০১৮

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহসভাপতি ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল বলেছেন, সমস্যা সমাধানে সরকারের মনে হয় একটিই উপায় আছে। তা হচ্ছে ‘বন্দুকযুদ্ধ’। যখন দেশে সুশাসন ও জবাবদিহিতার চরম অভাব হয়, তখনই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ জাতি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে। পরিবেশ আন্দোলনকর্মী উত্তম হত্যার বিচার, সড়কপথে পরিবহন নৈরাজ্য ও মানুষ হত্যা বন্ধের দাবিতে এক প্রতিবাদী নাগরিক সভায় এ কথা বলেন তিনি। রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে গতকাল শনিবার সকালে এই সভার আয়োজন করে ২৪টি নাগরিক সংগঠন। গত ২১ মে হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ডে বাসের ধাক্কার পর ট্রাকচাপায় প্রাণ হারান পরিবেশ আন্দোলনকর্মী উত্তম কুমার দেবনাথ।

সুলতানা কামাল বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৬ জন মানুষ মারা যাচ্ছে। এদেশের মানুষ যেখানেই যাচ্ছে, মরিয়া হয়ে ছুটে যাচ্ছে। অন্যকে মাড়িয়ে কেন সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার এ অসুস্থ প্রতিযোগিতা? এর কারণ পুরো সমাজে অনাচার ঢুকে পড়েছে, যার খেসারত দিচ্ছি আমরা সবাই মিলে।

সমাবেশে বাপার আরেক সহসভাপতি রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় ভুক্তভোগীদের কান্না নীতিনির্ধারকদের কানে পৌঁছায় না। আমরা তাদের দেশ পরিচালনার অর্থ জোগান দিচ্ছি, কিন্তু তারা আমাদের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এ দেশের মানুষকে সোচ্চার হতে হবে।

সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন— প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা, বাপার সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন, যুগ্ম সম্পাদক ইকবাল হাবিব, পিএসসির সাবেক চেয়ারম্যান ইকরাম আহমেদ প্রমুখ।

সমাবেশে উত্তমের পরিবারের দায়িত্ব গ্রহণ ও ১৬টি দাবি জানানো হয়।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ২৪টি সংগঠনের দাবিগুলো হলো : উত্তম দেবনাথ হত্যায় দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে বিচার ও উত্তমের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান; মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩-এর যুগোপযোগী সংশোধনী আনা ও তা বাস্তবায়ন; পথচারী ও অযান্ত্রিক যানে নিরাপদে চলাচলের উপযোগী পরিবেশ তৈরি; উল্টোপথে গাড়ি চালানো বন্ধ; যথাযথভাবে বিদ্যমান সড়কপথ পরিচালনা ও মেরামত; ভুয়া লাইসেন্সধারী চালকদের নিষিদ্ধ ও শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা; পরিবহন মালিকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা এবং অপরাধের ভিত্তিতে শাস্তির বিধান চালু করা; ত্রুটিযুক্ত গাড়ি বাতিল করা; ট্রিপের পরিবর্তে চালকদের মাসিক বেতনে নিয়োগের ব্যবস্থা; সড়ক ব্যবহারকারী সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো; যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা; বিআরটিএকে স্বচ্ছ ও কার্যকর করা; রেল ও নৌব্যবস্থার আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ এবং সড়কনির্ভরতা কমানো; প্রশিক্ষিত দক্ষ চালক তৈরিতে প্রতিটি জেলায় প্রশিক্ষণ একাডেমি চালু; যাত্রী, যানবাহনের মালিক, চালক ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সবার সহযোগিতায় সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং পেশাদার চালকের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট নীতিমালার ভিত্তিতে মালিকপক্ষ থেকে নিয়োগপত্র প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads