• বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জৈষ্ঠ ১৪২৯
চার লাখ ট্যাব কেনা নিয়ে প্রশ্ন 

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পে মিলছে না জাতিসংঘের অনুদান

চার লাখ ট্যাব কেনা নিয়ে প্রশ্ন 

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ মে ২০২১

জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২১ প্রকল্পের মূল ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) অনুদান হিসেবে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) ১৮১ কোটি ১১ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই টাকা পাওয়া যাবে না বলে জানা গেছে। এরপরও প্রকল্পে নতুন করে প্রায় ৪ লাখ ট্যাব কেনার প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

অনুদান বাতিল হওয়ায় আন্তঃখাত সমন্বয়ের ক্ষেত্রে প্রকল্পটি সংশোধন করতে পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাব পাঠিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। অনুদানের টাকা না মিললেও এই প্রকল্পে নতুন করে ৩ লাখ ৯৫ হাজার ট্যাব কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। কারণ ট্যাব কেনার জন্য অতিরিক্ত ৫৫৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। 

পরিকল্পা কমিশনের মতে, প্রত্যন্ত অঞ্চলের তথ্য সংগ্রহকারীরা হঠাৎ করে ট্যাবের ব্যবহার করতে পারবে কি না, সঠিকভাবে তথ্য পাঠাতে পারবেন কি না, এত বিপুল সংখ্যক ট্যাবের কারিগরি বিষয়ে একই সময়ে দেখভাল করা যাবে কি না-এসব বিষয়ে আরো আলোচনা করতে হবে। এ ছাড়া এত স্বল্প সময়ে প্রায় চার লাখ ট্যাব সংগ্রহ করা যাবে কি না, পরবর্তীসময়ে এতগুলো ট্যাব কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবহার হবে সে বিষয়ে আলোচনা দরকার।

প্রলিত পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহের পরিবর্তে সারা দেশে একক পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ বিশ্লেষণ এবং ফলাফল প্রকাশ করার বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের কারিগরি কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ীই এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। এ ছাড়া স্মার্টফোন দিয়ে কাজ করানো যায় কি না, কাজের শেষে এই ট্যাবগুলো ব্যবহারযোগ্য থাকবে কি না, কাজ শেষে এতগুলো ট্যাব কোথায় সংরক্ষণ করা হবে সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। কারণ মাঠ পর্যায়ে ট্যাব গেলে তা ফিরে পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে বলে দাবি কমিশনের।

বিবিএস মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, (ইউএনএফপিএ) ১৮১ কোটি টাকা দিচ্ছে না। আমরা এটা ছাড়াই নিজেদের টাকায় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারব। প্রকল্প অনুদান না মিললেও চার লাখ ট্যাব কেনা প্রসঙ্গে বলেন, শুমারির প্রয়োজনেই এগুলো কিনতে হবে। ট্যাব ছাড়া শুমারি হবে না। প্রকল্পের কিছু বিষয়ের ব্যয় হ্রাস-বৃদ্ধি করা হবে। প্রকল্পে নতুন কিছু হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার কেনার প্রস্তাব করা হচ্ছে। তথ্য সংগ্রহে পরিবর্তন আসায় অর্থাৎ ইউনিমোড পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপি এবং কর্মপরিকল্পনা সংশোধন করা হবে।

জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২১ প্রকল্পের আওতায় নানা কাজ সম্পন্ন হবে। জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্পের মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ছিল ১ হাজার ৫৭৮ কোটি ৬৮ লাখ এবং প্রকল্প সাহায্য ছিল ১৮১ কোটি ১১ লাখ টাকা। কিন্তু অনুদানের টাকা না পাওয়ায় প্রকল্পের ব্যয় কমানো হচ্ছে। নতুন করে ব্যয় ধরা হচ্ছে ১ হাজার ৫৭৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১৯ সালের জুলাই থেকে চলমান। শেষ হওয়ার কথা ২০২৪ সালের ৩০ জুন। 

পৃথিবীজুড়ে এক কোটির বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। এদের বাদ দিয়ে আর জনশুমারি নয়। একই সঙ্গে বাংলাদেশে অবস্থানরত সব বিদেশিদের গণনার আওতায় আনা হবে। কেউ যেন বাদ না পড়ে সেই লক্ষ্যে জনশুমারির আওতায় দেশের সব নাগরিককে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই কাজ শতভাগ সফল করতে স্থানীয় প্রশাসনকে চিঠি দেবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। একইভাবে বাংলাদেশেও নানা প্রকল্পে কর্মরত ভারত, জাপানসহ নানা দেশের নাগরিকদেরও গণনার আওতায় আনা হবে। 

পপুলেশন অ্যান্ড হাউজিং সেনশাস ২০২১ প্রকল্পের আওতায় ষষ্ঠ জনশুমারি কার্যক্রম হচ্ছে। স্যাটেলাইট ইমেজের মাধ্যমে ২০২১ সালে ষষ্ঠ ডিজিটাল জনশুমারি করা হবে। এ পদ্ধতিতে দেশের একটি থানাও বাদ পড়বে না। স্যাটেলাইট ইমেজ দেখে জনশুমারিতে সারা দেশে চার লাখ গণনাকারী তথ্য সংগ্রহ করবেন। শিক্ষিত বেকারদের জনশুমারি প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে। এর আগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জনশুমারির কাজে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকছে না। সাতদিনে চার কোটি খানার (পরিবার) তথ্য সংগ্রহ করা হবে। একজন গণনাকারী ১০০টি খানার তথ্য সংগ্রহ করবেন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads