Logo

শিল্প-সংস্কৃতি

বাংলাদেশ-ভারত ক্রস বর্ডার ট্রেড বিষয়ক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

Icon

ক্যাম্পাস ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২৫, ১৮:২৬

বাংলাদেশ-ভারত ক্রস বর্ডার ট্রেড বিষয়ক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ-ভারত আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য এবং স্থলসীমান্ত ব্যবস্থাপনার উপর এর প্রভাব নিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আনোয়ার শফিক রচিত গবেষণামূলক বই ‘ বাংলাদেশ- ইন্ডিয়া ক্রস বর্ডার ট্রেড অ্যান্ড ইটস ইম্প্যাক্ট অন ল্যান্ড বর্ডার ম্যানেজমেন্ট’-শীর্ষক বইয়ের এর মোড়ক উন্মোচন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  

সোমবার (১২ মে) বিকেল ৩টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের এ আর মল্লিক লেকচার হলে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বর্তমান সময়ে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যের নানা দিক তাত্ত্বিকভাবে অনুধাবনের জন্য, মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতা সহজবোধ্য ভাবে উপলব্ধি এবং কার্যকরী ভাবে তা বাস্তবায়ন জন্য বইটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। পলিসি মেকিং ও গবেষণার ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত সহায়ক হবে বলেও তারা মত দেন। 

অনুষ্ঠানে বইটির তত্ত্বাবধায়ক এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর সীমানা জটিল এবং সময়ের সাথে সাথে তা আরও জটিল হচ্ছে। তিনি জানান, বৈধ ও অবৈধ—এই দুই পথে সীমান্ত বাণিজ্য পরিচালিত হওয়ায় সীমান্ত অপরাধ বাড়ছে, যা স্থলসীমান্ত ব্যবস্থাপনায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বইটিতে এসব বিষয়ের তুলনামূলক বিশ্লেষণ ও সম্ভাব্য সমাধান এর বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে। যা গবেষক, পলিসি মেকার এবং বাস্তবায়নকারী সংশ্লিষ্ট সংস্থার সমূহ ও দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের জন্য সহায়ক হিসেবে কাজ করবে । 

প্রধান আলোচক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমান সময়ে বহুল আলোচিত  গ্লোবাল ট্রেড  অন ওয়ার বা  বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ভারত আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের  বিষয় সম্বলিত  বইটির গুরুত্ব বলা বাহুল্য। বর্ডার ম্যানেজমেন্ট ও বর্ডার স্টাডিজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সীমান্তের বিষয়টি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আরও গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্থলসীমান্ত শেয়ার করছে। এমন  বাস্তবতায় সীমান্ত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আন্ত সীমান্ত বাণিজ্য এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যেহেতু এই বইটিতে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য এবং এর আলোকে স্থল সীমান্ত ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেজন্য একটি বাস্তবধর্মী দৃষ্টিভঙ্গি আমরা বইটিতে পাই। তিনি আরও বলেন, বইটিতে বাস্তবভিত্তিক  অনেক তথ্য উপাত্ত ও বিশ্লেষণ রয়েছে, যা সীমান্ত বিষয়ক ভাবনা ও বাস্তবতার মাঝে বিদ্যমান ফারাক বুঝতে সাহায্য করবে। সর্বোপরি দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক ও ভূ-অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-ভারতের স্থল সীমান্ত ব্যবস্থাপনার একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

বইটির লেখক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আনোয়ার শফিক বলেন, বিজিবিতে দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালনকালে সমগ্র উত্তরবঙ্গ এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত বিশাল সীমান্ত এলাকায় কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে বইটি রচিত হয়েছে। দায়িত্ব পালনের সুবাদে বর্ডারের বিভিন্ন সমস্যা বিশেষ করে বর্ডার কিলিং, চোরাকারবারি, মাদক চোরা চালান, উন্নয়নের ছোঁয়া বঞ্চিত দূরবর্তী সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের দারিদ্র ও দুর্দশা গ্রস্থ জীবন ও জীবিকা সহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে, যে অভিজ্ঞতার বাস্তব চিত্র এতে তুলে ধরা হয়েছে। সীমান্ত অপরাধের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে সীমান্তের অবৈধ বাণিজ্য। এর প্রভাবে বর্ডার কিলিং সহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হয়। তিনি জানান,  প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি ডাটার ভিত্তিতে কোয়ালিটিভ রিসার্চ এর ফলাফল হিসাবে আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্য ও স্থলসীমান্ত ব্যবস্থাপনার মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে বইটিতে উপস্থাপন করা হয়েছে। বইটিতে নয়টি অধ্যায়ে ভূ-রাজনৈতিক ও ভু-অর্থনৈতিক  প্রেক্ষাপট, আন্ত:সীমান্ত বাণিজ্য ও স্থল সীমান্ত ব্যবস্থাপনার বর্তমান অবস্থা, সিকিউরিটি ফোর্স, পলিসি মেকার, কাস্টমস, প্রশাসন, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ সীমান্তবর্তী মানুষের অভিজ্ঞতা সম্বলিত সাক্ষাৎকার সহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাজেদা বেগমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এ টি এম আতিকুর রহমান এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নুরুল হুদা সাকিব। অনুষ্ঠানে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এমআই /টিএ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর