‘দেখ পান্থকুঞ্জ জেগে আছে, হত্যা হলে একটি বৃক্ষ লড়াই হবে তোমার সাথে’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে নগরের সবুজ অঞ্চল রক্ষা ও পরিবেশবিনাশী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বর্ষা উৎসব উদযাপন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

রোববার (১৫ জুন) সকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ উৎসবে বর্ষা আর প্রতিবাদের ছাপ ছিল সমানভাবে। আয়োজকেরা জানান, এটি কোনো আড়ম্বরপূর্ণ ‘বৃষ্টিবিলাস’ নয়, বরং নগরের বৃক্ষ, খাল-বিল, পার্ক ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার দাবিতে এক সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ কর্মসূচি।

আয়োজনের শুরুতে মেঘমল্লার রাগে সেতার পরিবেশন করেন হৃদিক জাহান ও সুস্মিতা কীর্তনিয়া। এরপর সমবেত সংগীত পরিবেশন করে উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদ, মিরপুর, উত্তরা, ডেমরা, রায়েরবাজার ও সাভার শাখা। নৃত্য পরিবেশন করেন স্পন্দন ও আদ্রিতা আনোয়ার। আবৃত্তি করে শোনান উদীচীর কেন্দ্রীয় আবৃত্তি বিভাগ।

‘বর্ষা কথন’ পর্বে প্রধান বক্তা আমিরুল রাজীব বলেন, বর্ষার প্রথম বৃষ্টি যেমন নিস্তেজ প্রকৃতিকে জাগিয়ে তোলে, তেমনি সাংস্কৃতিক আন্দোলন ঘুমন্ত মানুষকে জাগিয়ে তোলে। আমরা গত ১৬৭ দিন পান্থকুঞ্জে অবস্থান করেছি। বৃক্ষ হত্যার বিরুদ্ধে এই অবস্থান চলবে।

তিনি বলেন, আমরা যে নগরে বাস করি, সেখানে পরিকল্পিত উন্নয়নের নামে প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে। এ উৎসবের মাধ্যমে আমরা বলছি, বৃক্ষ কাটবে, পার্ক দখল করবে আর আমরা চুপ করে থাকব না।

কথন পর্বে আরও বক্তব্য দেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন, কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলির সদস্য কবি রহমান মুফিজ। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উদীচীর সহসভাপতি হাবিবুল আলম। সঞ্চালনায় ছিলেন ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক আরিফ নূর।

আয়োজকেরা জানান, ঢাকার পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে উদীচী কর্মীরা ‘গাছ রক্ষা আন্দোলন’ চালিয়ে আসছেন। এবারের বর্ষা উৎসব সেই আন্দোলনেরই এক সাংস্কৃতিক প্রকাশ। তারা বলেন, বৃক্ষ নিধন, পার্ক দখল, জলাশয় ভরাট ও অপরিকল্পিত নগরায়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি শ্বাসরুদ্ধ নগরীই পাবে। তাই এই উৎসব শুধু ঋতুবরণ নয়, পরিবেশ রক্ষার দায়বোধ থেকেও উদীচীর অবস্থান।

• জেসি/এটিআর