দেয়ালচিত্রে সাহসের গল্প বলছেন হরিজন নারীরা

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৫, ১০:০৭
-685e18f43ff04.jpg)
‘ঘ্রাণ থাকে গন্ধে, বর্ণে নয়’— এই স্লোগানকে সামনে রেখে বগুড়ায় শুরু হয়েছে এক ব্যতিক্রমী শিল্পআয়োজন ‘দেয়ালচিত্রে হরিজনদের সাহসের গল্প’। সামাজিক প্রতিবাদ, নারীর কণ্ঠস্বর এবং নতুন পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে শুরু হয়েছে এ আয়োজন।
বুধবার (২৫ জুন) আয়োজনের অংশ হিসেবে ‘আমাদের গল্পের ছাপ’ শিরোনামে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন স্থানীয় নারী শিল্পী, হরিজন কমিউনিটির সদস্য এবং সাধারণ মানুষ। সবাই একসঙ্গে নিজেদের জীবনের গল্পকে রঙ, আলো আর পদচিহ্নে রূপ দেন।
শুভ্র কাপড়েও ওপরে রঙ লাগানো পায়ে হাঁটেন অংশগ্রহণকারীরা। যেন জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে কাপড়টি। সবার হাতে ছিল দীপ, কেউ জ্বালান নিভে থাকা আলো। এরপর সেই শুকনো মাটির ওপর সোনালি রঙের প্রলেপ— যেখানে ফাটল, সেখানেই আলো। এর মাধ্যমে বার্তা দেন— ভাঙা মানেই শেষ নয়, বরং নতুন সৌন্দর্যের শুরু।
কর্মশালার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া এ আয়োজন চলবে ৩০ জুন পর্যন্ত। ২৯ জুন পর্যন্ত বগুড়ার বিভিন্ন দেয়ালে আঁকা হবে দেয়ালচিত্র, সেখানে তুলে ধরা হবে হরিজন নারীদের জীবনের সাহসিকতা, সংগ্রাম আর স্বপ্নের কাহিনি। ৩০ জুন এসব মুরাল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।
প্রকল্পটির পেছনে রয়েছেন বগুড়ার তরুণ চিত্রশিল্পী আহসানা অঙ্গনা। সম্প্রতি তিনি কলম্বোতে ‘ফিয়ারলেস অ্যাম্বাসেডরশিপ’ নামের একটি আন্তর্জাতিক কর্মশালায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। সেখানে দক্ষিণ এশিয়ার ১৫ নারী শিল্পীর সঙ্গে তিনি নারীর আত্মপ্রতিকৃতি ও প্রতিবাদের ভাষা নিয়ে কাজ করেন।
কলম্বোর সেই অভিজ্ঞতাকে ভিত্তি করে দেশে ফিরে অঙ্গনা আয়োজন করলেন এই উদ্যোগ। তার ভাষায়, ‘এই দেয়ালচিত্রগুলো শুধু রঙ নয়, এখানে থাকবে সাহস, প্রতিরোধ আর আলোর গল্প।’
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই কর্মসূচি হরিজন সম্প্রদায়কে আত্মপ্রকাশের একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম দেবে এবং সমাজে দীর্ঘদিনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে একটি সৃজনশীল প্রতিবাদ হিসেবে কাজ করবে।
এটি একক কোনো শিল্প আয়োজন নয়, বরং নারীকেন্দ্রিক কমিউনিটির অজানা গল্পকে সমাজের সামনে তুলে ধরার এক ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। আহসানা অঙ্গনার এই প্রচেষ্টা বাংলাদেশে শিল্প, সমাজ এবং প্রতিবাদের ভাষায় নতুন এক মাত্রা যোগ করবে বলেই আশা সংশ্লিষ্টদের।
এইচকে/এমএইচএস