-6870ad23a73cf.jpg)
এআই দিয়ে তৈরি ছবি
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শক্তিমান কবি, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক আল মাহমুদের ৯০তম জন্মবার্ষিকী আজ (১১ জুলাই)। ১৯৩৬ সালের এই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মৌড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সাহিত্যের সকল শাখায় বিচরণ করলেও আধুনিক বাংলা কবিতায় তাঁর কাব্যভাষা ও দেশজ উপাদানের প্রয়োগ বাংলা সাহিত্যকে দিয়েছে নতুনমাত্রা।
কবি আল মাহমুদের সাহিত্যজীবন শুরু হয় সাংবাদিকতা দিয়ে। ১৯৫০-এর দশকে ঢাকায় এসে তিনি লেখালেখির পাশাপাশি দৈনিক মিল্লাত, সাপ্তাহিক কাফেলা ও দৈনিক গণকণ্ঠে সাংবাদিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর রচনায় গ্রামীণ জনজীবন, নারীর অন্তর্লৌকিকতা, প্রেম, ইতিহাস, রাজনীতি ও মানবিক চেতনার শক্তিশালী প্রকাশ দেখা যায়। ‘লোক লোকান্তর’ (১৯৬৩), ‘কালের কলস’ (১৯৬৬) এবং ‘সোনালী কাবিন’ (১৯৭৩) কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি বাংলা কবিতায় নিজের স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরি করেন।
১৯৬৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ১৯৮৬ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন আল মাহমুদ। এছাড়াও তিনি ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, জীবনানন্দ স্মৃতি পুরস্কার, নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদকসহ বহু সম্মাননা লাভ করেন।
আল মাহমুদের সাহিত্যকর্ম শুধু কাব্যে সীমাবদ্ধ নয়; উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, শিশুতোষ রচনা, অনুবাদ—সব ক্ষেত্রেই তিনি রেখে গেছেন মূল্যবান অবদান। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো’, ‘আরব্য রজনীর রাজহাঁস’, ‘বখতিয়ারের ঘোড়া’, ‘অদৃশ্যবাদীদের রান্নাবান্না’, ‘দ্বিতীয় ভাঙন’, ‘একটি পাখি লেজঝোলা’, ‘পাখির কাছে ফুলের কাছে’ ইত্যাদি।
২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কবি আল মাহমুদ। মৃত্যুর পরও তার সাহিত্যকর্ম পাঠক, গবেষক ও সমালোচকদের কাছে সমানভাবে প্রাসঙ্গিক রয়ে গেছে।
এমএইচএস