ঢাবিতে ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলনের দ্বাদশ অধিবেশনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ মে ২০২৫, ০৭:৫৪

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছায়া জাতিসংঘ সংগঠনের (ডিউমুনা) উদ্যোগে ১২তম বারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে ৪ দিনব্যাপী ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলন-২০২৫’। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো- ‘আইনের শাসন ও বৈশ্বিক দৃষ্টান্তের রদবদল: ন্যায়, সমতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ।’
সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি নওশিন ফাতমির নেতৃত্বে আগামী ২৯ মে বৃহস্পতিবার শুরু হয়ে এই সম্মেলন চলবে ১ জুন রোববার পর্যন্ত।
রোববার (১৮ মে) অধিবেশন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করে আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছায়া জাতিসংঘ সংগঠন।
দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলনের এবারের অধিবেশনে অংশগ্রহণ করবেন সারা দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা ৫০০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী অন্যান্য দেশগুলো থেকেও বেশকিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি নওশিন ফাতমি মোট ১১টি কমিটির কথা উল্লেখ করেন, যেখানে ৬টি কমিটি এবার নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই কমিটিগুলো হলো- জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ষষ্ঠ কমিটি, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ১৫৪০ কমিটি, জাতিসংঘের অফিস অন ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম, জাতিসংঘের নারীর মর্যাদাবিষয়ক কমিশন, গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি, মিনিস্ট্রি অব ফরেন অ্যাফেয়ার্স।
সভাপতি নওশিন ফাতমি বলেন, ‘প্রতিবারই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এই সম্মেলন থেকে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি ইতিবাচক ভবিষ্যতের বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করি। সেই ধারাবাহিকতায়- নিত্য পরিবর্তিত বিশ্বে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে সকলের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাকরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হবে আসন্ন এই সম্মেলনে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিইউমুনার সাধারণ সম্পাদক সালেহ্ বিন অনাবিল, সহসভাপতি নাজিফা আনজুম, প্রচার সম্পাদক তাহজিন মুনির এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক স্বর্ণা সাহা।
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সালেহ্ অনাবিল বলেন, সম্মেলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা আলোচনা করবেন গুরুত্বপূর্ণ নানা বৈশ্বিক সমস্যাবলি নিয়ে। এর মাধ্যমে তরুণ শিক্ষার্থীরা তাদের কূটনৈতিক ও যোগাযোগ দক্ষতা এবং উপস্থিত বক্তৃতার মতো গুণের বিকাশ ঘটাতে পারবে বলে মনে করি।
২০১১ সালে যাত্রা শুরু করা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সক্রিয় এই সংগঠনটি ২০১২ সাল থেকে প্রতিবছর অত্যন্ত সাফল্যের সাথে শিক্ষামূলক এই অধিবেশনের আয়োজন করে আসছে। বৈশ্বিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল সমস্যা নিয়ে আলোচনা, বিতর্ক ও সমাধান প্রণয়নের মাধ্যমে আগত শিক্ষার্থীরা নিজেদের পারদর্শিতা প্রমাণে সচেষ্ট থাকে চার দিনব্যাপী সম্মেলনে।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি বর্তমানে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অংশীদার হতে একজন শিক্ষার্থীর যে সকল দক্ষতা অর্জন করা আবশ্যক, সেগুলোর প্রতিটিই ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ ক্ষমতা, উপস্থাপন দক্ষতা, কূটনৈতিক পারদর্শিতা, তথ্য অনুসন্ধান, কনটেন্ট লেখা, আনুষ্ঠানিক বিতর্ক- এ দক্ষতাগুলো ভালোভাবে রপ্ত করার জন্য রয়েছে অবারিত সুযোগ।
তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্বের বিকাশ, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অভিযোজন ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে উৎপাদনশীল বিশ্বনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা রাখাই সংগঠনটির মূল লক্ষ্য। বিগত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এবারও শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আয়োজনটিকে সাফল্যমণ্ডিত করবে বলে আশা প্রকাশ করে সংগঠনটি।
এমএমআই/বিএইচ