Logo

ক্যাম্পাস

বিনা অনুমতিতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেন কুবি কোষাধ্যক্ষ

Icon

কুবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৫, ২১:০০

বিনা অনুমতিতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেন কুবি কোষাধ্যক্ষ

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান। ছবি : সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মানের বিরুদ্ধে বিনা অনুমতিতে  আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়কে আয়ের পাঁচ শতাংশ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশনাও অমান্য করা হচ্ছে।

গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব মো. শাহীনুর ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) আইন, ২০১৩ এর ধারা ১২ (১) ধারা অনুযায়ী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। প্রজ্ঞাপনে নিয়োগের শর্তে উল্লেখ করা হয়, নিয়োগপ্রাপ্ত ট্রেজারারকে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধি ও আইন দ্বারা নির্ধারিত ও উপাচার্য কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করতে হবে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস'র (বিইউপি) বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ইন মার্কেটিং বিভাগের এমবিএ'র দ্বিতীয় সেমিস্টারে একটি কোর্সের ক্লাস নেন।

 রুটিন অনুযায়ী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. সোলায়মান প্রতি সপ্তাহে রবিবার সকাল সাড়ে ৮ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত এবং বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত 'কনজিউমার নিউরোসাইন্স এন্ড ডিসিশন বিহেভিয়ার' (এমকেটি-৫২০৫) কোর্সের ক্লাস নেন। গত রবিবারও (২৫ মে) তিনি এই কোর্সের ক্লাস নিয়েছেন বলে বিইউপি'র এমবিএ'র ব্যাচের একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছেন এই প্রতিবেদক। এছাড়া ক্লাস রুটিনও সংরক্ষিত আছে প্রতিবেদকের কাছে।

২০২০ সালের আগস্টে কুবির তৎকালীন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অন্য কোনো সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা ব্যক্তিগতভাবে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা বা কোনো ধরনের লাভজনক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকতে পারবেন না। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কেউ জড়িত থাকলে সেটি চাকরি বিধিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে।

এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ কমিটিতে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিবর্গ (উপাচার্য, উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ) অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিতে চাইলে অনুমতি নিতে হবে। এছাড়া, বাহিরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আয়কৃত অর্থের পাঁচ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে প্রদান করতে হবে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০২ তম সিন্ডিকেটে পাশ হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়ার জন্য অনুমতি নিয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, 'এ বিষয়ে আমি অফিশিয়ালি কিছু জানিই না। মাত্র আপনার থেকে জানলাম।'

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, 'প্রজ্ঞাপন প্রকাশের আগে থেকে আমি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত ছিলাম। কাজের প্রেসার বেড়ে গেছে। তাই এটা আমি ছাড়ার চিন্তা করছি। ফলে অনুমতি নেয়া হয়নি। তবে অনুমতি বিষয়টি প্রসেসিংয়ে আছে।'

তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি যে সেমিস্টারে কোর্স নিচ্ছেন চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, 'বাহিরে কোথায় ক্লাস নিতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট থেকে অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি না দিয়ে থাকলে কাজটা ঠিক হয়নি। এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে (কোষাধ্যক্ষ) জিজ্ঞেস করতে পারেন কেন এমনটা করলেন?'

ইমতিয়াজ রিফাত/এমআই

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর