বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের জেরার মুখে ঢাবি প্রো-ভিসি ড. মামুন আহমেদ

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ১৯:৫৯
-(19)-68580c4cc947d.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে পক্ষপাতিত্বসহ একাধিক গুরুতর অভিযোগ তুলেছে বিএনপিপন্থী শিক্ষক সংগঠন ‘সাদা দল’।
অভিযোগে বলা হয়, তিনি ছাত্রলীগপন্থী বিতর্কিত নেতা-কর্মীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন এবং 'ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ'কে প্রশাসনিকভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন।
রোববার (২২ জুন) বিকেলে অধ্যাপক মামুন আহমেদের কার্যালয়ে প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ বিষয়ে জবাবদিহি দাবি করেন ‘সাদা দলের’ শিক্ষকরা। বৈঠকে তুমুল বাকবিতণ্ডা হয় দুই পক্ষের মধ্যে। পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে সাদা দল এক সপ্তাহের সময়সীমা দিয়ে অভিযোগ সংশোধনের দাবি জানায়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
সাদা দলের অভিযোগ, পপুলেশন সায়েন্স বিভাগে ছাত্রলীগপন্থী নেত্রী ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাদিয়া আফরিন এনিকে প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নকলের অভিযোগে অভিযুক্ত ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক সাবেক ছাত্রলীগ কর্মীকেও শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ভুয়া ভর্তি কেলেঙ্কারিতে শাস্তিপ্রাপ্ত নীল দলের (আওয়ামী লীগপন্থী) এক শিক্ষককে বিদেশ সফরের সঙ্গী করা হয়। নীল দলের নেতাদের সঙ্গে গোপন বৈঠক, বিতর্কিত শিক্ষককে রিসার্চ এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান এবং শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে পক্ষপাতদুষ্ট সদস্য অন্তর্ভুক্তির কথাও উল্লেখ করে তারা। এছাড়া সাত কলেজ ইস্যুতে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টার অভিযোগও আনা হয় অধ্যাপক মামুনের বিরুদ্ধে।
সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার বলেন, ‘প্রো-উপাচার্য আমাদের কিছু প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন, কিছু এড়িয়ে গেছেন। নকলের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় একটি নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। বিষয়গুলোর সংশোধনে আমরা সাত দিনের সময় দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি ‘মেধা’ ও ‘স্বচ্ছতা’র নামে রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না। আমরা চাই, তিনি বিষয়গুলো সংশোধন করবেন এবং সমঝোতার পরিবেশ তৈরি করবেন।’
তবে এসব অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছেন অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ। তিনি বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে ও প্রশাসনিক নিয়ম মেনে হয়েছে। প্রার্থীর মেধা, দক্ষতা ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সাদিয়া আফরিন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘তিনি ছাত্রলীগ করেন-এটি আজই প্রথম শুনেছি। অভিযোগের ভিত্তিতে আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছি বিষয়টি তদন্ত করতে। বিভাগ, এক্সাম কন্ট্রোলার এবং বোর্ড-কেউ নকলের প্রমাণ পায়নি।’
প্রো-উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমি চাই প্রশাসন নিরপেক্ষ হোক, অতীতের স্বৈরাচারী প্রভাব থেকে মুক্ত হোক। অনেক শিক্ষক ব্যক্তিগতভাবে সুপারিশ করে থাকেন, কিন্তু আমি তা পাত্তা দিই না। যেকোনো অভিযোগ থাকলে আমি তা সিন্ডিকেটে তোলার পক্ষপাতী।’
এমএমআই/এমআই/