ভাগে কেনা বৈদ্যুতিক বাতি নিয়ে পাবিপ্রবিতে মারামারি

পাবিপ্রবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৫, ১৯:০৮

ভাগে কেনা বৈদ্যুতিক লাইটের টাকা দেওয়া-নেওয়া নিয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) দুই ছাত্রের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২৯ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ওই সিনিয়রের নাম রাকিবুল ইসলাম। তিনি ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। জুনিয়র শিক্ষার্থীর নাম আব্রাম আহমেদ, তিনি গণিত বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে হঠাৎ করেই দুইটি গ্রুপে কয়েকজন ছাত্র শহীদ মিনারে জটলা তৈরি করেন। এক গ্রুপ মারামারির জন্য হাতুড়ি, বাঁশ নিয়ে আসে। এরপর সেখানে মারামারির ঘটনা ঘটে। প্রক্টরিয়াল বডির কয়েকজন শিক্ষক এসে দুই গ্রুপকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীই মেরিল বাইপাস সংলগ্ন একটি মেসে প্রায় এক বছর ধরে রুমমেট ছিলেন। কয়েক মাস আগে রাকিবুল ইসলাম মেস ছেড়ে হলে চলে আসেন। আসার সময় মেসের রুমের একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব নিয়ে আসেন। ওই বাল্বটি রুমের সবাই মিলে কিনেছিলেন। বাল্বটি নিয়ে দুজনের মাঝে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এরপর মারামারির ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমার রুমে বাংলা বিভাগের এক জুনিয়র থাকত। তাকে জানিয়ে আমি বাল্বটি রুম থেকে খুলে নিয়ে আসি। রাতের দিকে আব্রাম আমাকে ফোন দিয়ে বাল্বটি কেন নিয়ে এসেছি সে বিষয়ে জানতে চায় এবং আমাকে বলে, ‘আপনি আমার সঙ্গে কথা না বলে রুম থেকে বাল্ব নিয়ে গেছেন কেন? আমি কালকে প্রক্টর স্যার বরাবর অভিযোগ দেব যে আপনি রুম থেকে আমার পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে গেছেন।’ কথা বলার একপর্যায়ে আমি বাল্বটি কেনায় ওর ভাগের টাকা আজকে দেব বলে জানাই। আজকে আব্রাম আসার পর, গতদিন সে আমার সঙ্গে ফোনে বাজে ব্যবহার করায় তাকে শাসন করি। এরপর সে তার বন্ধুদের নিয়ে আমার ওপর চড়াও হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সিনিয়র ভাইয়েরা আমাদের দুইজনকে নিয়ে মীমাংসা করে দেন। কিন্তু সবকিছু মীমাংসা হওয়ার পরও সে আমাকে লাথি মারে। ফলে একপর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত জুনিয়র শিক্ষার্থী আব্রাম আহমেদ বলেন, আমরা এক রুমেই থাকতাম। মাসের শেষের দিকে রাকিব ভাই আমাদের না বলেই বাল্বটি নিয়ে যান এবং মাসের শেষের দিকে আমার কাছে টাকাও তেমন থাকে না। তাই আমি ভাইকে ফোন দিয়ে কেন আমাদের না বলে বাল্ব নিয়ে গেছেন সে বিষয়ে জানতে চাই। এতে তিনি আমার ওপর মেজাজ দেখান এবং একপর্যায়ে আমার মাকে নিয়ে গালি দেন। আজকে ভাই বাল্বের টাকার বিষয়ে দেখা করতে বলেন। দেখা হলে আমাদের মাঝে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আমাকে একটা থাপ্পড় দেন। উনি আমার মাকে নিয়ে গালি দেওয়ায় আমার প্রচণ্ড রাগ হয়েছিল। তাই নিজেকে কন্ট্রোল না করতে পেরে ভাইকে একটা লাথি মেরে বসি।
এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর সাইমুন্নাহার ঋতু বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আজকে দুই শিক্ষার্থীর মারামারি খুবই দুঃখজনক। মারামারির খবর পেয়ে আমরা সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে যাই এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সক্ষম হই। আমরা দুই শিক্ষার্থীসহ তাদের বিভাগের দুজন শিক্ষককে নিয়ে বিষয়টি প্রক্টর অফিসে বসে মীমাংসা করে দেই। আশা করছি তারা ফের এমন ঘটনা ঘটাবে না। আবারও এমন ঘটনা ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আল মামুন/এইচকে