মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে জবিতে বিক্ষোভ

জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৮

মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার প্রতিবাদে জবিতে বিক্ষোভ। ছবি : বাংলাদেশের খবর
পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল কম্পাউন্ডে চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগ নামে এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে হত্যাসহ দেশব্যাপী বিএনপির চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে রায় সাহেব বাজার-তাতিবাজার-নয়া বাজার-মিটফোর্ড হাসপাতাল হয়ে ক্যাম্পাসে ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে এ মিছিল শেষ হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘যুবদলের অনেক গুণ, পাথর মেরে মানুষ খুন’, ‘বিএনপির অনেক গুণ, দশ মাসে দেড়শ খুন’, ‘যুবদলের চাঁদাবাজরা, হুঁশিয়ার সাবধান’, ‘বিএনপি, ভুয়া ভুয়া’, ‘আমার ভাই খুন কেন, তারেক রহমান জবাব দে’, ‘জিয়ার সৈনিক, চাঁদা তোলে দৈনিক’, ‘চাঁদা তোলে পল্টনে, ভাগ যায় লন্ডনে’—ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সমাবেশে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, মিটফোর্ডে চাঁদা না দেওয়ায় ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী সোহাগকে পাথর দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যাসহ সারাদেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করতে হবে।
এ সময় জবি শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেন, ‘৫ আগস্টের পর আমরা চেয়েছিলাম সাম্য, শান্তিপূর্ণ ও চাঁদাবাজিমুক্ত একটি বাংলাদেশ। কিন্তু হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই একটি দল চাঁদাবাজি শুরু করেছে। আবু সাঈদ, শহীদ ওয়াসিম, শহীদ সাজিদের ভাইয়েরা মারা যাননি। প্রয়োজনে আবারও জুলাই আসবে।
বাগছাসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নূর নবী বলেন, এ পাথরটা আমার ভাইয়ের উপর না, মনে হয় আমার বুকের উপর পড়ে। এ ক্যাম্পাসে যেমন ছাত্রলীগ বিশ্বজিৎকে হত্যা করেছিল, ঠিক একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি মিটফোর্ডে ঘটেছে। ১০ মাস না যেতেই আপনারা আপনাদের দলের লোকদেরই হত্যা করেছেন। হাসিনার দায়িত্ব আপনাদের উপর দিয়ে যায়নি। ৫ আগস্টে ফ্যাসিস্টকে যেভাবে প্রতিহত করেছি, তাদেরও প্রতিহত করতে বাধ্য হব।
জবি শাখা বাগছাসের আহ্বায়ক মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, ৫ আগস্টের পর আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাস চেয়েছিলাম। আমাদের সহযোদ্ধাদের মারলে আমরা বসে থাকব না। সারাদেশে যে নৈরাজ্য নেমে এসেছে তা হতে দেব না। প্রয়োজনে আবার জুলাই আসবে।
শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল আরিফ তার বক্তব্যে বলেন, প্রথমে মিডিয়ার কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই—৯ জুলাইয়ের ভিডিও ১১ জুলাই কেন আসে? আপনারা কী করেন? কী লুকাতে চান?
তিনি আরও বলেন, ৭১-এর পর থেকে দুইটি পরিবার দেশ চালিয়ে আসছে—শেখ মুজিবুর রহমান পরিবার ও জিয়াউর রহমান পরিবার। আমরা এ দুই ‘রহমানী’ পরিবার থেকে মুক্তি চাই। ইন্টারিমকে বলছি, আপনারা জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিন।
শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রায়হান হাসান রাব্বি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের ১ বছরও পূর্ণ হয়নি। এরই মধ্যে চাঁদা না দেওয়ায় জনসম্মুখে পাথর দিয়ে মানুষ খুন করার মতো ঘটনা ঘটছে। আমরা মনে করি, যারা এই খুনের সাথে জড়িত, তারা ‘জুলাই’কে ধারণ করতে পারে না। যদি বিএনপি এ ঘটনার বিচার না করে, তবে বাংলাদেশে তাদের রাজনীতি নিয়েও আমরা প্রশ্ন করব। আর ইন্টারিম সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে বসেছে, কোনো দলের ম্যান্ডেট নয়। আমরা এর বিচার চাই।
জেএন/এমবি