জুলাই আন্দোলনের ‘নয় দফা’ বাস্তবায়ন নিয়ে এখনো শঙ্কা!
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১৭:৩১

ফাইল ছবি (সংগৃহীত)
কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০২৪ সালে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন এক পর্যায়ে পরিণত হয় বৃহৎ সরকারবিরোধী আন্দোলনে। ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে ছয় শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পরই আন্দোলনের নেতৃত্ব ‘নয় দফা’ ঘোষণা করে। এই নয় দফা ছিল আন্দোলনের মূল রূপরেখা, যা ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রাম ও জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার লক্ষ্যে তৈরি।
আন্দোলনের এক বছর পেরিয়ে গেলেও নয় দফার অধিকাংশ দাবি এখনো পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হয়নি। শহীদ শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ, গুলিবিদ্ধদের সুষ্ঠু চিকিৎসা ও আর্থিক সহায়তা, হত্যাকারী পুলিশ সদস্য এবং হামলাকারী ছাত্রলীগ কর্মীদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া এখনো সম্পন্ন হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও রয়েছে অনেকে প্রশ্ন ও সমালোচনা।
আন্দোলনের ঘোষক ও সাবেক সমন্বয়ক আব্দুল কাদের জানান, ‘নয় দফা ছিল আন্দোলনকেন্দ্রিক, যা পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত ছিল না। আমাদের প্রথম দাবি ছিল শেখ হাসিনাকে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ানো, যা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। বিচার প্রক্রিয়া এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও যথাযথ উন্নয়ন হয়নি। বিশেষ করে পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়নি।’
আব্দুল কাদের আরও বলেন, ‘কিছু শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা আন্দোলনের বিরোধিতা করেছেন এবং বর্তমানে তারা এখনও দায়িত্বে রয়েছেন। আমরা আশঙ্কা করি, ফ্যাসিবাদ যদি পুনরায় ফিরে আসে, তাদের মাধ্যমে তা শিক্ষাঙ্গনে প্রবাহিত হবে।’
অপরদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির সভাপতি এসএম ফরহাদ বলেন, ‘নয় দফার মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিবাদী কাঠামো ভাঙার চেষ্টা করেছি। যদিও প্রধান লক্ষ্য, অর্থাৎ স্বৈরাচার পতন ও স্বতন্ত্র শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে, আন্দোলনের অনেক দাবি পূরণ হয়নি। শহীদদের ক্ষতিপূরণ এবং পুলিশি নিপীড়নের বিচার এখনো হয়নি।’
ঢাবি ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মল্লিক ওয়াসি উদ্দিন তামী জানান, ‘নয় দফার অধিকাংশ দাবির বাস্তবায়নে সমন্বয়কারীদের মধ্যে আন্তরিকতার অভাব ছিল, যা ঐক্যমত্য গঠনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
নয় দফার বাস্তবায়ন ও ছাত্র রাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে আশা ও উদ্বেগের মিশ্র অনুভূতি। নেতারা বলছেন, আগের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের আন্দোলন আরও সুসংগঠিত ও পরিকল্পিত হবে।
তবে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এমএমআই/এমএইচএস