Logo

ক্যাম্পাস

ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার সহযোগী ঢাবি শিক্ষকদের বিচার দাবি

Icon

ঢাবি প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৫, ১৫:৫৬

ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার সহযোগী ঢাবি শিক্ষকদের বিচার দাবি

ছবি : বাংলাদেশের খবর

স্বৈরাচার শেখ হা‌সিনা ও তার সহ‌যোগী ঢাকা বিশ্ব‌বিদ্যালয়ের (ঢা‌বি) শিক্ষক‌দের বিচার দা‌বি ক‌রে‌ছে জাতীয়তাবাদী  ঢাকা বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের (ঢা‌বি) শিক্ষক‌দের সংগঠন সাদা দল। 

রোববার (১৩ জুলাই) বেলা সা‌ড়ে ১১টায় বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের অপরা‌জেয় বাংলার পাদ‌দে‌শে জুলাই অভ্যুত্থানে মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশদাতা ফ‌্যা‌সিস্ট শেখ হাসিনা এবং গণভবনে গিয়ে স্বৈরাচারের মদদদাতা শিক্ষকদের বিচারের দাবিতে আ‌য়ো‌জিত এক মানববন্ধনে তারা এ দা‌বি জানান। 

এসময় তারা গণহত‌্যায় মদদদানক‌ারী এবং দুর্নী‌তির দা‌য়ে অ‌ভিযুক্ত ইমে‌রিটাস অধ‌্যাপক‌দের দ্রুত অপসারণ ও ফ্যাসিস্টদের চিরতরে দমন কর‌তে দেশের স্বার্থে সকল‌কে একতাবদ্ধ থাকার আহ্বান জান‌ান। 

মানবন্ধ‌নে ঢা‌বি সাদা দ‌লের আহ্বায়ক অধ‌্যাপক ড. মো‌র্শেদ হাসান খান ব‌লেন, আমাদের আজকের প্রোগ্রামের দুটি অ্যাজেন্ডা, খুনি হাসিনার যে রেকর্ড ফাঁস হয়েছে তার বিচার দাবি এবং তার সঙ্গে যারা উৎসাহ প্রদান করেছে; বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক তৎকালীন সরকারকে ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়েছিল যে আপনারা গুলি চালান। এখন সেই আওয়ামীপন্থী শিক্ষকেরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিপক্ষে বিবৃতি দিয়েছে। এখন আমার প্রশ্ন হলো, যেইদিন আমাদের সন্তানদের উপর গায়ে হাত তোলা, অত্যাচার করা এবং হত্যা হুকুম করা হয়েছিল, সেইদিন আপনাদের বিবেক কই ছিল? সেইদিন তো আপনারা বিবৃতি দেননি! আমি পরিষ্কারভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব শিক্ষকদের বিচার দাবি করছি। এখানে কোন লুকোচুরি নেই, তারা সেই সময়ে গণভবনে গিয়েছে এবং ভিডিও ফুটেজ ও ইলেকট্রনিক্স প্রিন্ট মিডিয়াতে তার প্রমাণ রয়েছে। সেই সকলের উপর ভিত্তিতে সরকার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানাবো এদের বিচার করার জন্য। আজকে আমাদের একটা মূল অ্যাজেন্ডা খুনি হাসিনার বিচার এবং তার সহযোগী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিচার দাবি করছি। ফ্যাসিস্টরা দেশের বাহিরে থেকে ষড়যন্ত্র করে চলছে, আমরা যেন ফ্যাসিস্টদের চিরতরে দমন করতে পারি, সেজন্য সবাই দেশের স্বার্থে এক ও একতাবদ্ধ থাকব।

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান ব‌লেন, আপনারা দেখেছেন কীভাবে জুলাইয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিল খুনি শেখ হাসিনা। বিবিসি তাদের অত্যাধুনিক যন্ত্র দিয়ে নিশ্চিত করেছে—এটি ছিল খুনি হাসিনারই নির্দেশনামা। জাতিসংঘের তথ্য অনুসন্ধানকারী দল তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে খুনি হাসিনার নির্দেশে গণহত্যা চালানো হয়েছে। শেখ হাসিনা পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে বিভিন্ন অডিও-ভিডিও বার্তায় সাধারণ নেতাকর্মীদের উসকে দিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অভ্যুত্থানের পর তিনি তার নেতাকর্মীদের বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে পরিবারসহ পালিয়ে গেছেন। এই হলো ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার চরিত্র। তার দোসররা যেন দেশে অস্থিতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে জুলাই অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করতে না পারে, সে বিষয়ে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, এই অভ্যুত্থান চলাকালীন সময়ে নিজেদের বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচয় দেওয়া একদল শিক্ষক হাসিনাকে গণহত্যায় উদ্বুদ্ধ করেছে। ৩ আগস্ট গণভবনে গিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালানোর প্রতি সমর্থন নয়, বরং উৎসাহ দিয়েছে। আমরা সবাই জানি তারা কারা। অথচ এখনো পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।

ঢা‌বি সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আবুল কালাম সরকার বলেন, যত দ্রুত সময়ের মধ্যে শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত করা হবে, এটাই হবে এদেশে সবচেয়ে বড় সংস্কার। স্বল্প সময়ের মধ্যে শেখ হাসিনার বিচার সম্পন্ন করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদের আমিরে পরিণত করেছে যারা—বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার চিহ্নিত ফ্যাসিবাদের দোসর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নামের কলঙ্ক যারা শেখ হাসিনাকে উৎসাহ দিয়ে ফ্যাসিবাদের পথকে সহজ করে দিয়েছে, ছাত্র-জনতা ও সকল শ্রেণির পেশার মানুষের উপর জুলুম-অত্যাচার করার ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে যারা পথ দেখিয়েছে-তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে।

ঢা‌বি সাদা দ‌লের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. আল-আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন রক্তাক্ত হয় তখন আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা এগিয়ে আসেনি। আমরা যখন প্রতিবাদের দাঁড়িয়ে ছিলাম আমাদের ছবি তুলে নেওয়া হয়েছে, বিভিন্ন এজেন্সি থেকে কল করা হয়েছিল।  আন্দোলন দমনে তারা মাকসুদ কামালের বাসাকে অস্থায়ী কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতো। একদিনে ফ্যাসিস্ট জন্ম নেয়নি, অন্যান্য শ্রেণির পাশাপাশি শিক্ষকদের ভূমিকা ছিল। ৩ আগস্ট বুদ্ধিজীবীরা নির্বিচারে গুলি চালানোর বুদ্ধি দিয়ে আসে। এই তথ্য গণমাধ্যমেও এসেছে। সুস্পষ্ট তথ্য প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও এতো গড়িমসি কেন? 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমা‌দের ৩টি তালিকা আমাদের হাতে আছে। একটি তালিকায় ৭৮জন শিক্ষককে শিক্ষার্থীরা বয়কট করেছে। ৭১ জন শিক্ষকের বিবৃতিতে যারা আছেন বেশিরভাগ বয়কটকৃত। সাধারণ শিক্ষকের নামে নতুন প্ল্যাটফর্ম আনতে চায় যার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদকে সার্ভ করতে চায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহ্বান তাদেরকে কঠোর হাতে দমন করুন। যাদের রক্তের অবদানে আমরা আজকের অবস্থানে এসেছি তাদের স্পিরিটকে ধারণ করতে হবে।

মানববন্ধনে আরও উপ‌স্থিত ছি‌লেন-ঢা‌বি আইবিএ’র অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন, মা‌র্কেটিং বিভাগের সা‌বেক চেয়ারম‌্যান অধ‌্যাপক ড. এ‌বিএম শহীদুল ইসলাম, চারুকলা অনুষ‌দের ডিন অধ‌্যাপক ড. শেখ আজহারুল ইসলাম, জীব বিজ্ঞান অনুষ‌দের ডিন অধ‌্যাপক ড. এনামূল হক, চারুকলা সাদা দলের আহ্বায়ক শিল্পী ইসরাফিল রতন, ঢাকা বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ, শিক্ষা ও গ‌বেষণা ইন‌স্টি‌টিউ‌টের অধ‌্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, অধ‌্যাপক ড. নুরল আ‌মিন, পি জে হার্টস ইন্টারন‌্যাশনাল হ‌লের প্রাধ‌্যক্ষ অধ‌্যাপক এম এ কাওসার, অধ‌্যাপক শ‌ফিউল্লাহ, অধ‌্যাপক ড. আসাদ চৌধুরী, হা‌ফিজ উ‌দ্দিন ভুইয়া, অধ‌্যাপক আব্দুস সালাম, অধ‌্যাপক শাহ শা‌মিম, অধ‌্যাপক আ‌নোয়ারুল ইসলামসহ শতা‌ধিক শিক্ষক।

  • এমএমআই/এমআই

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর