জবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা : সমঝোতার চেষ্টা ছাত্রদলের

জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ২১:৩৩
-6875235cbe295.jpg)
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দুই শিক্ষক ও তিন শিক্ষার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো ক্যাম্পাস। ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা দ্রুত বিচার ও শাস্তির দাবিতে তিন দফা আল্টিমেটাম দিয়েছেন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সমঝোতার চেষ্টায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সোমবার (১৪ জুলাই) দিনভর বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগে দফায় দফায় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। একদিকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ দাবি করে প্রতিবাদে সরব, অন্যদিকে ছাত্রদলের নেতারা হামলার শিকার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালান।
জানা গেছে, সকাল থেকেই ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন। তারা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান এবং হামলার শিকার শিক্ষক ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড. কে এ এম রিফাত হোসেন ও সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলামের সঙ্গে আলোচনা করেন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও তারা আলোচনায় বসেন।
তবে শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, প্রশাসনের আশ্বাসে আস্থা রাখতে পারছেন না। হামলার শিকার ছাত্র ফেরদৌস হাসান বলেন, “শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমাদের পাশে আছেন। তারা আজ সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের তালিকা প্রকাশের কথা বলেছেন। কিন্তু তদন্ত কমিটির সদস্যরা তাদের মতের সঙ্গে একমত না হওয়ায় পরিস্থিতি অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে।”
গতকাল রবিবার উপাচার্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ ও সংবাদ সম্মেলন করে তিন দফা দাবি উত্থাপন করেন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে :
১. হামলাকারীদের সুনির্দিষ্ট তালিকা প্রকাশ ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ।
২. জড়িতদের বহিষ্কার ও অছাত্রদের ক্যাম্পাসে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা।
৩. ভবিষ্যতে সহিংসতা প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন এবং রাজনৈতিক অপপ্রচারে প্রশাসনিক ব্যবস্থা।
তবে আল্টিমেটাম শেষ হলেও আজ সোমবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ না আসায় ক্ষোভে ফুঁসছেন শিক্ষার্থীরা।
বিভাগীয় সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত থাকবে। তবে অন্যান্য বিভাগের মিড ও সেমিস্টার পরীক্ষা চললেও ক্লাস গ্রহণ করা হবে না।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রতি বিভাগের শিক্ষকদের সমর্থন রয়েছে বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শিক্ষক ও প্রশাসনের উদ্যোগে চলমান বৈঠকগুলো ফলপ্রসূ না হলে মঙ্গলবার থেকে জবি ক্যাম্পাসে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেএন/এমএইচএস